
পুজো আসলো বলে, আটঘাঁট বেঁধে অনেকেই নেমেছেন ওজন নিয়ন্ত্রণে। কোমরের মাপ নিয়েই ডায়েট শুরু। তবে ডায়েটে আগে বাদ পাড়েছে ভাত এবং রুটি, অর্থাৎ কার্বোহাইড্রেট। এতে কি একটুও ওজন কমছে বলে মনে হচ্ছে? ক্লান্ত, খিটখিটে মেজাজের হয়ে পড়ছেন না তো?
বাঙালি হয়ে খাদ্যতালিকায় ভাত রুটির জায়গা নেই, ভাবাও দুষ্কর। তাই একেবারে বাদ না দিয়ে কীভাবে খেলে ওজন কমানো সম্ভব হবে, সেদিকে নজর দেওয়া উচিত বেশি। শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট ও কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করা দরকার। কার্বোহাইড্রেট না পেলে সারাদিনের কাজ করার শক্তি পাবে না আপনার শরীর। তাই সবই খেতে হবে তবে নিয়ম মেনে, পরিমিতভাবে।
তবে কীভাবে ভাত খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে?
অতিরিক্ত পরিমাণে ভাত খেলে শুধু ওজনই বাড়বে না, সাথে রক্তে শর্করার পরিমাণও বৃদ্ধি পাবে। তবে একেবারে খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দেওয়া যাবে না ভাতকে। বরং সারাদিনে কতটা ভাত খাচ্ছেন তার পরিমাণের ওপর নজর রাখুন। চাল মেপে রান্না করুন। এতে ভাত বেশি হয়ে অতিরিক্ত খেয়ে ফেলার প্রবণতাও কমবে।
শুধু ভাত নয়, ভাতের সাথে রাখতে হবে সব্জির তরকারি, ডাল, মাছ-মাংস-ডিম সবই। অর্থাৎ শরীরের জন্য রোজকার প্রয়োজনীয় প্রোটিন, ফাইবার, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট ও কার্বোহাইড্রেট সহ সুষম ডায়েট তৈরি করতে হবে। চেষ্টা করুন খাওয়ার সময় ভাতের পরিমাণ কমিয়ে সবজির পরিমাণ বাড়াতে।
কখন খাবেন ভাত?
রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে এক থালা ভাত খেয়ে তৃপ্তি করে ঘুমোতে যাওয়া, এটি একেবারে উচিত নয়। রাতে ভাত খাওয়া বাদ দিন। দুপুরে ভাত খান। এতে সারাদিনের কাজের জন্য শক্রিয় পাবেন, ও ক্যালোরি খরচ করার সময়ও।
কীভাবে রান্না করে খাবেন ভাত?
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভাত কীভাবে রান্না করে খাচ্ছেন, খেয়াল রাখতে হবে সেদিকেও। প্রেসার কুকারে তৈরি ফ্যান ভাত একেবারে বাদ দিন। বরং ভাতের ফ্যান বা মাড় ঝরিয়ে খান, স্টার্চ ভাতের মাড়ের সাথে বেরিয়ে যাবে অনেকটা। ভাত রান্না করার আগে, চাল অন্তত ৩০ মিনিট জলে ভিজিয়ে রাখুন। এতেও কিছুটা স্টার্চ বেরিয়ে যাবে চাল থেকে।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে রুটি খাবেন কীভাবে?
অনেকেই মনে করেন, ওজন কমানোর ক্ষেত্রে ভাতের তুলনায় রুটি বেশি কার্যকর। ভাতের মতোই রুটিও কার্বোহাইড্রেটের ভালো উৎস। তবে রুটি খাবার সময় কিছু কথা মাথায় রাখতে হবে। গমের আটা, জোয়ার, রাগি, বাজরার তৈরি আটারই রুটি খেতে হবে, কারণ দানাশস্যে ফাইবারের পরিমাণ বেশি থাকে। ময়দা বা অতিরিক্ত পরিশোধিত কোন আটার রুটি নয়।
ভাতের মতো রুটির সাথেও সবজির তরকারি, ডাল, ডিম ইত্যাদি রাখুন। ফাইবার, ভিটামিন, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, প্রোটিন আপনার ওজন নিয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে। পাশাপাশি পরিমাণের ওপরেও নজর দিন যে কটা রুটি খাচ্ছেন আপনি। অতিরিক্ত পরিমাণে কোনো কার্বোহাইড্রেটই ভালো নয়।
কখন খাওয়া যাবে রুটি?
এক একজন এক এক সময়ে রুটি খান। কেউ সকালে, কেউ অফিস কাছারিতে বেরোলে দুপুরে টিফিন হিসেবে রুটি খান, তবে বেশিরভাগই রাতে রুটি খেতে পছন্দ করেন। কিন্তু রাতের খাবার যত হালকা রাখবেন তত ভালো। তাই নিজের সুবিধা মত সকালে অথবা দুপুরে রুটি খাওয়ার ব্যবস্থা করুন। এতে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য হবে।