
বিশ্বের এমন অনেক রহস্যময় চরিত্র আছে যাদের ভবিষ্যৎ বাণীর মত বার্তা বিশ্বজুড়ে মানব সভ্যতার কাছে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। নিজের জীবদ্দশায় তিনি বহু ভবিষ্যৎবাণী করেছেন যা জ্যোতির্বিজ্ঞান এবং জলবায়ু বিষয়ের উদ্দেশ্যের সাথে একশ শতাংশ মিলে যায়। ৯/১১ জঙ্গি হানা, চেরনোবিল দুর্ঘটনা, সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন, রাজরানী ডায়নার মৃত্যু ইত্যাদি নিয়ে বাবা ভেঙ্গার নানান ভবিষ্যদ্বানী বহু সময়েই এসেছে প্রসঙ্গে। এমনকি ২০২৫ এর বিভিন্ন যুদ্ধ নিয়েও তিনি ভবিষ্যৎ বাণী প্রকাশ করেছিলেন। এবার ২০২৫ সালেও অনেক কিছু নিয়ে ভবিষ্যৎবাণী করে চর্চায় রয়েছেন বাবা ভাঙ্গা। এমনকি জ্যোতিষ শাস্ত্রও সাবধানে থাকতে বলছে আগামী দিনগুলো নিয়ে।
বাবা ভাঙ্গা কে?
বাবা ভাঙ্গা, আসল নাম: ভাঙ্গেলিয়া পান্দেভা সুরচেভা। জন্মগ্রহণ করেন ১৯১১ সালের ৩১শে জানুয়ারি, বুলগেরিয়ার একটি গ্রামে। মৃত্যু হয় ১৯৯৬ সালে। চোখে দেখতে পেতেন না বাবা ভেঙ্গা। খুব অল্প বয়সেই প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে দৃষ্টিশক্তি হারার নিজের। তবুও ৫০৭৯ সাল পর্যন্ত ভবিষ্যৎবাণী করে গেছেন তাঁর জীবদ্দশায়। তার বলা বিভিন্ন বৈশ্বিক বিষয়ে ভবিষ্যৎবাণীগুলির মধ্যে ২০২৫ সালের ৭ জুন এর ভবিষ্যৎবাণী যথেষ্ট বিতর্ক ও উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।
আসলে বৈদিক পঞ্জিকা অনুসারে ৭ জুন মঙ্গল রাশির স্থান পরিবর্তন করে সিংহ রাশিতে গোচর করবে। জ্যোতিষ শাস্ত্র অনুসারে, মঙ্গল রাশি যুদ্ধ, দুর্ঘটনা, একটুমণ ও অগ্নি সংযোগের ইঙ্গিত দেয়। ফলে বিশ্বে রাজনীতিতে ও অর্থনীতিতে বড়ো পরিবর্তন আসতে পারে বলে আশঙ্কা, যে কারণে উদ্বেগ বেশি।
বাবা ভাঙ্গার ভবিষ্যৎবাণী
১। বাবা ভাঙ্গার ভবিষ্যৎবাণী অনুযায়ী, ২০২৫ সালে বিশ্ব দুটি ভিন্ন মানসিকতার বিভক্ত হবে, একটি প্রযুক্তিতে নিমজ্জিত এবং অপরটি আধ্যাত্মিকতায় মগ্ন। এখনই বিশ্বে এআই এবং সাধনার দুটি প্রান্তে দাঁড়িয়ে। ২০২৫ সালের পরে এই পার্থক্যে বিস্ফোরক বিস্তার ঘটবে।
২। দক্ষিণ আটলান্টিক অ্যানোমালি দেখো কাল ধরে বিজ্ঞানীদের আতঙ্কিত করছে। বাবা ভেঙ্গার ভবিষ্যৎবাণী বলছে যে, নিচের দিক থেকে ওঠা ধোঁয়া আতঙ্ক ধরাবে। এইভাবে ভবিষ্যৎবানী দক্ষিণ গোলার্ধে কোন ভূগর্ভস্থ বিস্ফোরণ বা পারমাণবিক কার্যকলাপের সাথে যুক্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা।
৩। ২০২৫ সালের সমুদ্রের তাপমাত্রা রেকর্ড করে পৌঁছবে। এমনকি বিজ্ঞানীরা মনে করছে ২০২৫ জুন মাসের পর ভাইরাস ও ছত্রাক সংক্রমণের কারণে মহামারীর আতঙ্ক ছড়াতে পারে। বাবা ভিন্ন জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে এই ইঙ্গিতও জড়িত ছিল।
বাবা ভেঙ্গার সাথে বিজ্ঞানও কী ইঙ্গিত দিচ্ছে?
NASA -র মতে, ২০২৫ সালে সূর্যের কার্যকলাপ চরম পর্যায়ে থাকবে যার সৌর ঝড়ের সম্ভাবনা বাড়াতে পারে। জুনের মাঝে মাঝি সময় চুম্বকীয় কারণে যোগাযোগ স্যাটেলাইট ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপর এর প্রভাব দেখা যেতে পারে।
ভারত সম্পর্কে কী বলেছিলেন বাবা ভাঙ্গা?
ভারত সম্পর্কে বাবা ভাঙ্গা বলেছিলেন, পূর্বের একটি দেশ আধ্যাত্মিকতা দিয়ে পশ্চিমের তরঙ্গগুলি বন্ধ করার চেষ্টা করবে। প্রশ্ন উঠছে এটা কি ভারতকে নিয়েই ইঙ্গিত করা হয়েছে, যা প্রযুক্তি ও আধ্যাত্মিকতার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে বর্তমানে?
শাস্ত্র ও জ্যোতির্বিজ্ঞান কী বলছে?
বৃহস্পতি ধর্ম সত্য ও ন্যায়ের সাথে সম্পর্কিত। ইতিমধ্যেই বৃহস্পতি বছর করছে। আর ২০২৫ সালে বৃহস্পতির চালেও বড় পরিবর্তন দেখা দিচ্ছে, যার প্রভাব সম্পূর্ণভাবে ৭ই জুনের উপর পড়ছে। এই বছর বৈশ্বিক সিদ্ধান্ত ও সভ্যতার ওপর সরাসরি নৈতিক পতন বা পুনরুত্থানের কারণ হতে পারে।
বাবা ভাঙ্গার সতর্কতা
২০২৫ সালের ৭ জনের পরে বিশ্বে পরিবর্তন গুলি হতে পারে, শুধু সরকার বা বিজ্ঞানের জন্যই নয় বরং সাধারণ মানুষের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। তাই তাঁর ভবিষ্যৎবাণীকে গল্প ভাবার ভুল না করাই ভালো।
সাধারণ কিছু জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন
১. বাবা ভাঙ্গার সব ভবিষ্যৎবাণী কি সত্যি হয়? * কিছু ভবিষ্যৎবাণী অত্যন্ত রকম সত্যি, তবে সব নয়। তবুও তার ভবিষ্যৎবাণীর সত্যতার ধারা যথেষ্ট চমকপ্রদ।
২. ৭ জুন ২০২৫ তারিখে কি কোন বিশেষ ঘটনা ঘটছে? * মঙ্গলের গোচার সম্পূর্ণভাবে এই তারিখ থেকেই শুরু হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
৩. বাবা ভাঙ্গা ভারত সম্পর্কে কী বলেছিলেন? * পূর্ব দিকের একটি দেশের আধ্যাত্বিক নেতৃত্বের কথা উল্লেখ করেছিলেন যা ভারতের সাথে মিলে যায়।
৪. এই ভবিষ্যৎ বাণীগুলির সমর্থনে কোন বৈজ্ঞানিক প্রমাণ পাওয়া যায় কি? * জ্যোতির্বিজ্ঞান ও জলবায়ুর বিজ্ঞানীরা যে ইঙ্গিত দিয়েছেন তা এই ভবিষ্যৎবাণীর সাথে মিলে যায়।
সারাংশ বাবা ভেঙ্গার ভবিষ্যদ্বাণী বিশ্বাস করা বা না করা একান্তই ব্যক্তিগত বিষয়। ২০২৫ সালের ৭ জুন নিয়ে সরাসরি কোন ভবিষ্যৎবাণী না থাকলেও এই সময়কে ঘিরে বৈশ্বিক কিছু পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া যায়, জানিয়ে সতর্ক থাকার কথা জ্যোতির্বিজ্ঞানও বলে থাকে।