
ঘুম থেকে উঠেও আবার ঘুমিয়ে পড়ার ইচ্ছে, ঝিমুনি। সারা দিন শুধু ক্লান্তি। একটুখানি হাঁটাচলা বা কাজ করলেই শরীর যেন কেঁদে ওঠে - এমন অভিজ্ঞতা কি আপনারও হচ্ছে? বর্তমান জীবনযাত্রায় এ রোজকার সমস্যা। অনেকে একে মানসিক চাপ বা আবহাওয়ার দোষ হিসেবে বলে ঠিকই, তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরণের স্থায়ী ক্লান্তি, পেশিতে টান, গায়ে ব্যথার পিছনে গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো ভিটামিন ও খনিজের ঘাটতি।
খিদে পেলেই রোল-চাউমিন বা পিৎজ়া-বার্গারে মন ভরে ঠিকই, কিন্তু শরীর ভিটামিন পায় না। যে কারণেই পেশির সক্রিয়তা কমে ও ব্যথাবেদনা ভোগায়। গা-হাত-পা ব্যাথা কমাতে অনেকেই বলেন রোদে শরীর সেঁকে নিতে। এতে ভিটামিন ডি পাওয়া যায় ঠিকই, তবে সমস্যার সমাধান সমূলে হয় না। এ সমস্যার সমাধান করতে পারে তিন ধরনের ভিটামিন - ভিটামিন ডি ২, ভিটামিন ডি ৩, এবং ভিটামিন কে। সঙ্গে অবশ্যই ম্যাগনেশিয়াম।
তিন ভিটামিনের উৎস
* ভিটামিন ডি ২ ও ডি ৩
ভিটামিন ডি২ ও ডি৩ আসলে ভিটামিন ডি-এরই দু’টি প্রকার। তবে এদের উৎস আলাদা। ভিটামিন ডি৩ শরীরেই তৈরি হয়। আর ভিটামিন ডি২ মূলত উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে পাওয়া যায়। মাশরুম, ছত্রাক, উদ্ভিজ্জ দুধ, যেমন আমন্ড মিল্ক, সয়া মিল্ক, নারকেলের দুধ, কমলালেবুর রসে এই দুই ভিটামিন থাকে। তা ছাড়া সাপ্লিমেন্ট থেকেও নেওয়া যেতে পারে।
এই দুই ভিটামিনের অভাব হলে পেশির শক্তি কমে, স্নায়বিক রোগও দেখা দিতে পারে, হাড় ভঙ্গুর হতে পারে, এমনকি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে।
* ভিটামিন কে
পালংশাক, নটেশাক, সর্ষে শাক বা যেকোনও ধরনের শাক পাতাতেই ভিটামিন কে রয়েছে। ব্রোকোলি, বাঁধাকপি, জামের মতো ফলে এবং সয়াবিন, ডিমের কুসুম, মুরগির মাংশে ভরপুর ভিটামিন কে থাকে।
কীভাবে খেতে হবে এই সব ভিটামিন?
ভিটামিন কে এবং ভিটামিন ডি শরীরে শোষণ ও কার্যকর করতে হলে সঙ্গে আরও একটি খনিজ জরুরি - ম্যাগনেশিয়াম। পাবমেড থেকে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রেও এই একই কথার উল্লেখ আছে। বলা হয়েছে, ভিটামিন ডি বা কে যাই খান, এমনকি এদের সাপ্লিমেন্ট খেলেও তার সঙ্গে এমন খাবার খেতে হবে যাতে ম্যাগনেশিয়াম আছে। ভাইরাস, ব্যাক্টেরিয়া ঘটিত রোগ থেকে বাঁচতেও ভিটামিন ডি-এর সঙ্গে ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ খাবারই খেতে হবে।
* ম্যাগনেশিয়মের উৎস
ওট্স, ডালিয়ার মতো দানাশ্য, ভেটকি, বাসা, পমফ্রেটের মতো সামুদ্রিক মাছ, এছাড়াও পালং শাক, কাঠবাদাম, ডার্ক চকোলেট থেকেও ম্যাগনেশিয়াম পাওয়া যাবে।