সেনা ব্যরাকে হাসির খোরাক মেলেনি ছুটিও, সাইকো প্যথোলজিক্যাল ডিসঅর্ডারই কি পার্কস্ট্রিট গুলি কাণ্ডের কারণ?

দীর্ঘদিন ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন অভিযুক্ত জওয়ান। সম্প্রতি তাঁর বাবা মারা যায় এবং সেই থেকেই মানসিক সমস্যার সূচনা হয় বলে জানাচ্ছেন সহকর্মীরা। কিছুদিন আগে জরুরি ভিত্তিতে ছুটির জন্য আবেদন জানান তিনি। কিন্তু এই পরিস্থিতি মঞ্জুর হয়নি। এর থেকেই কি একটি আক্রোশ তৈরি হয়? 

Ishanee Dhar | Published : Aug 6, 2022 5:25 PM IST

মুখে যুদ্ধজয়ের হাসি, নেই কোনও আতঙ্ক বা অনুশোচনাও। নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে হাসতে হাসতেই পুলিশের হাতে ধরা দিলেন পার্কস্ট্রিট গুলিকাণ্ডে অভিযুক্ত জওয়ান অক্ষয়  কুমার বিশ্বাস। টানা দেড় ঘন্টা রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ের পর অবশেষে আত্মসমর্পণ করেন অভিযুক্ত CISF জওয়ান। ফায়ারিং-এর ঘটনার ১০ মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। কালবিলম্ব না করে জাদুঘরের সামনে পৌঁছন কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। বুলেট প্রুফ জ্যাকেট পরে টর্চ নিয়ে জাদুঘরের ভেতরে ঢোকে পুলিশ বাহিনী। অভিযুক্ত বন্দুকবাজের সঙ্গে কথা বলে তাঁরা এবং তাঁকে আত্মসমর্পণ করতেও বলা হয়। অবশেষে নিরস্ত্র অবস্থায় পুলিশকে কথা বলার শর্ত দেন তিনি। হামলাকারীর শর্তে রাজী হয়ে সম্পূর্ণ নিরস্ত্র অবস্থায় বুলেট প্রুফ জ্যাকেট পরে জাদুঘরের মধ্যে প্রবেশ করে পুলিশ। পুলিশের হাতে ধরা পরেও একেবারে নির্লিপ্ত অবস্থায় দেখা যায় CISF হেড কনস্টেবল। কিন্তু কেন এই আচরণ? কেনই বা সহকর্মীকে লক্ষ্য করে গুলি চালালেন তিনি? শুধুই কি ব্যক্তিগত আক্রোশ? নাকি নেপথ্যে রয়েছে অন্য কোনও কারণ?  

সূত্র মারফত খবর দীর্ঘদিন ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন অভিযুক্ত জওয়ান। সম্প্রতি তাঁর বাবা মারা যায় এবং সেই থেকেই মানসিক সমস্যার সূচনা হয় বলে জানাচ্ছেন সহকর্মীরা। কিছুদিন আগে জরুরি ভিত্তিতে ছুটির জন্য আবেদন জানান তিনি। কিন্তু এই পরিস্থিতি মঞ্জুর হয়নি। এর থেকেই কি একটি আক্রোশ তৈরি হয়? শুধু তাই নয় সেনা ব্যরাকেও তিনি দীর্ঘদিন ধরে উপহাসের পাত্র হতেন বলে সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে। এই সমস্ত ঘটনা মিলিয়েই কি মানসিকভাবে অসুস্থ হয় পড়েন অক্ষয়? এই মানসিক অবসাদের কারণ কি শুধুই বাবার মৃত্যু? ঘটনার পর থেকেই দানা বাঁধছে এমনই নানা প্রশ্ন।  

মোনবিদদের মতে এই মানসিক অবস্থাকে সাইকো প্যথোলজিক্যাল ডিসঅর্ডার বলা হয়। কী এই সাইকো প্যাথোলজিক্যাল ডিসঅর্ডার? মোনোবিদ পায়েল ঘোষের সঙ্গে এই প্রসঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,”এটি একটি সাইকোটিক ফেস, এই অবস্থায় মানুষের বাস্তবতা অনেক সময় বদলে যায়, নিজের চিন্তাভাবনার সমস্যা হতে থাকে। দীর্ঘদিন ধরে অনিয়মিত জীবনযাপন, বা অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণে বা নিজের অনুভূতি দীর্ঘদিন চেপে রাখার ফলে অনেকসময় একটা সাইকোটিক অ্যাটাক হয়ে যায়। এই অবস্থায় ব্যাক্তি এমন কিছু কাজ করে ফেলে যা আগে থেকে পরিকল্পিত বা খুব ভেবে চিন্তে করা কাজ নয়।” তিনি আরও বলেন, “আত্মসমর্পণ করার সময় অভিযুক্তর নির্লিপ্ততাও এই ক্ষেত্রে সাইকোটিক ফেজের কারণেই। কোনও সাধারণ মানুষ সুস্থ অবস্থায় এই কাজ করলে তখনই সেখান থেকে পালিয়ে যেতে চাইত, কিন্তু এই সাইকোটিক ফেজে থাকার কারণেই তিনি পালাননি বা নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেননি।” 

নিরাপত্তার দায়িত্ব যাদের হাতে নিরাপদ নয় তারাই। ঘটনায় শহরের নিরাপত্তা নিয়ে উঠছে একাধিক প্রশ্ন।  

Share this article
click me!