
ঝড় বা ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে শহরের রাস্তায় গাছ পড়ে যাওয়া এখন প্রায় নিয়মিত ঘটনা। অথচ লক্ষ করলে দেখা যাবে, তুলনামূলকভাবে গ্রামে ঝডড়ের তীব্রতা বেশি হলেও সেখানে গাছপালার ক্ষতি হয় অনেক। গ্রামে যেখানে ঘরবাড়ির ভাঙচুরও হয়, সেখানে গাছ থাকে দাঁড়িয়ে, আর শহরে সামান্য ঝড়েই গাছ পড়ে রাস্তায়! এর পিছনে রয়েছে কিছু কারণ।
গ্রামের চেয়ে শহুরে গাছ দুর্বল হয়, কিন্তু কেন?
* শহরের ফুটপাথ ও রাস্তাগুলির পাশ কংক্রিট বা সিমেন্ট দিয়ে বাঁধানো থাকে। ফলে সেখানে রোপিত গাছের শিকড় মাটির গভীরে প্রবেশ করতে পারে না বা বেশি দূর ছড়াতে পারে না। ফলে গাছের গোড়া শক্ত করে মাটিকে আঁকড়ে ধরতে পারেনা, ঝরে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও বেশ।
* মাটির উপরিভাগ কংক্রিট ঢাকা, ফলে বৃষ্টির জল মাটির গভীরে পৌঁছতে পারে না। গাছ পর্যাপ্ত জল ও খনিজ পায় না, যা তাদের দুর্বল করে তোলে। শুকনো মাটিতে গাছের বেড়ে ওঠা যেমন বাধা পায়, তেমনই ঝড় বৃষ্টির চাপে দাঁড়িয়ে থাকাও কঠিন হয়।
* শহরাঞ্চলে সৌন্দর্য ও দ্রুত বেড়ে ওঠার উদ্দেশ্যে প্রায়শই এক প্রজাতির গাছ লাগানো হয়, যেমন গুলমোহর বা কৃষ্ণচূড়া। কিন্তু এদের কাঠ নরম এবং শিকড় ছোট হয়। উপরন্তু, এক সঙ্গে একই প্রজাতির গাছ থাকলে রোগ বা কীটপতঙ্গের আক্রমণে তারা একসঙ্গে দুর্বল হয়ে পড়ে।
* গুলমোহর জাতীয় গাছে ফাঁপা ও নরম কাঠে উইপোকার উপদ্রব বেশি হয়। ফলে গাছের ভিতরের কাঠ ফাঁপা হয়ে যায়, এবং ঝড়ের সময় সে গাছ সহজেই ভেঙে পড়ে।
শহুরে গাছ বাতাসের চাপ সহ্য করতে পারে না
বিশেষজ্ঞদের মতে, গুলমোহরের মতো গাছের প্রতি উইপোকা বেশি আকৃষ্ট হয়। উইপোকা এগুলোকে ফাঁপা করে। ঝড়ে এই ধরনের গাছ খুব দ্রুত পড়ে যায়। এই কারণেই রাস্তার মাঝখানে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বৃক্ষরোপণ করা উচিত। প্রায়শই এমন গাছ লাগানো হয়, যা বাতাসের চাপ সহ্য করতে পারে না। প্রায়শই, যদি মিশ্র জাতের গাছ একসঙ্গে রোপণ করা হয়, তাহলে তাদের পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।