১৯৭৫ সালের পর থেকে সারা পৃথিবীতে কমপক্ষে ৩ গুন বেড়ে গেছে মোটা হওয়ার হার। এই ভয়াবহ তথ্য প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা WHO। পৃথিবীতে মোটা হওয়ার রোগ ধীরে ধীরে এগোচ্ছে প্রায় মহামারীর দিকে।
সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড ওবেসিটি ফেডারেশনের এটলাস ভবিষ্যদ্বাণী করেছে যে বিশ্বের ৫১ শতাংশ মানুষ, বা ৪ বিলিয়নেরও বেশি মানুষ আগামী ১২ বছরের মধ্যে স্থূল বা অতিরিক্ত ওজনের শিকার হবেন।
২০৩৫ সালের মধ্যে পৃথিবীর চেহারাটা হতে চলেছে মারাত্মক। প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে যে, মোটা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা শিশুদের মধ্যে ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, এই রোগে প্রতি বছর পৃথিবীতে অন্তত ত্রিশ লাখ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে।
স্থূলতা মহামারিতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত দেশের অন্যতম হলো আমেরিকা । আমেরিকান স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা ধারণা করছেন যে, দেশটির ৩৬ শতাংশের বেশি জনগোষ্ঠী এখন স্থূলতায় ভুগছে।
কিন্তু, ওয়ার্ল্ড ওবেসিটি ফেডারেশনের ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী, ধীরে ধীরে এই মহামারী আফ্রিকা এবং এশিয়ার নিম্ন আয়ের দেশগুলিতে মারাত্মক আকার ধারণ করবে। দেশজোড়া মানুষ অতিরিক্ত ওজনের সমস্যায় ভুগবেন।
ওয়ার্ল্ড ওবেসিটি ফেডারেশনের সভাপতি লুইস বাউর বলেছেন যে, শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে স্থূলতার হার সবচেয়ে দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে, যেটা আরও বেশি ভয়াবহ।
প্রতিবেদনে দেখা গেছে যে শৈশব স্থূলতা ২০২০-র পর থেকে দ্বিগুণেরও বেশি হয়ে যেতে পারে, ২০৩৫ সালের মধ্যে যাঁরা অতিরিক্ত মোটা হয়ে যাবেন, তাঁদের সংখ্যাটা বিপজ্জনক। ২০৮ মিলিয়ন পুরুষ এবং ১৭৫ মিলিয়ন মহিলা।
অতিরিক্ত ওজনের সাথে যুক্ত স্বাস্থ্যের অবস্থার ফলে গোটা পৃথিবীতে আর্থিক ব্যয় বেড়ে যাবে বহুল পরিমাণে। বছরে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা খরচ করে মানুষ মোটা হওয়ার রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার চেষ্টা করবেন।
২০২০ সালে পৃথিবীর প্রায় ২.৬ বিলিয়ন মানুষ (২৬০ কোটি) ব্যাপকভাবে মোটা হওয়ার শিকার হয়েছেন। যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৩৮ শতাংশ। তাই, ২০৩৫ সালের মধ্যে সেই ছবিটা যে ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।