কলেজ বন্ধেও নেই ছুটি, কলেজের আড্ডা থেকে ক্লাস সবটাই চলছে অনলাইনে

  • এও যেন কিছুদিন আগে পরা গরমের ছুটি
  • তবে এই ছুটিতে মজা নেই আছে শুধু অজানা ভয়
  • সরকারের নির্দেশ অনুসারে এখন লকডাউন সর্বত্র
  • ইতালিরর মত সাজানো শহরটা আজ এক মৃত্যু পুরী

deblina dey | Published : Mar 26, 2020 6:34 AM IST / Updated: Mar 29 2020, 09:09 PM IST

পৌলোমী নাথ-  ছোট থেকেই আমার কাছে গরমের ছুটি মানে নিজের পছন্দের হবিগুলোতে মন দেওয়া। এও যেন কিছুদিন আগে পরে যাওয়া এক গরমের ছুটিরই মতন, তবে এই গরমের ছুটিতে মজা নেই আছে শুধুই এক অজানা ভয়। কলকাতার একটি প্রসিদ্ধ বেসরকারি কলেজের মাস্টার্সের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী আমি ফলে কলকাতাতেই থাকতে হয়। গত ১৩ মার্চ শুক্রবার বাড়িতে এসেছিলাম কিছু কাজের জন্য তবে আবার শনিবারেই ফিরে যাই, সোমবারে কলেজ যেতে হবে বলে। কলকাতায় সেদিন ফিরেছিলাম ঠিকই কিন্তু সোমবারে কলেজ যাওয়াটা আর হয়নি।

আরও পড়ুন- করোনার ভয়ে 'করুনার' দশা, নিজের লকডাউন কাহিনি জানালেন এই ছাত্রী

শনিবার রাতেই কলেজ থেকে এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয় সরকারি নিয়ম মেনে ‘করোনার’ ছোবল থেকে বাঁচতে সোমবার অর্থাৎ ১৬ মার্চ থেকে বন্ধ হতে চলেছে কলেজ। তারপরেই মহাআনন্দে ব্যাগ গুছিয়ে বাড়ি ফিরে আসি। ব্যাগ গুছিয়ে এনেছিলাম ঠিকই তবে বেশ কিছু জিনিস (কিছু বই ও দরকারি জিনিস) কলকাতাতেই রেখে আসি। ভেবেছিলাম দরকার হলে ক’দিন পরে গিয়ে নিয়ে আসবো কিন্তু সেই কদিন পরটা এখনও আসেনি আর জানিনাও না কবে আসবে। কারণ সরকারের নির্দেশ অনুসারে এখন লকডাউন সর্বত্র। আবার অন্যদিকে ছুটি ছিল ৩১ শে মার্চ পর্যন্ত যা বেড়ে এখন হয়েছে ১৫ এপ্রিল, তবে দিনটা পিছিয়েও যেতে পারে। এখনও কিছুই বোঝা যাচ্ছে না।

আরও পড়ুন- করোনার বাজারে হঠাৎ যেন আমি দশভূজা, অধ্যাপিকা ঝুমুর শেয়ার করলেন তার 'লকডাউন' কাহিনি

মরক লেগেছে বিশ্বে, ইতালিরর মত সাজানো শহরটা আজ যেন এক মৃত্যু পুরীতে পরীণত হয়েছে। প্রতিদিন মৃতের সংখ্যা আর আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশই বেড়ে চলেছে। এর শেষ ঠিক কোথায় তা আমাদের কারোরই হয়তো জানা নেই। সবাই বেশ ভয়েই আছে এই পরিস্থিতি নিয়ে। ভয় একটা আছে ঠিকই তবে তার জন্য তো আর জীবন থেমে থাকে না। আর সেই কারণেই তা এগোচ্ছে সময়ের সঙ্গেই তার নিজের গতিতে। কলেজের বিশেষ উদ্যোগ আর অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যেমে অনলাইনে একটি অ্যাপের সাহায্যে ভিডিও কলের মধ্যে দিয়েই চলছে আমাদের রেগুলার ক্লাস। আর সেই সঙ্গে নিয়ম মেনে আমাদের দেওয়া হচ্ছে অ্যাটেনডেন্সও। ঘরে বসে ক্লাস করার এ এক নতুন অভিজ্ঞতা। যা পেয়ে আমরা যেমন আনন্দিত ঠিক তেমনই উৎসাহিতও। এছাড়াও পুরোদিন আমার ভালো লাগার সব জিনিস যা  এখন আর তেমন করা হয়ে ওঠেনা যেমন বই পড়া, রান্না করা আর ছবি এঁকেই সময় কেটে যাচ্ছে।
 
এসব ছাড়া মাঝে মাধ্যেই বারান্দায় গিয়ে দাঁড়াচ্ছি রাস্তায় লোক আছে কিনা দেখবার জন্য। আর সেখানেই সব থেকে অবাক করা দৃশ্য দেখাযাচ্ছে। সরকার, প্রশাসন তার যথাসাধ্য চেষ্টা করলেও সাধারণ মানুষের কোনও হেলদোলই নেই। তারা যথেচ্ছ ভাবে রাস্তা দিয়ে কোনও মাস্ক ছাড়াই ঘুরে বেড়াচ্ছে। বড় রাস্তায় গেলে পুলিশে ধরছে বলে হয়ত এখন গলিতেই দেখা মিলছে দেশের কিছু অসচেতন নাগরিকদের। আর সব শেষে সবার কাছে আমার একটাই আবেদন সবাই কিছুদিন একটু নিয়ম মেনে চলুন এতে সবারই ভালো হবে।

পৌলোমী নাথ, এম. এ মাস কমিউনিকেশন জার্নালিজম দ্বিতীয় বর্ষ, সিস্টার নিবেদিতা বিশ্ববিদ্যালয়

Share this article
click me!