
শসা হলো প্রাকৃতিকভাবেই জলসমৃদ্ধ, কম ক্যালোরি এবং উচ্চ ফাইবারযুক্ত একটি সবজি। এটি শরীরকে সতেজ রাখার পাশাপাশি অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতাও প্রদান করে। তবে, প্রতিটি খাবারের ক্ষেত্রেই পরিমাণের দিকে খেয়াল রাখা জরুরি। প্রতিদিন শসা খাওয়া কি ভালো? এর উপকারিতা এবং অপকারিতা কি কি? আসুন বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
শসার পুষ্টিগুণ:
জল – ৯৬%
ক্যালোরি – ১৫ ক্যালোরি
ফাইবার – ০.৫ গ্রাম
কার্বোহাইড্রেট – ৩.৬ গ্রাম
পটাশিয়াম – ১৪৭ মিলিগ্রাম
ম্যাগনেসিয়াম – ১৩ মিলিগ্রাম
ভিটামিন সি – ২.৮ মিলিগ্রাম
ভিটামিন কে – ১৬.৪ মিলিগ্রাম
প্রতিদিন শসা খাওয়ার উপকারিতা:
১. পানিশূন্যতা দূর করে:
শসায় ৯৬% জল থাকে। যারা পর্যাপ্ত পানি পান করেন না, তাদের জন্য এটি খুবই উপকারী। যাদের পানি পান করতে ইচ্ছা করে না, তাদের জন্য শসা একটি ভালো বিকল্প।
২. শরীর ঠান্ডা রাখে:
শসা প্রাকৃতিকভাবেই ঠান্ডা। গরমকালে নিয়মিত শসা খেলে শরীর ঠান্ডা থাকে এবং তৃষ্ণাও কমে।
৩. হজমশক্তি বৃদ্ধি করে:
শসার ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। নিয়মিত শসা খেলে হজমশক্তি ভালো থাকে।
৪. ওজন কমাতে সাহায্য করে:
শসায় ক্যালোরির পরিমাণ কম। এটি শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কমাতে সাহায্য করে। পেট ভরা রাখে বলে, অতিরিক্ত খাওয়ার ইচ্ছা কমে।
৫. ত্বক এবং চুলের জন্য উপকারী:
শসায় প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। এটি ব্রণ এবং তৈলাক্ত ত্বকের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়। চুলের বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় কিছু পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে।
৬. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে:
শসায় থাকা পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। হৃদপিণ্ডের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে। রক্তনালী নমনীয় করে এবং রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে।
প্রতিদিন শসা খাওয়ার অপকারিতা:
১. অতিরিক্ত পানি – শসায় প্রচুর পরিমাণে পানি থাকায় ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ হতে পারে।
২. ঠান্ডা – শরীর ঠান্ডা করে বলে, সর্দি, কাশি, গলা ব্যথা, সাইনাস ইত্যাদি সমস্যা থাকলে বেশি খাওয়া উচিত নয়।
৩. কিডনির রোগী - শসায় পটাশিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকায়, কিডনির সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাওয়া উচিত।
৪. অ্যালার্জি – কিছু লোকের শসা খেলে অ্যালার্জি হতে পারে।
কখন শসা খাওয়া উচিত?
সকাল - শরীরকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।
দুপুর - হজমে সাহায্য করে।
বিকেল - হালকা খাবার হিসেবে খাওয়া যেতে পারে।
রাত - বেশি খাওয়া উচিত নয়।
শসা খাওয়ার কিছু উপায়:
কাঁচা খাওয়া যেতে পারে।
সালাদ - টমেটো, পেঁয়াজ, পুদিনা পাতার সাথে সালাদ বানিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
জুস - আদা, পুদিনা পাতার সাথে জুস বানিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
রায়তা - দইয়ের সাথে মিশিয়ে রায়তা বানিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
প্রতিদিন শসা খাওয়া কি ঠিক?
প্রতিদিন শসা খাওয়া স্বাস্থ্যকর। তবে, পরিমাণে খেয়াল রাখতে হবে। দিনে ১-২ টি শসা যথেষ্ট। কিডনির সমস্যা বা অ্যালার্জি থাকলে এড়িয়ে চলা উচিত।