
কোমরের মেদ এক বার বাড়তে শুরু করলে, তা কমানো খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার। অথচ, তলপেট, কোমরের দু’পাশেই সবচেয়ে দ্রুত চর্বির স্তর জমতে থাকে। শরীর ভারী হলে পায়ের ওপরও যথেষ্ঠ চাপ পড়ে।
চিকিৎসকেরা বলেন, হরমোনের ঘাটতি বা আধিক্য,কোনওটিই শরীরের জন্য ভাল নয়। পেট, কোমরে অতিরিক্ত মেদ জমার পিছনে অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, টাইপ-২ ডায়াবিটিস, প্রদাহজনিত সমস্যার ভূমিকা রয়েছে। এর জন্য হরমোনের গোলমালও দায়ী। এই সব সমস্যার সামধান করতে কেবল ওষুধে ভরসা রাখলে চলবে না। নিয়মিত শরীরচর্চাও করতে হবে। এবং খেতে হবে পুষ্টিকর খাদ্য। প্রচুর পরিমাণে জল খেতে হবে। এবং শরীরকে যথেষ্ট পরিমাণে বিশ্রামও দিতে হবে। অতিরিক্ত মেদ -এর কারণে শরীরে আসতে পারে বিভিন্ন রকম ব্যথা বেদনা, হাঁটুর ব্যথা, কোমরের ব্যাথা। কারণ আমাদের শরীরের সমস্ত হার আমাদের পায়ের উপর গিয়ে পড়ে। অর্থাৎ হাটুর উপর গিয়ে প্রেসার টা তৈরি করে। তাই হাঁটুর ব্যথা কমাতে পুষ্টিকর খাদ্যের সাথে সাথে ঘরে সামান্য এক্সারসাইজ করা প্রয়োজনীয়।
হাঁটুতে ব্যথা হলে অসহ্য যন্ত্রণা অনুভব হয়। বিভিন্ন কারণেই ব্যথা হয়ে থাকে। বাড়িতে কোনো কাজ করতে গিয়ে বা অফিসে দীর্ঘ সময় ডেস্কে বসে কাজের পর ওঠার সময় হঠাৎ করেই হাঁটুতে টান বা ব্যথা অনুভব হয়। যারা খেলাধুলা করেন, তারাও এ সমস্যায় ভোগেন।
হাঁটুতে বিভিন্নভাবে ব্যথা হলে যন্ত্রণা পোহাতেই হয়। অনেক সময় এর প্রভাব পড়ে হাড়ে। এ ব্যাপারে পুষ্টিবিদরা হাড়ের ক্যালসিয়াম বাড়ানোর জন্য কিছু সঠিক উপায় বলেছেন। তাহলে সেই অনুযায়ী হাঁটুর ব্যথা থেকে মুক্তির কিছু উপায় জেনে নেওয়া যাক। যেমন :
** সঠিক মাত্রায় জল পান করা : যারা খেলাধুলা করেন তাদের জন্য শরীর ফিট ও শক্তিশালী রাখা জরুরি। এ জন্য শরীরকে চাঙা ও সুস্থ রাখতে নিয়মিত জল পান করতে হবে। শরীরের প্রয়োজনীয় মিনারেলসের চাহিদা থাকে জলে। যা হাড়কে মজবুত করে। রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
** অ্যালকেলাইন ডায়েট: পুষ্টিবিদের মতে এই ধরনের ডায়েটে থাকা খাবারে অ্যালকেলাইন অর্থাৎ ক্ষারের ভাগ বেশি থাকে। শরীরে অ্যাসিড ও অ্যালকেলাইনের মাত্রা ঠিক রাখে। সাধারণত ৭.৩৫ থেকে ৭.৪৫-এর মধ্যে থাকে এর মাত্রা। আবার হজমশক্তি ভালো করার জন্যও এ ধরনের খাবার জরুরি। ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করার জন্য পেটে থাকা অম্ল পদার্থে মাত্রাও ঠিক রাখে অ্যালকেলাইন ডায়েট।
** ডায়েটে দরকার সঠিক অনুপাত: এই ডায়েট করতে হলে অবশ্যই পুষ্টিবিদের পরামর্শ মেনে চলতে হবে। কেননা, অ্যাসিডিক ও অ্যালকেলাইন খাবারের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা সম্ভব না হলে উদ্বেগের কারণ। শরীরের ক্ষারজাতীয় উপাদান থাকলেই হবে না। হজমের জন্য অ্যাসিডিক উপাদানও প্রয়োজন। এ জন্য নিয়মিত ফল, সবজি, মেওয়া ও বীজসব সব খাবারই রাখতে হবে।
** অ্যালকেলাইনজাতীয় খাবার: ফলের মধ্যে রয়েছে অ্যাভোকাডো, কলা, জাম ও । সবজির মধ্যে পালং শাক, ব্রুকোলি ও শশা। ড্রাই ফ্রুটস ও বীজের মধ্যে রয়েছে বাদাম, চিয়া বীজ। এছাড়া দানা শস্যের মধ্যে ছোলা, ডাল, বাজরা রয়েছে। এসব খাবার নিয়মিত খাদ্য তালিকায় থাকলে হাড় মজবুত হবে। তবে যেকোনো সমস্যায় অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলতে হবে।