
ঘুম থেকে উঠে অফিসে যেতে হবে ভাবলেই মেজাজটা বিগড়ে যায়। শুধু ছোটরা কেন ছুটির পর দিনটা কাজ করার ইচ্ছা হয় না বড়দেরও। আলস্য যেন চেপে বসে। অনেক মা-বাবাই বলেন, রবিবারের ছুটি কাটিয়ে সোমবার স্কুলে যাওয়ার সময়ে বায়না জোড়ে শিশু। সপ্তাহান্তে ছুটির মেজাজ যেন কাটতেই চায় না। কেউ শরীর খারাপের বাহানা দেয়, তো কেউ স্কুলে যাওয়ার নাম শুনলেই কান্নাকাটি শুরু করে। বকাবকি করলে জেদ আরও বাড়ে। তা হলে উপায়? সপ্তাহান্তের ছুটি আরামে কাটিয়ে বা উপভোগ করে সোমবার কাজে ফেরার কথা ভাবলেই যে আতঙ্ক হয়, তারই পোশাকি নাম ‘মনডে ব্লুজ'।
* রবিবার সন্ধ্যার পর থেকে খিটখিটে হয়ে যাওয়া। * একটুতেই কান্নাকাটি করতে শুরু করা। * অনেক সময় খাওয়াদাওয়া করতেও সমস্যা করে কেউ কেউ। * কোনও কোনও খুদে আবার শারীরিক অসুস্থতার কথা বলতে থাকে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি পেটে ব্যথার অজুহাত দেয় তারা। * সাতসকালে ঘুম থেকে উঠতে চায় না বহু খুদে। বাবা-মায়ের সঙ্গে ঘুমোতেও চায় কেউ কেউ। * কেউ কেউ আবার বলতেই শুরু করে, “আমি স্কুলে যাব না।”
মনোবিদ অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়ের মত, রবিবার রাত থেকেই তার প্রস্তুতি জরুরি। রাতে হোক বা সোমবার সকাল থেকেই যদি বাড়ির পরিবেশ অশান্ত থাকে, ঝগড়া-ঝামেলা চলতে থাকে বা শিশুর উপর চিৎকার-চেঁচামেচি করেন, তা হলে কিন্তু ওদের ভয় আর উদ্বেগ বাড়বে। বড়দেরও দেখাতে হবে, ছুটি ভাল কাটিয়ে পরদিন কাজে যাওয়ার জন্য তাঁরাও কতটা উৎসাহী। সপ্তাহের শুরুতে কেমন উদ্যম থাকা জরুরি, তা শিশুকে বোঝাতে পারলে ওরাও উৎসাহ পাবে। আর বড়রাই যদি বিমর্ষ হয়ে থাকেন, তা হলে ছোটরাও অনুরূপ আচরণ করবে।
* স্কুল যাওয়ার কথা মাথায় রেখে সপ্তাহের আর পাঁচটা দিনের মতো শিশুকে নির্দিষ্ট সময়ে শুইয়ে দিন। যে ঘরে শোওয়াবেন সেখানে মোবাইল যেন না থাকে খেয়াল রাখুন। * রবিবার সন্ধ্যায় বাড়িতে কোনও অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা না করাই ভালো। তাতে শিশু সময়মতো ঘুমোতে পারবে না। * রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে শিশুকে সঙ্গে নিয়ে স্কুলের ব্যাগ গোছান। * খুদেকে শুক্রবার থেকে বলতে থাকুন স্কুল যেতেই হবে। তবে বুঝিয়ে বলুন। বকাঝকা করবেন না। * সোমবার সকালে স্কুলের ব্যাগে শিশুর পছন্দসই টিফিন দিতে পারেন। তাতে তার মন ভালো হবে।
মনে রাখবেন, খুদে মানেই সবসময় তাকে চাপ দিয়ে কাজ করাতে চাইবেন না। তাতে হিতে বিপরীত হতে পারে। পরিবর্তে তাকে বুঝিয়ে বলুন। শাসন নয়, ভালোবাসাতেই হবে কাজ।