Kalpataru Day 2022: কল্পতরু দিবসে জেনে নিন ঠাকুরের কামারপুকুর ও পার্শ্ববর্তী লীলাস্থলগুলি সম্পর্কে

১৮৮৬ সালের পয়লা জানুয়ারি কল্পতরুরূপে আবির্ভূত হন শ্রীরামকৃষ্ণ। গৃহী ভক্তদের মনোবাঞ্ছা পূরণ করেন ঠাকুর। আজ কল্পতরু দিবসে শ্রীম'র 'রামকৃষ্ণকথামৃত' অনুসারে শ্রীরামকৃষ্ণের জন্মস্থান কামাপুকুর ও তার পার্শ্ববর্তী শ্রীরামকৃষ্ণের লীলাক্ষেত্রগুলি পরিক্রমার কাহিনি 

১৮৮৬ সালের পয়লা জানুয়ারি কল্পতরুরূপে আবির্ভূত হন শ্রীরামকৃষ্ণ। গৃহী ভক্তদের মনোবাঞ্ছা পূরণ করেন ঠাকুর। আজ কল্পতরু দিবসে শ্রীম'র 'রামকৃষ্ণকথামৃত' অনুসারে শ্রীরামকৃষ্ণের জন্মস্থান কামাপুকুর ও তার পার্শ্ববর্তী শ্রীরামকৃষ্ণের লীলাক্ষেত্রগুলি পরিক্রমার কাহিনি শোনাচ্ছেন অনিরুদ্ধ সরকার
শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের জন্মস্থান ও তাঁহার বাল্য ও কৈশোরের লীলাভূমি কামারপুকুর বর্তমান যুগের অন্যতম মহান তীর্থ। ইহা হুগলী, বাঁকুড়া ও মেদিনীপুর এই তিন জেলার সংযোগস্থলে অবস্থিত। শ্রীশ্রীঠাকুরের পৈত্রিক বাসভবন সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে ১৯৪৭ খ্রীষ্টাব্দের মার্চ মাসে উক্ত বাসভবন সহ ৪৫ বিঘা জমি রামকৃষ্ণ মিশন কর্তৃক সংগৃহীত হইলে এপ্রিল মাসে সেখানে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের এক যুক্ত শাখাকেন্দ্র খোলা হয়। শ্রীশ্রীঠাকুরের ব্যবহৃত খড়ের চালবিশিষ্ট মাটির নির্মিত বাসগৃহ, দোতলা গৃহ ও বৈঠকখানা সংরক্ষিত হইয়াছে।

শ্রীরামকৃষ্ণের জন্মস্থান — ঢেঁকিশালায় একটি উনুনের পাশে। এই জন্মস্থানের উপরেই বর্তমান মন্দির নির্মিত। এই মন্দিরে শ্রীশ্রীঠাকুরের শ্বেত প্রস্তরমূর্তি যে প্রস্তরময় বেদীর উপর স্থাপিত ওই বেদীর সম্মুখ ভাগে ঢেঁকি ও উনুনের প্রতিরূপ খোদিত আছে।
কুলদেবতার মন্দির — শ্রীরামকৃষ্ণের গৃহাঙ্গনে তাঁহার জন্মস্থানের পশ্চিমে কুলদেবতা ৺রঘুবীরের মন্দির। মন্দিরে ৺রামেশ্বর শিবলিঙ্গ, ৺রঘুবীর শিলা ও ৺শীতলার ঘট আছে। ইঁহাদের নিত্যপূজা হয়। পূর্বে মন্দিরটি মৃত্তিকা নির্মিত ছিল। পরে ইষ্টক নির্মিত হইয়াছে। বর্তমানে এই মন্দিরে ৺নারায়ণ শিলা ও লক্ষ্মীর ঘটও আছে।

Latest Videos

পৈতৃক গৃহ: — শ্রীশ্রীঠাকুরের শয়ন ঘর — ৺রঘুবীরের মন্দিরের উত্তের মৃত্তিকা নির্মিত গৃহ ও বারান্দা। এই গৃহে শ্রীরামকৃষ্ণ শয়ন করিতেন। ইহা এখনও তাঁহার শয়নকক্ষ রূপে ব্যবহৃত হয়। খড়ের চাল, মাটির দেওয়াল ও পরিষ্কার নিকানো মেঝে পূর্বের ন্যায় একই আছে। এই গৃহের সংলগ্ন পূর্বদিকে দ্বিতল মৃত্তিকা নির্মিত গৃহ ও বারান্দা। এই গৃহে বাড়ির অন্যান্য সকলে শয়ন করিতেন।

বাড়ির বাহিরে প্রবেশপথের উপরে একখানি মৃত্তিকার দেওয়াল সহ চালাঘর আছে। এখানে শ্রীশ্রীঠাকুর বাহিরের লোকজনের সহিত কথাবার্তা বলিতেন। সেইজন্য ইহাকে বৈঠকখানা বলা হয়। ইহার পূর্বদিকে দেওয়ালের পার্শ্বে শ্রীশ্রীঠাকুরের স্বহস্তরোপিত আম্রবৃক্ষ আছে। বাড়ির পূর্বদিকে একটি পুষ্করিণী আছে। বর্তমানে ইহা ভরাট করাতে ক্ষুদ্রাকৃতি হইয়াছে। ইহার নাম খাঁ পুকুর।

বাড়ির দক্ষিণ দিকে এখন যে স্থানে নাটমন্দির আছে সেখানে ক্ষুদিরামের বন্ধু সুখলাল গোস্বামীর বাড়ি ছিল। ক্ষুদিরাম স্বগ্রাম দেরে হইতে ওই গ্রামের জমিদারের চক্রান্তে সর্বস্ব বঞ্চিত হইয়া বন্ধু সুখলালের আমন্ত্রণে কামারপুকুরে আসিয়া বসবাস করেন। সুখলাল নিজ বসতবাটীর উত্তরে জমি দান করিয়া গৃহাদি নির্মাণে ক্ষুদিরামকে সহায়তা করিয়াছিলেন।


যুগীদের শিব মন্দির — শ্রীরামকৃষ্ণের বাড়ির উত্তরে যুগীদের শিব মন্দির। এই মন্দিরের মহাদেবের লিঙ্গমূর্তি হইতে দিব্যজ্যোতি নির্গত হইয়া বায়ুর ন্যায় তরঙ্গাকারে মন্দিরের সম্মুখে দণ্ডায়মান চন্দ্রাদেবীর দেহে প্রবেশ করে এবং উহা হইতেই শ্রীশ্রীঠাকুরের জন্ম। এই মন্দিরে উত্তর-পূর্ব কোণে মধু যুগীর বাড়ি ছিল।

হালদারপুকুর — এই পুকুরে গদাধর (ঠাকুরের বাল্য নাম) ও বাড়ির অন্যান্য সকলে স্নান করিতেন। পরবর্তী কালে শ্রীশ্রীঠাকুর ইহার কথা কথামৃতে বহুবার উল্লেখ করিয়াছেন।

লক্ষ্মীজলা — হালদারপুকুরে পশ্চিমে লক্ষ্মীজলা নামে এক বিঘা দশ ছটাক পরিমাণের ধানের খেত। ইহাতে প্রচুর ধান হইত। এই ধানের চাউলে ৺রঘুবীর ও অন্যান্য দেবতাদের ভোগ হইত।

ভূতির খালের শ্মশান ও গোচারনের মাঠ — পিতা ক্ষুদিরাম দেহত্যাগ হইলে গদাধর শোকাচ্ছন্ন হইয়া এই শ্মশানে বহু সময় কাটাইতেন। এই গোচারণের মাঠে গদাধর কোন কোন সময় কোঁচড়ে মুড়ি লইয়া খাইতে খাইতে বেড়াইতেন। সেই সময় একদিন আকাশে কৃষ্ণবর্ণ মেঘের কোলে এক ঝাঁক সাদা বলাকা দর্শনে মুগ্ধ হন এবং এই অপূর্ব সৌন্দর্যের দর্শনে তন্ময় হইয়া ভাবসমাধিস্থ হন। ইহাই তাঁহার প্রথম ভাব সমাধি।

লাহাবাবুদের সদাব্রত ও দেবালয় — বর্তমান শ্রীরামকৃষ্ণ মঠের দক্ষিণদিকে এই সদাব্রত ছিল। সাধুরা সেখানে আসিলে চাউল, ডাল ইতাদি পাইতেন। গদাধর বাল্যকাল হইতেই সাধুদর্শনের জন্য সেখানে যাইতেন। বর্তমান মঠের পূর্বদিকে লাহাবাবুদের বাড়ি ও দেবালয়, বিষ্ণুমন্দির ও দুর্গাদালান ছিল। গদাধের বাল্যেই মন্দিরে পূজা ও দুর্গামণ্ডপে প্রতিমা নির্মাণ হইতে পূজাসাঙ্গ পর্যন্ত বিশেষভাবে লক্ষ্য করিতেন। লাহাবাবুদের বাড়িতেও প্রায়ই যাইতেন।

লাহাবাবুদের পাঠশালা — দুর্গামণ্ডপের সম্মুখে আটচালায় এই পাঠশালা বসিত। ক্ষুদিরাম গদাধরের পাঁচ বৎসর বয়সে এক শুভদিনে হাতে খড়ি দিয়া এই পাঠশালায় ভর্তি করিয়া দিয়াছিলেন। বর্ণপরিচয়, পরে হস্তলিখন ও সংখ্যা গণনা অভ্যাস শুরু হয়। তাঁহার হস্তাক্ষর অতি সুন্দর হইয়াছিল। ‘সুবাহুর পালা’ নামক তাঁহার স্বহস্তলিখিত পুঁথিতে ইহার প্রমাণ পাওয়া যায়। পুঁথিপাঠ তিনি ভালভাবেই করিতে পারিতেন।

চিনু শাঁখারির বাড়ি — কামারপুকুরে শ্রীরামকৃষ্ণদেবের গৃহ হইতে কিছু পূর্বদিকে ইহা অবস্থিত ছিল। বর্তমানে কেবল বাস্তুভিটা ভিন্ন বসতবাটীর অন্য কোন চিহ্ন নাই। সম্প্রতি এই স্থানটি শ্রীরামকৃষ্ণ মঠ কর্তৃক গৃহীত হইয়াছে।

পাইনদের বাড়ি — বর্তমান মঠের দক্ষিণ দিকে পাইনদের বাড়ি। ইহাদের মধ্যে সীতানাথ পাইনের বাড়িতে গদাধর প্রায়ই যাইতেন।

ধনী কামারিনীর বাড়ি — লাহাবাবুদের দুর্গামণ্ডপের পূর্বদিকে ধরিয়া দক্ষিণ দিকে কিছু দূরে রাস্তার মোড়ের মাথায় ধনী কামারিনীর ভিটা। বর্তমানে এই ভিটায় একটি ছোট মন্দির আছে।

বুধুই মোড়লের শ্মশান — কামারপুকুর গ্রামের পূর্বপ্রান্তে ইহা অবস্থিত। সম্মুখে একটি ছোট পুষ্করিণী। চারিদিকে বট ও অন্যান্য বৃক্ষ আছে। এইখানে গদাধর পিতার দেহাবসানের পর শোকাচ্ছন্ন অবস্থায় একাকী বসিয়া থাকিতেন।

মুকুন্দপুরের বুড়ো শিব — এই মন্দিরে নিত্য পূজা ছাড়া বিশেষ বিশে

Share this article
click me!

Latest Videos

নওশাদ সিদ্দিকীকে জঙ্গি আখ্যা Saokat Molla-র, পাল্টা বড় পদক্ষেপ Naushad Siddiqui-র
'কেন্দ্র যদি একটু দয়া দেখায় তাহলে হুগলিতেও মেট্রো চলবে', আশাবাদী Rachana Banerjee
এ যেন লুকোচুরি খেলা! ক্ষণে ক্ষণে স্থান পরিবর্তন, এখনও অধরা বাঘিনী যমুনা | Jhargram Tiger News
শীতের রাতে যমুনার আতঙ্ক! একের পর এক জঙ্গল দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বাঘিনী | Bandwan Tiger News
'কুমিল্লা ছেড়ে চলে যা' কুমিল্লায় বৃদ্ধ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতোর মালা! | Bangladesh News |