মা দূর্গা যে অসুরবিনাশিনী তা সবাইয়ের জানা। মা দূর্গার পায়ের কাছেই থাকেন মহিশাসূর। আর তাই থেকেই মা অসুরবিনাশিনী। মায়ের অসুরবিনাশিনী হয়েওঠার পেছনে আছে নানান কাহিনী। মায়ের অসুরবিনাশিনী হওয়ার পেছনে যে কাহিনিটা আছে তা হল। অসুরদের ক্ষমতার কাছে ভগবানরা বারবার হার মেনে যাচ্ছিল যার ফলে স্বর্গ ক্রমশ অসুরদের আওতায় চলে যাচ্ছিল। সেইটা আটকাতেই সব ভগবানরা একজোট হয়ে সৃষ্টি করেছিলেন দশভূজা মা দূর্গাকে। কারণ ব্রহ্মার বর অনুসারে মাতৃরূপী দেবীর কাছেই হার মানবে মহিষাসুর। তাই সব দেবতারা এক সঙ্গে মিলে সৃষ্টি করে মাতৃরূপী মা দূর্গাকে। পৌরাণিক নানা কাহিনি থেকে জানা যায়, অনলের তেজে সৃষ্টি হয় মায়ের ত্রিনয়ন। ইন্দ্রের তেজে কটিদেশ। শিবের তেজ সৃষ্টি হয় মায়ের মুখমন্ডল। যমের তেজ থেকে কেশ। বিষ্ণুর তেজ থেকে জোড়া বাহু। চন্দ্রের তেজে স্তন। ইন্দ্রের তেজে কটিদেশ। বরুণ সৃষ্টি করেছিলেন জঙ্ঘা ও উরু। পা সৃষ্টি করেছিলেন ব্রহ্মা। সূর্য সৃষ্টি করেছিলেন পায়ের আঙুল। এছাড়াও বসুগণের তেজে হাতের আঙুল। কুবেরের তেজে নাক। দক্ষ ও প্রজাপতির তেজে দন্তসমূহ। পা সৃষ্টি করেছিলেন ব্রহ্মা। এছাড়াও অন্যান্য দেবতারা অন্যান্য সব অঙ্গ সৃষ্টি করেছিলেন।
এছাড়াও দেবীকে অস্ত্র দ্বারা সজ্জিত করার জন্য এক এক জন দেবতা তাদের থেকে এক একটি অস্ত্র দিয়েছিলেন। যেমন শিব দিয়েছিলেন ত্রিশূল দিয়েছিলেন। দেবরাজ ইন্দ্র দিয়েছিলেন ঐরাবত, ঘন্টা আর বজ্র। হিমালয় দিয়েছিলেন মায়ের বাহন সিংহ। বিষ্ণু দিয়েছিলেন চক্র। পবনদেব ধনু। সমুদ্র দিয়েছিলেন শঙ্খ এবং অগ্নিশক্তি। যম কালদন্ড। প্রজাপতি ব্রহ্মা অক্ষমালা ও কমন্ডলু। দিব্য মকুট। এছাড়াও অন্য দেবতারা আরও নানা অস্ত্রে দেবীকে সাজিয়ে তুলেছিলেন। এই রূপেই দেবী মহিষাসুর বধ করেন। সেই কারণেই দেবী এই রূপে মর্তে পুজিত হন।
আশ্বিন মাসের দেবীর এই পুজো অবশ্য অকালবোধন নামে পরিচিত। কারণ এই সময় রাজা রামচন্দ্র রাবণ -কে যুদ্ধে হরানোর জন্য এই পুজো শুরু করেছিলেন। পরে এই সময় নাকি চাষিদের ফসল ভালো হত আর তার জন্যই তারা মায়ের পুজো করতে শুরু করেন। যা শুরু হয়ে যায় মহালয়ার দিন চন্ডীপাঠের মধ্যে দিয়েই।