
দাঁত থাকতেই দাঁতের মর্ম বোঝা দরকার। কারণ এটি নষ্ট হলে ফিরে পাওয়া যায় না। এমনকি ক্যাপ পরাতেও আসল দাঁতের গোড়াটুকু চাই।
অনেকেরই ধারণা দাঁতের সবচেয়ে বড় শত্রু হল চিনি। সবাই মনে করেন মিষ্টি খাবার খেলে দাঁতে গর্ত হয়, ক্ষয় হয়।
এ কথা ছোটবেলা থেকেই আমরা শুনে আসছি। তবে দাঁতের যত্ন নিয়ে কাজ করা বিশেষজ্ঞরা বলছেন- শুধু চিনি নয়, আরও বেশ কিছু দৈনন্দিন খাবার দাঁতের ক্ষতির জন্য সমানভাবে দায়ী।
শুকনো আম, খেজুর, কিশমিশ এসব খাবারকে স্বাস্থ্যকর মনে করে খাওয়া হয়। তবে এগুলো দাঁতের জন্য বেশ ক্ষতিকর হতে পারে।
শুকনো ফলে প্রাকৃতিক চিনি অনেক বেশি ঘন আকারে থাকে। এগুলো আবার আঠালো প্রকৃতির হওয়ায় দাঁতে দীর্ঘ সময় আটকে থাকে। ফলে দাঁতে ক্ষতিকর ব্যাক্টেরিয়া খাবারের টুকরা থেকে অ্যাসিড তৈরি করে, যা এনামেল ক্ষয়ের প্রধান কারণ।
এছাড়া আমরা কমবেশি সবাই বিস্কুট ও চিপস খেতে পছন্দ করি এবং বাচ্চাদের তো প্রচন্ড পছন্দের জিনিস এই বিস্কিট ও চিপস। চলতি পথে হালকা খিদে লাগলে বা মুখরচক হিসাবে বিস্কুট, ক্র্যাকার বা চিপস প্রায়শই খাওয়া হয় আমাদের। তবে এগুলো দাঁতের জন্য নিরাপদ নয়।
এসব খাবারের মধ্যে থাকা স্টার্চ দাঁতে গিয়ে সহজে ভেঙে সাধারণ চিনিতে পরিণত হয়। চিবানোর সময় এগুলো আঠার মতো পেস্ট হয়ে দাঁতের ফাঁকে আটকে যায়। ফলে ঠিক একইভাবে দাঁতে গর্ত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়।
অন্যদিকে আবার বেশি টক ফল খাওয়া দাঁতের পক্ষে ক্ষতিকারক বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। অর্থাৎ সিট্রাস বা টক ফল বেশি খেলেও দাঁতের ক্ষতি হতে পারে।
লেবু, কমলা লেবু জাতীয় ফল ভিটামিন সি-তে ভরপুর এবং স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। তবে অতিরিক্ত খেলে দাঁতের ক্ষতি হতে পারে।
এসব ফলে প্রচুর প্রাকৃতিক অ্যাসিড থাকে। নিয়মিত বেশি খেলে সেই অ্যাসিড দাঁতের এনামেল ক্ষয় করে দেয়। বিশেষ করে যদি লেবু বা কমলা মুখে রেখে খাওয়া হয় বা বারবার খাওয়া হয়, তাহলে ক্ষয়ের মাত্রা বেড়ে যায়।
বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন- সিট্রাস বা টক ফল খাওয়ার অন্তত আধা ঘণ্টা পরে দাঁত ব্রাশ করতে। এতে এনামেল নরম হওয়ার সময়টায় ঘষাঘষি থেকে দাঁত রক্ষা পায়।
এছাড়া স্বাদযুক্ত দই ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস এবং দাঁতের জন্য উপকারী। তবে বাজারে পাওয়া নানান স্বাদের দই দাঁতের ক্ষতির কারণ হতে পারে। এসব দইয়ে অতিরিক্ত চিনি মেশানো থাকে, যা দাঁতের ক্ষতির ঝুঁকি বাড়ায়। যদিও দই দাঁতের জন্য ভালো, তবে যদি তাতে প্রচুর চিনি মেশানো হয়, তাহলে সেই উপকার ম্লান হয়ে যায়।
তাই কেনার আগে প্যাকেটের লেবেল দেখে নিতে পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। সম্ভব হলে সাধারণ দই খাওয়াই ভালো।
গ্রানোলা এবং এনার্জি বারও অনেকে স্বাস্থ্যকর খাবার ভেবে খান। তবে এগুলোও দাঁতের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।এসব দইয়ে অতিরিক্ত চিনি মেশানো থাকে, যা দাঁতের ক্ষতির ঝুঁকি বাড়ায়। যদিও দই দাঁতের জন্য ভালো, তবে যদি তাতে প্রচুর চিনি মেশানো হয়, তাহলে সেই উপকার ম্লান হয়ে যায়।
তাই কেনার আগে প্যাকেটের লেবেল দেখে নিতে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। সম্ভব হলে সাধারণ দই খাওয়াই ভালো।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন,এসব খাবার একেবারে বাদ দেওয়ার দরকার নেই। তবে কীভাবে এবং কখন খাচ্ছেন, সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। খাবারের সঙ্গে খেলে লালা উৎপাদন বেড়ে দাঁত সহজে পরিষ্কার হয়। তবে আলাদা করে নিয়মিত খেলে ক্ষতির ঝুঁকি বাড়ে।
সময়মতো দাঁত ব্রাশ করা, দাঁতের ফাঁক পরিষ্কার করা এবং খাবারের পর মুখ ধুয়ে ফেলার অভ্যাস দাঁতের জন্য সবচেয়ে কার্যকর প্রতিরক্ষা।