
Health Tips: আমাদের বাঙালি পরিবারগুলোতে দুপুরে খাওয়ার পর খানিকটা ঘুম দেওয়া আগাগোড়াই ছিল। মা-ঠাকুরমারা ছোটদের খাওয়ার পর ঘুমোতে বলতেন। সেই বিশ্রামই শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে সহায়ক হতো। কিন্তু কর্মব্যস্ত জীবনে, বিশেষত স্কুলে বা অফিসের মতো জায়গায়, এমন বিশ্রামের সময় বা সুযোগ নেই বললেই চলে।
এই প্রসঙ্গেই উঠে এসেছে আধুনিক একটি উপায়—‘power nap’। এটা দীর্ঘ গভীর ঘুম নয়, বরং ১০ থেকে ২০ মিনিটের স্বল্প সময়ের ঘুম, যা মস্তিষ্ককে পুনরায় সক্রিয় করে তোলে। সাম্প্রতিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, এই ছোট্ট ঘুম আমাদের একাধিক উপকারে আসে—মনঃসংযোগ বৃদ্ধি করে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের দক্ষতা বাড়ায়, ভুলভ্রান্তি কমায় এবং কাজের প্রতি উৎসাহ বাড়ায়।
পাওয়ার ন্যাপ কেন নেবেন?
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্থের গবেষণা অনুসারে, স্বল্প সময়ের ঘুম মস্তিষ্কের হিপ্পোক্যাম্পাস অংশের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। এর ফলে স্মৃতিশক্তির উন্নতি ঘটে এবং একাগ্রতা বৃদ্ধি পায়। এটি শিক্ষার্থী, কর্পোরেট কর্মী এবং সৃজনশীল পেশাজীবীদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী।
১০ থেকে ৩০ মিনিট সময়কালের ন্যাপে মানসিক চাপ হ্রাস পায়, ফ্যাট মেটাবলিজম বাড়ে এবং মস্তিষ্ক অপ্রয়োজনীয় তথ্য মুছে ফেলে প্রয়োজনীয় তথ্য সংরক্ষণে সচেষ্ট হয়। গবেষকরা জানিয়েছেন, এই ধরনের ঘুম তথ্য মনে রাখা, মুখ ও নাম চিনে রাখা এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে। ৩০ মিনিট বা তার বেশি সময়ের ন্যাপ মস্তিষ্কের ‘মোটর স্কিল’ উন্নত করে, যা চলাফেরার সমন্বয় এবং কর্মক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক। এর পাশাপাশি, এটি শরীরের স্নায়ুর কার্যক্ষমতাও বাড়ায়।
এছাড়াও, যারা অনিদ্রা বা ঘুমজনিত সমস্যায় ভোগেন, তাঁদের জন্য পাওয়ার ন্যাপ বিশেষভাবে উপকারী। এটি রাতের ঘুমের ঘাটতি কিছুটা পূরণ করতে সাহায্য করে এবং স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ কমিয়ে মানসিক স্থিতি বজায় রাখতে সাহায্য করে। বর্তমান সময়ের কর্মব্যস্ত জীবনে মানসিক চাপ, ক্লান্তি এবং ঘুমের ঘাটতি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শরীর ও মনকে চাঙ্গা রাখতে স্বল্প সময়ের বিশ্রাম, অর্থাৎ ‘পাওয়ার ন্যাপ’, এক অত্যন্ত কার্যকর পদ্ধতি হিসেবে উঠে এসেছে।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।