
Quilt Making Process: শীতকালে লেপ-তোষক বানানোর ধুম পড়ে। লেপ তোষকের দোকানে ক্রেতাদের ভিড় ও তোরজোর থাকায় ব্যবসায়ীদেরও পোয়াবারো। তারা মৌসুমী লাভের এই সুযোগটাকে হাতছাড়া করতে চাইছেন না। শীতের আসার আগেই লেপ ও তোষকের দোকান ছেয়ে যায় লাল আভায়! কারণ লেপ মানেই যেন তুলায় মোড়ানো লাল কাপড়! প্রশ্ন তো জাগতেই পারে, বেশিরভাগ লেপে কেন লাল কাপড় ব্যবহার করা হয়? একসময় মুর্শিদাবাদের একেবারে নিজস্ব এই শিল্পের নাম ছিল সর্বত্র। লম্বা আঁশের কার্পাস তুলাকে বীজ ছাড়িয়ে লাল রঙ্গে চুবিয়ে শুকিয়ে ভরা হতো মোলায়েম সিল্ক এবং মখমলের মাঝখানে। সেই মখমলের রঙ ছিল লাল। সুগন্ধের জন্যে দেওয়া হতো আতর। এখন অবশ্য উচ্চমূল্যের কারণে মখমলের কাপড় ব্যবহার হয় না।
বাংলা, বিহার, ওড়িশা-সহ অভিবক্ত বাংলার প্রথম নবাব মুর্শিদকুলি খানের আমল থেকেই রীতি অনুযায়ী লাল মখমলের কাপড় ব্যবহার করে লেপ সেলাই করা হত। এরপর মুর্শিদকুলি খানের মেয়ের জামাই নবাব সুজাউদ্দিন মখমলের পরিবর্তে সিল্ক কাপড় ব্যবহার শুরু করেন। তবে রঙের কোনও পরিবর্তন আসেনি। তবে মখমল ও সিল্কের কাপড়ের মূল্য জনসাধারণের হাতের নাগালে না থাকার কারণে, পরবর্তীতে সাধারণ কাপড় ব্যবহারের চল শুরু হয়। তবে তখনও কাপড়ের রঙ লালই থেকে যায়।
তবে অনেকে আবার মনে করেন ঐতিহ্য মেনে নয়, বরং ব্যবসার খাতিরে ক্রেতার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্যই লাল কাপড়ে মুড়ে রাখা হয় লেপকে। তাছাড়া লেপ তো আর নিয়মিত ধোয়া সম্ভব নয়। লাল রং খুব সহজে ধুলো, ময়লা বা যেকোনও দাগকে লুকিয়ে ফেলে। ফলে লেপ দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষাকৃত পরিষ্কার দেখায়। এটি একটি বড় ব্যবহারিক সুবিধা। তাই ব্যবসায়িক দিক থেকেও লাল কাপড় ব্যবহার করা সুবিধাজনক ছিল। আর এই সব কারণেই লাল লেপ আমাদের শীতকালীন ঐতিহ্যের অংশ হয়ে উঠেছে।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।