আইটেম গানের প্রভাব শিশুদের জন্য কতটা ক্ষতিকর? ইউটিউবে প্লে করার আগে সাবধান হন
সিনেমার প্রভাব আজকের সমাজে অনেক, বিশেষ করে তরুণ-তরুণী এবং শিশুদের উপর। মোবাইল ফোনের আগমনে এই প্রভাব আরও বেড়েছে। এতটাই যে, অনেক সময় অল্পবয়সী ছেলেমেয়েরা সিনেমার প্রভাবে খারাপ পথে চলে যায়। এমনকি ছোট শিশুরাও সিনেমার অশ্লীল দৃশ্য, আইটেম গান, যৌন দৃশ্যের দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে। এসব নিয়ে তাদের কোনও ধারণা না থাকলেও তারা সেগুলো নকল করছে বলে মনোবিদরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাই শিশুদের upbringing-এর ব্যাপারে বাবা-মায়েদের সতর্ক থাকতে হবে।
আজকাল ছোটরা বয়সের চেয়ে বড়দের মতো কাজ করলে বড়রা খুশি হন। বিশেষ করে সিনেমার গান গাওয়া, নাচ দেখে বাবা-মায়েরা আনন্দ পান। এমনকি তারা মনে করেন এটা তাদের সন্তানদের জন্য উপকারী। কিন্তু এটা সত্য নয় বলে মনোবিদরা জানিয়েছেন।
সিনেমার আইটেম গান, অশ্লীল অ্যালবাম গান শিশুদের উপর খারাপ প্রভাব ফেলে বলে শিশু মনোবিদরা সতর্ক করেছেন। বাড়িতে, পার্টিতে যে গান বাজে, তা শিশুদের আকর্ষণ করে। তাই তারা সেগুলো নকল করে। গানের অর্থ না বুঝলেও তারা অশ্লীল শব্দ মনে রাখে, অথবা অশ্লীল ভঙ্গিতে নাচ করার সম্ভাবনা থাকে।
‘একবার আমি একটি ডান্স রিয়েলিটি শো-এর অডিশনে গিয়েছিলাম। সেখানে সাত বছরের একটি মেয়ের অদ্ভুত আচরণ দেখেছি। সে দুটো কাগজের বল বানিয়ে তার পোশাকের ভেতর রেখেছিল। এত ছোট বয়সে মেয়েটির এমন কাজ দেখে আমি অবাক হয়েছিলাম’ - বললেন মুম্বাইয়ের একজন শিশু মনোবিদ এবং প্যারেন্টিং কাউন্সিলর।
কিছু সিনেমার গান শুনতে ভালো লাগলেও, কথাগুলো খুবই খারাপ। অতিরিক্ত হিংস্রতা, মাদক, যৌনতা, অশ্লীল দৃশ্য শিশুরা হয়তো বুঝতে পারে না। কিন্তু এসব নিয়ে জানার আগ্রহ তাদের থাকে। গানের কথার অর্থ কিংবা দৃশ্যে কেন এমনটা করা হয়েছে, তা তারা বাবা-মাকে জিজ্ঞেস করে।
এমন প্রশ্নে বাবা-মা অμήনায় পড়ে সঠিক উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান। ফলে শিশুদের জানার আগ্রহ আরও বাড়ে। তারা বন্ধুদের কাছে অথবা পরিচিতদের কাছে এসব জানতে চায়। এতে অনर्थ হতে পারে বলে শিশু মনোবিদরা সতর্ক করেছেন।
আজকের প্রতিযোগিতার যুগে শিশুরা যেন তাল মিলিয়ে চলে, তা বাবা-মা চান। তাই শিশুরা সিনেমার আইটেম গানে নাচ করলে তারা বাধা দেন না। কিন্তু এতে শিশুদের মানসিকতা বদলে যায়। এটা করা ভুল নয়, এমন ধারণা তাদের মধ্যে তৈরি হয়। এই অভ্যাস ভবিষ্যতেও থাকে। তখন বাবা-মায়ের কাছে এটা ভুল মনে হয়। তাই ছোটবেলায় শিশুদের এমনটা করতে না দিলে ভবিষ্যতে দুঃখ পেতে হয় না বলে শিশু মনোবিদরা পরামর্শ দেন।
শিশুদের বেড়ে ওঠার সময়টাকে সহজ ভাববেন না বলে বাবা-মায়েদের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এই সময়েই শিশুদের সৃজনশীলতা, সম্ভাবনা প্রকাশ পায়। তাই তাদের সঠিক পথনির্দেশনা দরকার। কোন পথে গেলে ভালো হবে, তা বাবা-মাকেই বলতে হবে।
আজকের অনলাইন যুগে শিশুদের উপর বাবা-মায়ের নজরদারি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তারা ফোন, টিভিতে কি দেখছে, তা লক্ষ্য রাখতে হবে। যদি শিশুরা কোনও খারাপ কন্টেন্টে আগ্রহ দেখায়, তাহলে তাদের সঠিক পথ দেখাতে হবে। কোনটা ভালো, কোনটা খারাপ তা বুঝিয়ে বলতে হবে। এতে শিশুরা আবার খারাপের প্রতি আকৃষ্ট হবে না।
শিশুরা যেন মোবাইলে আসক্ত না হয়, সেই দায়িত্বও বাবা-মায়ের। অনেক বাবা-মা শিশুদের বিরক্ত না করার জন্য তাদের হাতে মোবাইল ফোন তুলে দেন। কিন্তু এর ভবিষ্যতে খারাপ প্রভাব পড়ে। তাই শিশুদের সাথে সময় কাটানোর জন্য বাবা-মাকে সময় বের করতে হবে। তাদের সাথে খেলাধুলা, পড়াশোনা করলে তারা মোবাইল ফোনের আসক্তি থেকে মুক্তি পেতে পারে বলে শিশু মনোবিদরা বলছেন।