মাস্ক পরেই মালাবদল, লকডাউনে অভিনব বিয়ের আসর খড়গপুরে

  • লকডাউনের মাঝেই বসল বিয়ের আসর
  • কন্যাকর্তা খোদ এলাকার কাউন্সিলর
  • মাস্ক পরে মালাবদল পাত্র-পাত্রীর
  • খড়গপুরের ঘটনা
     

Tanumoy Ghoshal | Published : Apr 17, 2020 8:08 AM IST / Updated: Apr 17 2020, 01:48 PM IST

একবার বাধা পড়েছে, তাই দ্বিতীয় সুযোগটা আর হাতছাড়া করতে রাজি ছিলেন না পরিবারের লোকেরা। লকডাউনের বাজারে কন্যাকর্তা হয়ে বিয়ের যাবতীয় দায়িত্ব সামলালেন স্থানীয় কাউন্সিলরই। মাস্ক পরে মালাবদল করলেন পাত্র ও পাত্রী। শুধু তাই নয়, অনুষ্ঠানের জন্য জমানো টাকা করোনা ত্রাণে দান করে দিলেন সদ্য বিবাহিত যুবক। ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুরে। 

আরও পড়ুন: লকডাউনে ত্রাতা সরকারি হাসপাতাল, আপতকালীন পরিষেবার সুফল পেলেন যুবক

খড়গপুরের তালবাগিচা এলাকায় থাকেন সৌরভ কর্মকার। শহরের মালঞ্চ এলাকায় একটি খাবার দোকান চালান তিনি। ১৩ মার্চ বিয়ের হওয়ার কথা ছিল সৌরভের। ঝাড়গ্রাম থেকে পাত্রী সাথী পাতর ও তাঁর পরিবারের লোকেরা চলে এসেছিলেন খড়গপুরে, আত্মীয়ের বাড়িতে। কিন্তু তাল কাটল বিয়ের দিনেই। জানা গিয়েছে, সকালে আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়েন পাত্রের মা ও বৌদি। পরিস্থিতি এমনই ছিল, যে বিয়ের অনুষ্ঠান স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেন পরিবারের লোকেরা। ঠিক হয়, প্রায় এক মাস পর, ১৬ এপ্রিল বিয়ে হবে সৌরভ ও সাথীর। কী আর করবেন! পাত্রীর বাড়ি লোকের ফিরে যান ঝাড়গ্রামে। তবে যার বিয়ে হওয়ার কথা ছিল, সেই তরুণী থেকে যান খড়গপুরেই। এই যখন পরিস্থিতি, ঠিক তখনই করোনা সতর্কতায় জারি হয়ে যায় লকডাউন। এবার কী হবে? মুস্কিল আসান করে দিলেন খোদ খড়গপুর পুরসভার ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জহর পাল। 

আরও পড়ুন: সন্ধে নামতেই 'করোনা বৃষ্টি'-তে ছড়াল আতঙ্ক, পুরুলিয়ায় এই ঘটনার পিছনে আসল সত্য কী

আরও পড়ুন: লকডাউনে রাস্তায় বেরোতেই বিপদ, পরিযায়ী শ্রমিকদের উদ্ধার করল পুলিশ

বৃহস্পতিবার পূর্ব নির্ধারিত দিনেই বিয়ে আসর বসল পাত্রের বাড়িতে। কন্যা কর্তা হয়ে যাবতীয় দায়িত্ব পালন করলেন কাউন্সিলর। স্বাস্থ্য বিধি মেনে নমো নমো করে হল আচার-অনুষ্ঠান। বস্তুত, মালাবদলের সময়েও মাস্ক পরেছিলেন পাত্র ও পাত্রী। প্রীতিভোজের তো প্রশ্নই নেই। করোনা সতর্কতায় ঝাড়গ্রাম থেকে এসে বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেননি পাত্রীর বাড়ির লোকেরাও। কারণ, পড়শিরা সাফ জানিয়ে দেন, বিয়ের অনুষ্ঠানে গেলে লকডাউন শেষ না হওয়া পর্যন্ত ফেরা যাবে না! কিন্তু তাহলে তো চাষাবাদ লাঠে উঠবে! অতএব আর ঝুঁকি নেননি কনেপক্ষের লোকেরা।   

জানা গিয়েছে, বিয়ের জন্য ৩১ হাজার টাকা জমানো ছিল পাত্রের। কিন্তু অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে কার্যত কোনও খরচই হয়নি। জমানোর টাকার পুরোটাই স্থানীয় একটি সংগঠনকে দান করে দিয়েছেন তিনি। সেই টাকা লকডাউনের বাজারে দুঃস্থ মানুষদের খাওয়ানোর জন্য খরচ করা হবে। 

Share this article
click me!