লেখাপড়ায় মন বসবেই! মানসিক বিকাশেও সহায়ক, কিছু প্রশ্ন নিয়মিত করুন আপনার সন্তানকে

Published : May 26, 2025, 02:40 PM IST
This food can help to develop your child brain health

সংক্ষিপ্ত

বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রতিদিন মায়ের সঙ্গে সন্তানের গঠনমূলক ও ও বন্ধুর মত আচরণ ও সময় কাটানো তাদের আত্মবিশ্বাস, আবেগ নিয়ন্ত্রণ ও সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

আজকাল অনেক অভিভাবকদেরই অভিযোগ বাচ্চারা স্কুল যেতে চায় না। মোবাইল, ল্যাপটপ বা টিভি থেকে চোখ সরানো যায় না যে পড়তে বসানো যাবে। বেশিরভাগ বাড়িতেই এই দৃশ্যে চিন্তিত মা-বাবা। তবে কখনও ভেবে দেখেছেন, সন্তানের অতিরিক্ত জেদ বা পড়াশোনায় অমনোযোগী হওয়ার জন্য অভিভাবকরাই দায়ী নন তো?

আজকের দিনে অভিভাবকরা চাইলেও সন্তানের সঙ্গে সময় কাটাতে পারেন না ব্যস্ত জীবনের চাপে। অফিস, বাড়ির কাজ কিংবা অন্যান্য দায়িত্ব সামলাতে গিয়ে সন্তানের আবেগ ও অনুভূতির দিকে নজর দেওয়া অনেক ক্ষেত্রেই উপেক্ষিত হয়। পেরেন্টিং কনসালট্যান্ট পারমিতা মুখোপাধ্যায়ের মতে, বেশির ভাগ বাড়ির ছবিটাই এ রকম। এর জন্য বাবা-মায়েরাই দায়ী অনেক ক্ষেত্রেই। সন্তান স্কুল থেকে ফিরলে ক’জন বাবা বা মা জিজ্ঞাসা করেন, আজ স্কুলের সময়টা কেমন কাটল? সারা দিন সে কী কী করেছে? সন্তানের কেন মনখারাপ বা তার দৈনন্দিন জীবনে কী হচ্ছে? এই এসব কথাবার্তা আলোচনায় গুরুত্বই দেন না।

বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রতিদিন মায়ের সঙ্গে সন্তানের গঠনমূলক ও ও বন্ধুর মত আচরণ ও সময় কাটানো তাদের আত্মবিশ্বাস, আবেগ নিয়ন্ত্রণ ও সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

কী কী জানতে চাইবেন সন্তানের কাছে?

১। নম্বর নয়, অনুভূতির খবর নিন

স্কুল থেকে ফিরেই সন্তানের হাত থেকে খাতা কেড়ে নিয়ে নম্বর দেখা বা পরীক্ষার ফল জিজ্ঞাসা করার পরিবর্তে আগে তার দিন কেমন কাটল, তা জানতে চাওয়াই শ্রেয়। “আজ স্কুল কেমন গেল?”— এই এক সরল প্রশ্ন সন্তানের মনে তৈরি করতে পারে এক বিশ্বাসের জগৎ। পড়াশোনার চাপ বা স্কুল নিয়ে ভয় নয়, তৈরি হবে আগ্রহ ও ইতিবাচক মনোভাব।

২। আনন্দের মুহূর্তগুলোয় আপনিও যোগ দিন

প্রতিদিন অন্তত একটি ঘটনা জানতে চান যা তাকে আনন্দ দিয়েছে। সেটা হতে পারে টিফিন ভাগ করে খাওয়া, বন্ধুর সঙ্গে খেলার সময় কিংবা শিক্ষকের প্রশংসা পাওয়া। এর মাধ্যমে সন্তানের ইতিবাচক অভিজ্ঞতাগুলি গুরুত্ব পাবে, এবং সে বুঝবে যে তার ছোটখাটো সুখগুলোও বাবা-মায়ের কাছে মূল্যবান।

৩। মন খারাপের খোঁজ নিন

সন্তান মনমরা থাকলে “কী হয়েছে?” জিজ্ঞাসা করাটা যথেষ্ট নয়। তাকে এমন পরিবেশ দিতে হবে যাতে সে নিজের দুঃখ-হতাশা প্রকাশ করতে পারে। প্রথমে না বললেও, ধীরে ধীরে এই খোলামেলা আলোচনার মাধ্যমে তৈরি হবে বিশ্বাসের বন্ধন। এতে ভবিষ্যতে প্রতিকূল পরিস্থিতি সামলানো সহজ হবে তার জন্য।

৪। সহমর্মিতা শেখান ছোট থেকেই

প্রতিদিন অন্তত একটি ভালো কাজ করার কথা বলুন। সহপাঠীকে সাহায্য করা, জিনিস ভাগ করে নেওয়া কিংবা কারও পাশে দাঁড়ানো— এসব ছোট ছোট অভ্যাস ভবিষ্যতের জন্য তৈরি করবে এক দায়িত্ববান, সহানুভূতিশীল মানুষ। স্বার্থপরতা, হিংসা কিংবা একাকীত্বের মতো প্রবণতা রুখতে পারে এই অভ্যেস।

৫। কথা বলা ও একসঙ্গে সময় কাটান

কোনও বই, খেলনা, বিজ্ঞানের বিষয়ে সহজ আলোচনা, প্রশ্নোত্তর অথবা কোনও একটি একসঙ্গে কাজ— যেমন পছন্দের খাবার রান্না বা খেলা— এগুলোর মাধ্যমে সন্তানের চিন্তাশক্তি, ভাষা ও আবেগের বিকাশ ঘটে। কঠিন শাসনের পথে না গিয়ে ভালো সময় কাটানোর মধ্য দিয়েই শেখানো সম্ভব জীবনের গুরুত্বপূর্ণ পাঠ।

সারাংশ সন্তানের মানসিক স্বাস্থ্য শুধু স্কুল বা পড়াশোনার উপর নির্ভর করে না, বরং তার আশপাশের পরিবেশ, বাবা-মায়ের সঙ্গে সম্পর্ক এবং পারস্পরিক কথাবার্তাই তার ভবিষ্যতের ভিত্তি তৈরি করে। বাবা-মায়ের ভূমিকা বন্ধুর মতো পাশে থেকে শোনা ও বোঝার মধ্যেই নিহিত সন্তানের সুন্দর ভবিষ্যৎ।

PREV
Read more Articles on
click me!

Recommended Stories

নবদ্বীপে মহাপ্রভুর ভোগ দর্শন, কিভাবে পাবেন এই ভোগ জানুন বিস্তারিত
সৌন্দর্য ও সুগন্ধের মেলবন্ধন! এই ৫টি গাছ বাড়িকে বানাবে পারফিউম গার্ডেন