
কমবয়সীদের মধ্যে ব্রেন স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ার প্রধান পাঁচটি কারণ হলো অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন। যেমন ধূমপান ও স্থূলতা; উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং উচ্চ কোলেস্টেরলের মতো শারীরিক সমস্যা।কিছু জন্মগত বা বংশগত হৃদরোগ, মানসিক চাপ এবং জীবনযাত্রার অন্যান্য ভুল অভ্যাস। এই কারণগুলো মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়।
কমবয়সীদের মধ্যে ব্রেন স্ট্রোকের পাঁচটি প্রধান কারণ :
১) অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন: ধূমপান, অ্যালকোহল সেবন এবং অপর্যাপ্ত শারীরিক কার্যকলাপ স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এছাড়া স্থূলতা, যা আজকাল কম বয়সীদের মধ্যে বেশি দেখা যায়, এটিও একটি প্রধান কারণ।
২) উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং উচ্চ কোলেস্টেরল: এই রোগগুলি প্রায়শই ছোটবেলা থেকেই শুরু হতে পারে। উচ্চ রক্তচাপ মস্তিষ্কের রক্তনালীগুলোর উপর চাপ সৃষ্টি করে, যা স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়।
৩) হৃদরোগ: জন্মগতভাবে কিছু হৃদরোগ, যেমন হার্টের ভালভের সমস্যা বা অ্যাট্রিয়াল ফাইব্রিলেশন, রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এই জমাট বাঁধা রক্ত মস্তিষ্কে পৌঁছালে স্ট্রোক হতে পারে।
৪) মানসিক চাপ: দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ, যা কম বয়সীরা অনেক সময়ই অনুভব করে, তা রক্তচাপ বাড়িয়ে এবং অন্যান্য শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি করে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
৫) স্থূলতা ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: শারীরিক পরিশ্রমের অভাব এবং অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার, জাঙ্ক ফুড স্থূলতার কারণ। উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল এবং ডায়াবিটিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে স্থূলতা, যা স্ট্রোকের কারণ হতে পারে।
৬) মদ্যপানে আসক্তি: প্রতি দিন আকণ্ঠ মদ্যপান করলে শুধু যে ফ্যাটি লিভারের রোগ হবে, এ ধারণা ভুল। অ্যালকোহল মস্তিষ্কের রক্তনালি ছিঁড়ে দেয়। ফলে মস্তিষ্কের অভ্যন্তরে রক্তক্ষরণ হতে হতে ব্রেন স্ট্রোকের ঝুঁকি বহুগুণে বেড়ে যায়।
৭) ব্লাড ক্লটিং ডিজ়অর্ডার: থ্রম্বোফিলিয়া হল এমন একটি অবস্থা যেখানে রক্তনালিতে রক্ত জমাট বাঁধার প্রবণতা থাকে। যাঁদের এই রোগ থাকে, তাঁদের স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি বেশি। আবার ‘সিকল সেল অ্যানিমিয়া’ থাকলেও ব্রেন স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে। সিকল সেল অ্যানিমিয়া বংশানুক্রমিক ভাবে প্রাপ্ত রোগ, যাতে মানব শরীরের স্বাভাবিক গোলাকার লোহিত রক্তকণিকাগুলির আকার পাল্টে গিয়ে কোষগুলি কাস্তে বা অর্ধচন্দ্রের আকার ধারণ করে। কোষের ওই বিকৃত আকারের জন্য দেহের সব অংশে অক্সিজেন সঠিক ভাবে পরিবহণ হয় না। যার ফলে আক্রান্তরা ক্লান্তি, শ্বাসকষ্ট, সংক্রমণজনিত সমস্যা, আলসারের মতো রোগে ভোগেন।
অন্যান্য কারণ:
১) মানসিক চাপ: দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ, যা কম বয়সীরা অনেক সময় অনুভব করে, তা রক্তচাপ বাড়িয়ে এবং অন্যান্য শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি করে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
২) জীবনযাত্রার ভুল অভ্যাস: অপর্যাপ্ত ঘুম এবং ভুল খাদ্যাভ্যাসও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
৩) ক্যারোটিড ধমনী রোগ: ক্যারোটিড ধমনী, যা মস্তিষ্ককে রক্ত সরবরাহ করে, সেটি কোনো কারণে ব্লক হয়ে গেলে স্ট্রোক হতে পারে।