
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তিত পরিবেশ এবং পরিস্থিতিতে বিষণ্ণতা এবং উদ্বেগও এখন আমাদের জীবনের একটি অংশ হয়ে গিয়েছে। বাড়ি এবং কাজের দায়িত্বের মধ্যে কখন আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য বিগড়ে যায়, আমরা বুঝতেই পারি না।
বিষণ্ণতা পুরুষ এবং মহিলাদের উভয়কেই সমানভাবে প্রভাবিত করে। তবে মহিলাদের মধ্যে এর লক্ষণ (মহিলাদের মধ্যে বিষণ্ণতার লক্ষণ) বেশি তীব্র এবং জটিল রূপে প্রকাশ পেতে পারে।
এটি কেবল দুঃখ অথবা চাপ নয়, বরং এটি একটি এমন অবস্থা যা ব্যক্তির চিন্তা, অনুভূতি এবং দৈনন্দিন জীবন যাপন করার ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে। এ পরিস্থিতিতে ফারিদাবাদের ক্লাউডনাইন হাসপাতালে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শৈলী শর্মা ব্যাখ্যা করছেন যে যখন মহিলারা অবসাদে আক্রান্ত হন তখন কী লক্ষণগুলো প্রকাশ পায় এবং তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য কী করা উচিত?
মহিলাদের মধ্যে অবসাদের গুরুতর লক্ষণ: মহিলাদের মধ্যে অবসাদের লক্ষণ সাধারণত আবেগগত, শারীরিক এবং আচরণগত রূপে প্রকাশ পায়। এর মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ হলো অবিরাম দুঃখ, কাঁদতে ইচ্ছা, আত্মসমালোচনা এবং আত্মবিশ্বাসের অভাব। এর সাথে, তারা ছোটখাটো বিষয়গুলিতে ক্রুদ্ধ হতে শুরু করে, একাকী অনুভব করে এবং অনেক সময় তারা জীবনটিকে অর্থহীন মনে করে।
শারীরিক লক্ষণের কথা বললে, বিষণ্ণতার শিকার নারীরা ঘুমের অভাব অথবা অতিরিক্ত ঘুম, ক্লান্তি, মাইগ্রেন, পিঠে ব্যথা এবং পাচনের সমস্যা অনুভব করতে পারে। তারা প্রায়ই ক্ষুধার অভাব বা অত্যধিক খাবারের অভ্যাস পরিবর্তনের অনুভূতি দেয়। মাসিক চক্রে অনিয়ম এবং যৌন আকাঙ্ক্ষার হ্রাসও এর লক্ষণ হতে পারে।সামাজিক এবং পারিবারিক আচরণে পরিবর্তন:বিষণ্ণতার শিকার নারীরা প্রায়ই সামাজিক কার্যকলাপ থেকে দূরে সরে যায়। তারা পরিবার এবং বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দেয় এবং একাকী থাকতে পছন্দ করতে শুরু করে। অনেক সময় কাজের প্রতি আগ্রহ না থাকা, শিশুদের প্রতি উদাসীনতা অথবা গৃহকর্মে আগ্রহের অভাবের মতো অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। যদি এই লক্ষণগুলি দীর্ঘ সময় ধরে থাকে, তবে এটি উদ্বেগের বিষয় হতে পারে।
ডিপ্রেশন থেকে কিভাবে বের হবো? প্রথম পদক্ষেপ হলো মেনে নেওয়া যে আপনি কোনো মানসিক সমস্যার সঙ্গে লড়াই করছেন। প্রায়ই মহিলারা তাদের মানসিক অবস্থাকে উপেক্ষা করে এবং মনে করেন যে এটি একটি পর্যায়, যা নিজেই চলে যাবে, কিন্তু তা হয় না। ডিপ্রেশন থেকে বের হতে পেশাদার সাহায্য নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
একজন মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ যেমন সাইকোলজিস্ট বা সাইকিয়াট্রিস্টের সঙ্গে পরামর্শ করুন। টক থেরাপি, যেমন কাউন্সেলিং, খুবই কার্যকর হতে পারে। এর পাশাপাশি, নিয়মিত রুটিন বজায় রাখুন, পর্যাপ্ত ঘুমান, হালকা ব্যায়াম করুন এবং সুষম খাবার খান। মেডিটেশন, যোগ এবং pranayama এর মতো পদ্ধতিগুলিও মানসিক শান্তি প্রদান করে। যদি প্রয়োজন হয় তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ করা যেতে পারে। মহিলাদের ডিপ্রেশন থেকে বের হয়ে আসতে পরিবারগুলোর সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন, তাদের বোঝার চেষ্টা করুন এবং একা বোধ করতে দেবেন না।