
আমাদের মনের ইচ্ছা, আনন্দ, দুঃখ বা ভালোবাসার কথা প্রকাশের উপায় আছে ভাষা। কিন্তু পশু-পাখিদের ক্ষেত্রে বিষয়টা আলাদা, তারা ডাকতে পারলেও তাদের মনের ভাব বোঝা আমাদের কাছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
তবে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রযুক্তি যেভাবে এগিয়েছে, বিশ্বে AI এর সুবাদে এখন পশুপাখির ভাষাও মানুষ বুঝতে পারবে। এ বিষয়ে উদ্যোগী লন্ডন স্কুল অফ ইকনমিকস অ্যান্ড পলিটিক্যাল সায়েন্স (LSE) বিশ্বে প্রথমবারের মতো এমন একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণা কেন্দ্র গড়ে তুলেছে, যার উদ্দেশ্য—না-মানুষদের সঙ্গে মানুষের ভাব বিনিময়ের সুযোগ করে দেওয়া।
তবে পোষ্যের সঙ্গে ভাব বিনিময় কি সত্যি হবে?
বর্তমানে পোষ্যদের কথা বোঝার জন্য pet translator collar আছে। তবে এর কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। এই কলার অনেকাংশেই পোষ্যের আচরণের ভাসাভাসা বা ভুল ব্যাখ্যা দেয়। প্রফেসর বার্চের মতে, এই প্রযুক্তিগুলি অনেক সময় পোষ্যের মানসিক ও শারীরিক ক্ষতির কারণ হতে পারে। সে কারণেই নিখুঁত হওয়ার চেষ্টায় আরও গভীর ও বিশ্লেষিত গবেষণার প্রয়োজন, যা AI প্রযুক্তির দ্বারা সম্ভব হতে পারে। সংবাদমাধ্যম ‘গার্ডিয়ান’-এ এর রিপোর্টও প্রকাশ করা হয়েছে।
তবে কীভাবে হবে এই গবেষণা? কী করবেন গবেষকরা?
সেন্টার ফর অ্যানিম্যাল সেন্টিয়েন্স-এর অধিকর্তা প্রফেসন জোনাথন বার্চ বলছেন, ‘‘আমাদের পোষ্যরা আমাদের সঙ্গী। তাই অনেক সময়েই আমাদের ইচ্ছে হয়, ওরাও মানুষের মতো কথা বলুক, আনন্দ কিংবা দুঃখের কথা জানাক। এআই প্রযুক্তি এবং গবেষকদের সাহায্য নিয়ে আমরা ওদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার চেষ্টা করব’’। যে কারণে বিশ্বের প্রথম না-মানুষদের ভাষা বোঝার বৈজ্ঞানিক গবেষণাকেন্দ্র তৈরী করা হয়েছে। গবেষণার যাবতীয় প্রস্তুতি শেষ। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে সেখানে পুরোদমে গবেষণা শুরু হবে, আর যেখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI)।
এই গবেষণায় যে কোনও পশুপাখিরই আচরণগত বৈশিষ্ট্য জরিপ করে ভাষা উদ্ধার সম্ভব করতে পারে এআই প্রযুক্তি। আচরণগত বৈশিষ্ট্যের অর্থোদ্ধারের জন্য এআই ছাড়াও আরও সাহায্য করবেন স্নায়ুবিজ্ঞানী, দর্শন-তাত্ত্বিক, পশুরোগ চিকিৎসক, আচরণবিধি সংক্রান্ত বিষয়ের গবেষক এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের গবেষকেরা। তৈরী করা হবে নানারকম যন্ত্রপাতি, যার দ্বায়ে কুকর-বিড়াল থেকে শুরু করে পোকামাকড়, মাছ, কাঁকড়া, সাপেরও শরীরি ভাষাকে কথায় পরিণত করার চেষ্টা করা হবে।