IPL Final 2025: হাইভোল্টেজ লড়াই, যেখানে মুখোমুখি দুই যুযুধান প্রতিপক্ষ (ipl final teams 2025)। মঙ্গলবার, আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিশ্বের অন্যতম মেগা টি-২০ ক্রিকেট লিগ আইপিএল-এর ফাইনালে মুখোমুখি হতে চলেছে পাঞ্জাব কিংস বনাম রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (Punjab Kings vs Royal Challengers Bangalore)। নিঃসন্দেহে টানটান উত্তেজনার ক্রিকেট অপেক্ষা করে রয়েছে। বলা চলে, আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। তারপরেই যেন ক্রিকেটের মহারণ অনুষ্ঠিত হবে। কার্যত, ২২ গজে অপেক্ষা করে রয়েছে ধুন্ধুমার লড়াই (royal challengers bengaluru vs punjab kings)।
প্রসঙ্গত, এখনও অবধি একবারও আইপিএল ট্রফি জেতেনি বেঙ্গালুরু এবং পাঞ্জাব। ফলে, এই বছর যে দলই জিতুক, তারাই হবে আইপিএল-এর ইতিহাসে নতুন চ্যাম্পিয়ন। এখন সেই ইতিহাসে কারা নাম লেখাবেন, সেটাই দেখার বিষয় (most runs in ipl 2025)।
টিম কম্বিনেশন থেকে শুরু করে ড্রেসিংরুমের পরিবেশ, সবদিক দিয়েই যেন এগিয়ে তারা। সবথেকে বড় বিষয়, অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ারের ফর্ম। গোটা টুর্নামেন্টে দুরন্ত ক্রিকেট উপহার দিয়েছেন তিনি। সেইসঙ্গে, অধিনায়কত্বের দিক দিয়েও রীতিমতো পারফেক্ট বলা চলে।অপরদিকে, শ্রেয়স আইয়ার হলেন আইপিএল-এর ইতিহাসে প্রথম, যিনি অধিনায়ক হিসেবে তিনটি আলাদা আলাদা দলকে প্লে-অফে তুলেছেন (ipl 2025 final date)।
গত ২০১৯ এবং ২০২০ সালে, তিনি ছিলেন দিল্লী ক্যাপিটালসের অধিনায়ক। সেই দুবারই প্লে-অফে উঠেছিল দিল্লী। তার মধ্যে আবার ২০২০ সালে, ফাইনালও খেলে তারা। এরপর আবার কলকাতা নাইট রাইডার্সের অধিনায়ক হন শ্রেয়স এবং গতবার কেকেআরকে চ্যাম্পিয়ন করেন তিনিই।
কেকেআর ম্যানেজমেন্ট অবশ্য এবার তাঁকে গুরুত্ব দেয়নি! কিন্তু পাঞ্জাবের স্পটাররা সোনা চিনতে ভুল করেননি। তাই মেগা অকশনে রেকর্ড অর্থের বিনিময়ে শ্রেয়সকে দলে নেয় কিংসরা। আর মাঠে নেমেই ক্রমাগত জবাব দিয়েছেন শ্রেয়স। বারবার বুঝিয়ে দিয়েছেন, 'call of action' সঠিক ছিল না নাইট ম্যানেজমেন্টের। হাত কামড়াচ্ছেন ভেঙ্কি মাইসোর?
গোটা টুর্নামেন্টে অসাধারণ ব্যাটিং এবং ক্যাপ্টেন হিসেবে টিমকে সাফল্য এনে দেওয়া। শ্রেয়স আইয়ার, নিঃসন্দেহে ভারতীয় ক্রিকেটের কালো ঘোড়া। আর তার প্রমাণ আবারও দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারেই পাওয়া গেছে। বিরাট রানের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে খেলতে নেমেও যেভাবে ঠাণ্ডা মাথায় সতীর্থদের নিয়ে ম্যাচ বের করে নিয়ে গেলেন, তা এককথায় অনবদ্য (final match)।
উপহার দিলেন ৪১ বলে ৮৭ রানের বিধ্বংসী ইনিংস। রীতিমতো পিচে পড়ে থেকে জয় ছিনিয়ে নিয়ে গেলেন তিনি। দাপটের সঙ্গে কখনও রানিং বিটউইন দ্য উইকেট। আবার কখনও বল বুঝে চার কিংবা ছয়। একেকটি বিশাল ছক্কা মারলেন, গিয়ে পড়ল সোজা গ্যালারিতে।
তবে সবথেকে বেশি ইম্প্রেসিভ ছিল, বুমরার ঐ বুলেটের মতো ইয়র্কারগুলিতে স্মার্ট ব্যাটিং এবং পরপর বাউন্ডারি মেরে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। তাই ফাইনালেও যে তিনি ফ্যাক্টর হয়ে উঠতে পারেন, সেই কথা বলাই বাহুল্য।
তাঁর এই ইনিংস অনেককিছুর উত্তর দিয়ে গেছে। একজন ক্যাপ্টেন, যার দল রান তাড়া করতে নেমেছে এবং নক–আউট ম্যাচে চাপের মুখেও কীভাবে টেম্পারমেন্ট ঠিক রেখে সাবলীল ভঙ্গিতে ম্যাচ জিততে হয়, তা তিনি করে দেখালেন। যেন যোগ্য জবাব দিচ্ছেন প্রতিনিয়ত।
অন্যদিকে, প্রিয়াংশ আর্য, প্রভসিমরণ সিং, জশ ইংলিস, নেহাল ওয়াধেরা, শশাঙ্ক সিং, মার্কাস স্টয়নিস, আজমতুল্লাহ ওমরজাই এবং আর্শদীপ সিংরা যে কোনও মুহূর্তে খেলা ঘুরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন।
গোটা প্রতিযোগিতায় অসাধারণ ক্রিকেট উপহার দিয়েছে তারা। বিশেষ করে দলের প্রাণভোমরা বিরাট কোহলি নিজে ভালো ফর্মে রয়েছেন। সেইসঙ্গে, টিম কম্বিনেশন এবং আত্মবিশ্বাসের দিক দিয়েও আরসিবি অনেকটাই এগিয়ে। তাই ফাইনালে বেঙ্গালুরুর হয়ে বিরাট কোহলি ছাড়াও ফিল সল্ট, অধিনায়ক রজত পাতিদার, লিয়াম লিভিংস্টোন, জীতেশ শর্মা এবং জশ হ্যাজেলউডদের দিকে কিন্তু নজর রাখতেই হবে।
বেঙ্গালুরু দলের সবথেকে বড় অ্যাডভান্টেজ হল, বিরাট কোহলির অভিজ্ঞতা। এইরকম একাধিক ম্যাচ রয়েছে, যেখানে কোহলি কার্যত পিচে পড়ে থেকে ম্যাচ বের করে এনেছেন। অনেকক্ষেত্রে তাঁর বুদ্ধিদীপ্ত ইনিংস জয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছে দলকে। স্বাভাবিকভাবেই, এই বিষয়গুলি ফাইনালে পার্থক্য গড়ে দিতে পারে। তাছাড়া চলতি আইপিএলে প্রথম দল হিসেবে ফাইনালে উঠেছে আরসিবি।
আহমেদাবাদের ২২ গজ যথেষ্ট স্কোরিং একটি পিচ। তাই বড় রান যে উঠবে, সেই কথা বলাই বাহুল্য। আর দুই দলই আগে ব্যাট করে এবং রান তাড়া করতে জিততে ওস্তাদ। স্বাভাবিকভাবেই, এই কথা বলাই যায় যে, ২২ গজের অন্যতম একটি রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ হতে চলেছে এটি। রীতিমতো হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দেখার অপেক্ষায় ক্রিকেটপ্রেমীরা।
এখনও পর্যন্ত ৩৬ বার মুখোমুখি হয়েছে দুই দল। যার মধ্যে ১৮ বার জিতেছে পাঞ্জাব এবং ১৮ বার জয় পেয়েছে বেঙ্গালুরু।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।