
আবহাওয়ার এ রদবদলে অনেকেই ভুগছেন সর্দি-কাশি, গলাব্যথা কিংবা জ্বরে। আর এসবের সহজ সমাধান হিসেবে ঘরে ঘরে সবাই হাত বাড়ান একটাই ওষুধের দিকে— প্যারাসিটামল। জ্বর, সর্দি, মাথাব্যথা, শরীর ব্যথা— সব ক্ষেত্রেই যেন এ ওষুধ এক পরিচিত নাম। এমনকি ডেঙ্গু জ্বরেও চিকিৎসকরা প্রায়ই প্যারাসিটামল প্রেসক্রাইব করেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই বহুল ব্যবহৃত ওষুধটি আসলে কতটা নিরাপদ? দিনে কতটা খাওয়া যেতে পারে? কিংবা অতিরিক্ত খেলেই বা শরীরে কী ঘটে?
এসব প্রশ্নের উত্তর জানিয়েছেন কলকাতার বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. আশিস মিত্র। তিনি বলেন, একজন সুস্থ-সবল ব্যক্তি দিনে ৬টি প্যারাসিটামল খেতে পারেন। এক্ষেত্রে ৪ ঘণ্টা অন্তর অন্তর এই ওষুধ খাওয়া যায়। তবে বেশিভাগ ক্ষেত্রেই ৬টি প্যারাসিটামল খাওয়ার দরকার পড়ে না। বরং দিনে ৪টি খেলেই জ্বর নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। তাই অহেতুক অত্যধিক সংখ্যায় প্যারাসিটামল খাবেন না। আর চেষ্টা করুন জ্বর এলেই প্যারাসিটামল খাওয়ার। জ্বর কমে গেলে বা জ্বর না এলে এই ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন নেই।
এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের করা এক গবেষণায় উঠে এসেছে, লিভারের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে প্যারাসিটামল। এমনকী এর বহুল ব্যবহারে লিভার ফেইলিওর পর্যন্ত হতে পারে। ২০০৬ সালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় ইউকে-তে লিভার ফেইলিওয়রের পিছনে প্যারাসিটামলের ওভারডোজকেই দায়ী করা হয়েছে। একই ঘটনা ঘটেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও। জ্বর সারাতে বা পেইন কিলার হিসেবে মাঝে মধ্যে প্যারাসিটামল খেলে ক্ষতি নেই।
এদিকে দীর্ঘদিন ধরে এই ওষুধ চললে লিভারের ক্ষতি হতে পারে। এদিকে বয়স ভেদে প্যারাসিটামলের ডোজও ভিন্ন ভিন্ন হয়। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কখনোই মুঠো মুঠো প্যারাসিটামল খাবেন না। প্রসঙ্গত, আপনার ওজন যদি ৬০ কেজি-এর কম হয়, তাহলে প্যারাসিটামল ৫০০ খেতে পারেন। আর ওজন ৬০-এর বেশি হলে প্যারাসিটামল ৬৫০ খাওয়া জরুরি।
১. প্রতিদিন অন্ততপক্ষে ৩ লিটার জল পান করুন
২. হালকা সহজপাচ্য খাবার খান
৩. প্রতিদিনের পাতে শাক, সবজি এবং ফল রাখুন
৪. মাছ, মাংস, ডিমও থাকুক ডায়েটে
৫. মদ্যপান থেকে দূরে থাকুন
৬. ধূমপান চলবে না
তবে এসব নিয়ম মেনে চলার পরও যদি ৩-৪ দিনের বেশি জ্বর থাকে, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।