
ফল বা শুকনো প্যাকেটজাত খাবার ছাড়া অধিকাংশ খাবারই আমরা রান্না করে খাই। তবে রান্না করা খাবারের পুষ্টিগুণ নিয়ে কৌতূহলের কম নয়, কীভাবে খেলে, কতটা খেলে বা কীসের সাথে কী খেলে পুষ্টিগুণ সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়, তা নিয়ে মাথাব্যথা সকলেরই। কেউ ভাবেন কাঁচা খেলেই বেশি গুণ পাবে, কেউ আবার রান্না করেই নিশ্চিন্ত, আবার আজ সেদ্ধ খাবারেরও চল আছে। তবে কিছু কিছু খাবার আছে যেগুলি সেদ্ধ না করে খেলে শরীরে বিষক্রিয়া হতে পারে। এমন পাঁচটি খাবারের কথা আজকে উল্লেখ করব, যেগুলো সেদ্ধ না করে খেলে শরীরের ক্ষতি হতে পারে নানা ভাবে। পুষ্টিবিদদের পরামর্শ অনুযায়ী, এগুলো খাওয়ার আগে সঠিকভাবে সেদ্ধ করাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
১। ডিম
যাঁরা শরীরচর্চা করেন, তাঁদের মধ্যে অনেকেই কাঁচা ডিম খাওয়ার অভ্যাস রাখেন, প্রোটিনের পরিমাণ বাড়ানোর জন্য। যদিও কাঁচা ডিমে কিছুটা পুষ্টিগুণ পাওয়া যাবে ঠিকই, তবে তাতে সালমোনেলা নামক ব্যাকটেরিয়া থেকে ফুড পয়জনিংয়ের ঝুঁকি ওই পুষ্টিগুণের প্রাপ্তির থেকে অনেকটাই বেশি। এর ফলে জ্বর, বমি, পেটের অসুখ হতে পারে। ডিম সেদ্ধ করলে এই ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হয় এবং হজমেও সহজ হয়।
২। আলু
অনেকে কাঁচা আলুর রস বা টুকরো খাওয়ার পরামর্শ দেন, পেট পরিষ্কার রাখতে বা অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধির জন্য। আবার কাঁচা আলুতে রেজিস্ট্যান্ট স্টার্চ বেশি থাকায় তা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। কিন্তু কাঁচা আলুতে সোলানিন ও লেকটিন নামের বিষাক্ত উপাদান থাকে, যা খেলে হতে পারে বমি, ডায়রিয়া, এমনকি স্নায়বিক সমস্যা। তাই আলু সবসময় সেদ্ধ বা রান্না করে খাওয়াই স্বাস্থ্যসম্মত।
৩। মাছ ও সামুদ্রিক খাবার
সুশি বা সাশিমির মতো কাঁচা মাছের পদ জাপানি রেস্টুরেন্টে খেতে মজাই লাগে। কিন্তু মনে রাখা দরকার, কাঁচা মাছ বা অন্যান্য সামুদ্রিক খাবারে পরজীবী, ব্যাকটেরিয়া থাকে, বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছে পারদ থাকার সম্ভাবনা বেশি। এই দূষিত উপাদানগুলি শরীরে বিষক্রিয়া ঘটিয়ে লিভার, কিডনি এমনকি স্নায়ুতন্ত্রেরও ক্ষতি করতে পারে। তাই মাছ ও সি ফুড ভাল করে সেদ্ধ করে খাওয়াই উচিত।
৪। ন্যুডলস ও পাস্তা
অধিকাংশ ন্যুডলস বা পাস্তা তৈরির আগে অনেকেই কাঁচা কিছুটা মুখে দিয়েই চেখে দেখেন। কিন্তু কাঁচা অবস্থায় এতে থাকা স্টার্চ, লেকটিন ও ফাইটেটস হজমে সমস্যা করে এবং শরীরের পুষ্টি শোষণের ক্ষমতা কমায়। কাঁচা ন্যুডলস বা পাস্তা খেলে পেটে গ্যাস, অম্বল বা বদহজম হতে পারে।
৫। চাল
কাঁচা চাল অনেকেই চিবিয়ে খেয়ে থাকেন, বিশেষত ত্বকের রূপচর্চার কারণে। কিন্তু এতে ব্যাসিলাস সেরিয়াস নামক ব্যাকটেরিয়া থাকার সম্ভাবনা থাকে, যা শরীরে প্রবেশ করে ডায়রিয়া বা বমির মতো লক্ষণ সৃষ্টি করতে পারে। চাল সেদ্ধ করলে এই ব্যাকটেরিয়া নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়।