
আজকাল প্রাণঘাতী হৃদরোগ ভীষণ সাধারণ এবং ক্রমবর্ধমান। হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক শুধু যে বয়স বাড়ার সাথে সাথেই হবে, এমনটা নয়। অনেক কম বয়স থেকেই শরীর হৃদরোগের ঝুঁকি বহন করে চলে। সমস্যা হল, এই রোগের উপসর্গগুলো আগেভাগে বোঝা প্রায় অসম্ভব, এবং বুঝলেও অধিকাংশ সময় তা উপেক্ষিত থাকে।
তবে আগাম সতর্কতা পেলে সঠিক চিকিৎসা এবং জীবন ধারার মান উন্নত করে এ রোগের ঝুঁকি কমানো যেতে পারে। দুটি এমন আধুনিক রক্ত পরীক্ষা আছে, যা কয়েক বছর আগেই হৃদরোগের ঝুঁকি শনাক্ত করতে পারে। হিমোসিস্টিন ব্লাড টেস্ট (Homocysteine Blood Test) এবং সি-রিঅ্যাকটিভ প্রোটিন টেস্ট (C-Reactive Protein Test - CRP)।
১। হিমোসিস্টিন ব্লাড টেস্ট
হিমোসিস্টিন হল একধরনের অ্যামাইনো অ্যাসিড, যা শরীরের প্রোটিন বিপাকের সময় তৈরি হয়। স্বাভাবিকভাবে এটি ভিটামিন বি৬, বি১২ এবং ফোলিক অ্যাসিডের মাধ্যমে রূপান্তরিত হয়। কিন্তু যখন এর মাত্রা বেড়ে যায়,ল এবং দিনের পর দিন যদি রক্তে হিমোসিস্টিন জমা হতে থাকে, তা হলে ধমনীতে তা ‘প্লাক’-এর মতো জমতে থাকবে ও হার্ট ব্লকেজের কারণ হয়ে উঠবে।
কারা করাবেন এই টেস্ট?
* যাদের পরিবারে হৃদ্রোগের পূর্ব ইতিহাস আছে।
* যারা নিয়মিত ভাজাভুজি বা মশলাদার খাবার খান
* ধূমপান বা মদ্যপানে অভ্যস্ত
* যাদের অটোইমিউন বা স্নায়বিক রোগ আছে
সুবিধা
আগেই হৃদ্রোগের ঝুঁকি চিহ্নিত করা সম্ভব। ফলে প্রয়োজনমতো জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনা যায়।
২। সি-রিঅ্যাকটিভ প্রোটিন টেস্ট (CRP)
সি-রিঅ্যাকটিভ প্রোটিন এক ধরনের প্রোটিন। রক্তে এই প্রোটিন বৃদ্ধি পেলে প্রদাহ বাড়ে। সিআরপি টেস্ট করালে বোঝা যায়, শরীরে কী পরিমাণ প্রদাহ হচ্ছে। যার থেকে বোঝা সম্ভব হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি আছে কি না।
সাধারণত ২ mg/L বা তার নিচে থাকে স্বাভাবিক মাত্রা। তবে ১০–১৫ mg/L হলে হৃদ্রোগের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।
সুবিধা
প্রায় ৩ বছর আগেই সম্ভাব্য হৃদ্রোগের ঝুঁকি জানা সম্ভব। পূর্বাভাসের কারণে চিকিৎসা ও জীবনধারণ পরিবর্তনের সময় পাওয়া যায়