দুই মা, এক বাবা! জিনবাহিত রোগ ঠেকিয়ে ৮ শিশুর জন্ম, চিকিৎসায় বিপ্লব

Published : Jul 18, 2025, 05:28 PM IST
Baby Boy Representative image

সংক্ষিপ্ত

মায়ের শরীরে রোগ থাকলেও তা সন্তানের দেহে আসবে না - থ্রি প্যারেন্ট ইনভিট্রো ফার্টিলাইজেশন, নতুন এই পদ্ধতি আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানে নব দিগন্ত খুলে দেওয়ার মতো। 

আপনার সন্তান আপনার গায়ের রং, চেহারার আদল, চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য - সবই পেলো, সঙ্গে অপনার রোগও। মায়ের শরীরে থাকা বহু জটিল রোগ জিনবাহিত হয়ে সন্তানের শরীরেও বাসা বাঁধতে পারে, যা হয়তো সারা জীবনে চিকিৎসা করিয়েও সারানো যায় না। কিন্তু এবার এই সমস্যার প্রতিকার নিয়ে এলো উত্তর-পূর্ব ইংল্যান্ডের নিউ কাসল ফার্টিলিটি সেন্টার। নতুন এক বিশেষ পদ্ধতিতে নানা রোগে আক্রান্ত ২২ জন মায়েদের ওপর পরীক্ষা চালায় একদল গবেষক। এই পদ্ধতিটির নাম - “থ্রি প্যারেন্ট ইনভিট্রো ফার্টিলাইজেশন”।

নতুন গবেষণায় কী দেখা গিয়েছে?

উত্তর-পূর্ব ইংল্যান্ডের নিউ কাসল ফার্টিলিটি সেন্টারে নানা রোগে আক্রান্ত ২২ জন মায়েদের নিয়ে পরীক্ষা চালানো হয়। যাদের মধ্যে কারও ছিল ডায়াবিটিস, দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হয়ে যাওয়ার রোগ, পেশি নষ্ট হয়ে যাওয়ার মতো রোগ, যেগুলি জিনবাহিত হয়ে নবজাতকের মধ্যে আসতেই পারে।

কিন্তু এই "থ্রি পেরেন্ট আইভিএফ" পদ্ধতিতে নানা রোগে আক্রান্ত ২২ জন মায়ের মধ্যে সাত জনের সন্তান হয়েছে। তার মধ্যে একজন যমজ সন্তানেরও জন্ম দিয়েছেন। মোট চারটি কন্যা এবং চারটি পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছেন ওই মায়েরা। তবে খুশির খবর, কোনও শিশুরই DNA-তে তাদের মায়েদের রোগের কোনও চিহ্নই পাওয়া যায়নি।

বুধবার এই পরীক্ষার সাফল্যের খবর প্রকাশ করেছেন গবেষকরা। বিজ্ঞান বিষয়ক জার্নাল নেচারে সেই পদ্ধতির বিস্তারিত বিবরণও দেওয়া হয়েছে।

কী এই "থ্রি প্যারেন্ট আইএফভি"?

এই নতুন পদ্ধতিতে আসলে একটি সন্তানের জন্মে তিনজন অভিভাবকের জিনগত উপাদান থাকে জ একজন বাবা, একজন জিনগতভাবে রোগ বহনকারী মা (biological mother), আর একজন জিনগতভাবে সুস্থ মা যিনি ডোনার (egg donor mother)। এই প্রক্রিয়ায় সন্তান তার মা-বাবার জেনেটিক পরিচয় পায় ঠিকই, কিন্তু মায়ের শরীরের জিনবাহিত রোগগুলি তার শরীরে প্রবেশ করে না।

জিনগত রোগ বাহিত মায়ের ভূমিকা : এই মায়ের শরীরে ডিম্বাণু শুক্রাণুর সংস্পর্শে এসে ভ্রুণে পরিণত হয় এই মায়ের গর্ভে ভ্রুণের কোষে তৈরি হচ্ছে রোগের খুঁত লাগা মাইটোকনড্রিয়া, ফলে শিশুর শরীরে মায়ের মতো রোগ বয়ে আসার সম্ভাবনা থাকে।

ডোনার মা : সন্তানের এই মা স্বেচ্ছায় নিজের সুস্থসবল ডিম্বাণুর কোষ দান করেন দম্পতিকে, যে কোষে কোনও জিনগত রোগ থাকেনা। এই কোষ দাত্রী মায়ের ডিম্বাণুতেই স্থাপন করা হচ্ছে প্রথম মায়ের ভ্রুণের কোনও রকম রোগের বৈশিষ্ট্যহীন নিউক্লিয়াস। এই মায়ের শরীরে ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠে নীরোগ সন্তান।

এ নতুন প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে নিউ ইয়র্ক সিটির কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেম সেল বিজ্ঞানী ডায়েট্রিস এগলিও জানিয়েছেন, ‘‘সন্তানের জন্মের যে সমস্ত জটিলতা রয়েছে, তার মধ্যে একটি অবশ্যই মায়ের শরীরের রোগ শিশুর শরীরে জিনবাহিত হয়ে বাসা বাঁধা। এই পদ্ধতিতে নিঃসন্দেহে সেই জটিল সমস্যাকে সমাধানের পথ দেখাল’’।

 

 

PREV
Read more Articles on
click me!

Recommended Stories

রোজ প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট নিচ্ছেন! অজান্তেই কি শরীরকে ক্ষতির দিকে ঠেলে দিচ্ছেন?
Teeth Health: দাঁতের ফাঁকে খাওয়ার আটকে থাকলে কি দিয়ে পরিষ্কার করবেন টুথপিক নাকি ফ্লজ?