
রাতে ঘুমের মাঝে হঠাৎ পায়ের শিরায় টান ধরা, ঘন ঘন পায়ে ঝিঁ ঝিঁ ধরা - এই সমস্যাগুলির সম্মুখীন কি আপনাকেও হতে হয়েছে? তবে অবহেলা না করে, চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন, প্রয়োজনে কিছু বিশেষ পরীক্ষাও করে দেখুন শরীরে অন্য কোন রোগ বাসা বাঁধছে কিনা। শুধুমাত্র জলশূন্যতা, ক্লান্তি বা একভাবে দাঁড়িয়ে বা বসে থাকার ফলে এই সমস্যাগুলো হয় না, এর সাথে গভীর কোনো স্নায়ুতন্ত্র বা পেশির সমস্যাও জড়িয়ে থাকতে পারে।
যে সমস্যাটির কারণে রাতে ঘুমের মাঝে পায়ে টান ধরে তার নাম ভ্যারিকোজ শিরা। আসলে রাতে যখন আমরা ঘুমাই তখন শরীরের সমস্ত শিরা-উপশিরা ও পেশীগুলি বিশ্রাম পর্যায় থাকে। এই অবস্থায় পা থেকে মাথার দিকে রক্ত চলাচল সঠিকভাবে হতে পারে না তাই ওই ভেরি গুড শিরায় কোন একটি অংশের রক্তের চাপ বেশি পড়লে তখন পায়ে টান ধরে অথবা অসার হয়ে গিয়ে ঝিঁ ঝিঁ করে ওঠে।
ঘন ঘন এমন সমস্যা হলে কী করণীয় ও কী করণীয় নয়।
১. রাতের শোয়ার সময় তার সামান্য উঁচুতে রেখে শোয়ার চেষ্টা করুন, প্রয়োজনে পায়ের নিচে উঁচু বালিশ নিন। ২. রাতে শোয়ার আগে হালকা ব্যায়াম করুন। অথবা অন্তত পা কিছুক্ষণের জন্য হলেও উপর দিকে তুলে রাখুন, এতে রক্ত চলাচল ভালো হবে পায়ে। ৩. দৈনিক পর্যাপ্ত জল খান এবং শরীরে ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখুন। ৪. একইভাবে দীর্ঘক্ষণ বসে দাঁড়িয়ে বা শুয়ে থাকবেন না। শরীরের ভালোভাবে রক্ত চলাচল হতে দিন।
যদি ঘনঘন পায়ের শিরায় টান ধরা, পা ঝিঁ ঝিঁ করা, পায়ের শিরা ফুলে যাওয়া, সকালে ঘুম থেকে উঠে হাঁটতে না পারা - এই ধরনের সমস্যা হতে থাকে, এমনকি উপরোক্ত কাজগুলি করলেও তা না কমে, তবে যে রোগ গুলির ইঙ্গিত মিলে,
১. স্নায়বিক ব্যাধি ২. পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি ৩. ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্যহীনতা ৪. থাইরয়েড বা ডায়াবেটিসের সমস্যা
কিছু পরীক্ষা বা সমস্যাগুলি বুঝতে আপনাকে সাহায্য করবে -
১. রক্ত পরীক্ষা : ইলেকট্রোলাইট প্যানেল এবং গ্লুকোজ পরীক্ষা, যা শরীরে সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়ামের মাত্রা বোঝাবে। ফলে এদের অভাবে পেশিতে খিঁচুনি বা ভ্যারিকোজ শিরার সমস্যা হচ্ছে কিনা তা বোঝাবে।
২. স্নায়ু পরিবাহিতা অধ্যয়ন : স্নায়ু সংকেত পাঠানোর ক্ষমতা পরিমাপ করতে পারে এই পরীক্ষাটি। ফলে আপনি বুঝতে পারবেন স্নায়ুর কোন ক্ষতি হয়েছে কিনা।
৩. ডায়াবেটিস এবং থাইরয়েড পরীক্ষা : ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে স্নায়ুর ক্ষতি থাকলে তাকে পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি বলে। আবার থাইরয়েডের সমস্যাতেও পেশীগুলিকে প্রভাবিত করতে পারে, ফলে থাইরয়েড না ডায়াবেটিস হয়েছে, হয়েছে সেটা আপনি বুঝতে পারবেন।
সারাংশ শিরায় ঘন ঘন ঝিঁ ঝিঁ ধরা, পায়ে টান ধরা, এই লক্ষণগুলি কেবলমাত্র জল শূন্যতা বা একভাবে বসে দাঁড়িয়ে থাকার ফল নয়। কোন গভীর স্নায়ু বা পেশির সাথে জড়িত সমস্যার লক্ষণ হতে পারে, শীঘ্রই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।