
মাথাব্যথার একটি প্রধান কারণ হলো জলশূন্যতা। গবেষণায় দেখা গেছে, শরীরে পর্যাপ্ত জল না থাকলে মস্তিষ্ক সাময়িকভাবে সংকুচিত হয় এবং মাথার খুলিতে আঘাত করে ব্যথা সৃষ্টি করে। তাই মাথাব্যথা হলে, তাৎক্ষণিকভাবে প্রচুর জল পান করা ভালো। সারাদিন পর্যাপ্ত জল পান করলে মাথাব্যথা প্রতিরোধেও সাহায্য করে। শুধু জলই নয়, ডাবের জল, ভেষজ চা এবং ফলের রসের মতো জল সমৃদ্ধ পানীয়ও পান করতে পারেন।
ঠান্ডা সেঁক: টেনশন মাথাব্যথা বা মাইগ্রেনের জন্য কপাল, চোখ বা ঘাড়ের পিছনে ঠান্ডা সেঁক বা আইস প্যাক ব্যবহার করলে ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। ঠান্ডা তাপ রক্তনালী সংকুচিত করে, ফোলাভাব কমায় এবং ব্যথা অনুভূতিকে প্রশমিত করে।
গরম সেঁক: সাইনাসের মাথাব্যথা বা পেশীর টানের কারণে মাথাব্যথার জন্য গরম সেঁক বা গরম পানির বোতল ব্যবহার করলে পেশী শিথিল হয় এবং রক্ত সঞ্চালন উন্নত হওয়ার মাধ্যমে আরাম পাওয়া যায়।
ঘুমের অভাব বা ঘুমের মান খারাপ হওয়া মাথাব্যথার একটি প্রধান কারণ। প্রতিদিন ৭-৮ ঘন্টা ঘুম মাথাব্যথা প্রতিরোধে সাহায্য করে। ঘুমানোর আগে আরামদায়ক অভ্যাস অনুসরণ করা, অন্ধকার এবং শান্ত ঘুমানোর পরিবেশ তৈরি করা, ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার না করা ভালো ঘুমের জন্য সহায়ক।
মানসিক চাপ মাথাব্যথার একটি বড় কারণ। গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের অনুশীলন, ধ্যান, যোগব্যায়াম বা মানসিক প্রশান্তি বৃদ্ধিকারী অন্যান্য শিথিলকরণ কৌশল চর্চা করলে মানসিক চাপ কমাতে এবং মাথাব্যথা প্রতিরোধে সাহায্য করে। প্রতিদিন কয়েক মিনিট গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া বা নির্দেশিত ধ্যান অনুশীলন উল্লেখযোগ্য পার্থক্য আনতে পারে।
আদার প্রাকৃতিক প্রদাহরোধী গুণ রয়েছে। এটি বমি বমি ভাব এবং মাথাব্যথা কমাতে খুবই কার্যকর। মাথা ব্যথা হলে, আদা চা পান করা বা কাঁচা আদা চিবিয়ে খেলে আরাম পাওয়া যায়।
পুদিনার তেল ঠান্ডা অনুভূতি প্রদান করে এবং টেনশন মাথাব্যথা উপশমে সাহায্য করে। পুদিনা তেলে থাকা মেন্থল রক্তনালী শিথিল করে এবং ব্যথা কমায়। তেল ব্যবহার করার আগে, সবসময় ক্যারিয়ার তেল (নারকেল তেল বা জলপাই তেল) এর সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করুন।
মাঝারি পরিমাণে ক্যাফেইন কিছু মাথাব্যথার জন্য আরামদায়ক হতে পারে, কারণ এটি রক্তনালী সংকুচিত করতে সাহায্য করে। এক কাপ কফি, চা বা সোডা পান করলে মাথাব্যথার তীব্রতা কমতে পারে। তবে, অতিরিক্ত ক্যাফেইন মাথাব্যথা বাড়িয়ে তুলতে পারে। তাই, ক্যাফেইন মাঝারি পরিমাণে গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ।
ম্যাগনেসিয়ামের অভাব মাইগ্রেনের একটি কারণ হতে পারে। ম্যাগনেসিয়াম রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণ এবং স্নায়ু কার্যকলাপ সহ শরীরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কার্যের জন্য প্রয়োজনীয় একটি খনিজ। পালং শাক, বাদাম, অ্যাভোকাডো, ডার্ক চকলেট, গোটা শস্য, কুমড়োর বীজ ইত্যাদি ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার আপনার খাদ্যতালিকায় যোগ করলে মাথাব্যথা প্রতিরোধে সাহায্য করবে।
এই প্রাকৃতিক প্রতিকারগুলি মাথাব্যথার তাত্ক্ষণিক উপশম দিতে এবং ঔষধ এড়াতে সাহায্য করবে। তবে, মাথাব্যথা টানা থাকলে বা গুরুতর লক্ষণ থাকলে, তাড়াতাড়ি ডাক্তারের কাছে যাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।