
টাইপ ২ ডায়াবেটিস বিশ্বব্যাপী অন্যতম ভয়ংকর রোগগুলির মধ্যে একটি। প্রায় ৬০০ মিলিয়ন মানুষ এই রোগে আক্রান্ত। এটি একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ, যেখানে শরীর পর্যাপ্ত ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না বা ইনসুলিনকে কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারে না। ইনসুলিন হলো একটি হরমোন যা গ্লুকোজকে কোষে প্রবেশ করতে সাহায্য করে। এর ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়। তবে, খাদ্য, জীবনযাত্রা এবং স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখার মাধ্যমে ইনসুলিন উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব। এর ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। এই প্রতিবেদনে আমরা ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়াতে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে কোন কোন খাবার খাওয়া উচিত, তা নিয়ে আলোচনা করব।
১. সবুজ শাক-সবজি:
পালং শাক, বাঁধাকপি, ব্রকলি, কেল, ফুলকপি, শসার মতো সবজিতে ফাইবার বেশি এবং কার্বোহাইড্রেট কম থাকে। এগুলিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যও রয়েছে, যা ইনসুলিনের কার্যকারিতা ঠিক রাখতে সাহায্য করে। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখে এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিস প্রতিরোধেও সাহায্য করে।
২. গাজর এবং অ্যাভোকাডো:
অ্যাভোকাডোতে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট এবং ফাইবার ভরপুর থাকে, যা ইনসুলিনের ঘাটতি মেটাতে সাহায্য করে। গাজরের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম হওয়ায় অ্যাভোকাডোর সঙ্গে স্যালাড হিসেবে খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে।
৩. বিনস, কলাই এবং ডাল:
ছোলা, মটরশুঁটি, বিনস এবং বিভিন্ন ডালে দ্রবণীয় ফাইবার, প্রোটিন এবং প্রতিরোধী স্টার্চ বেশি থাকে। এগুলি গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কমাতে, হজম প্রক্রিয়া ধীর করতে এবং খাওয়ার পরে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, এগুলি ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স বা টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুব উপকারী।
৪. বেরি এবং কম মিষ্টি ফল:
বেশি ফাইবার এবং কম চিনিযুক্ত ফল শরীরে শর্করার শোষণকে ধীর করে দেয়। বেরিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রদাহ কমায়, যা ইনসুলিন নিয়ন্ত্রণ উন্নত করতে সাহায্য করে।
৫. প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার:
অন্ত্রের স্বাস্থ্য ইনসুলিনের কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করে। দইয়ের মতো প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবারে উপকারী জীবাণু থাকে, যা প্রদাহ কমাতে এবং মেটাবলিজম উন্নত করতে সাহায্য করে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, এই খাবারগুলি রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণে উন্নতি ঘটায়।
৬. প্রোটিন:
মাছ, ডিম, মুরগির মাংস, বিনস বা টফুর মতো খাবার রক্তে শর্করার মাত্রা খুব বেশি বাড়ায় না। এগুলিতে থাকা প্রোটিন পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে, ফলে কার্বোহাইড্রেট খাওয়ার প্রবণতা কমে। এটি ইনসুলিনের ঘাটতি কমাতেও সাহায্য করে।