
মঙ্গলবার রাতে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমি-ফাইনালে দ্বিতীয় লেগের লড়াই। এই ম্যাচে জয় বার্সেলোনাকে এক দশক পর উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে পৌঁছে দেবে। অন্যদিকে, ইন্টার মিলান নিজেদের ঘরের মাঠে জয়ের লক্ষ্যেই খেলতে নামবে। ২০১০ সালে ইন্টার শেষবার উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছিল। সেবার তারা সেমি-ফাইনালে বার্সেলোনাকে হারিয়েছিল। চোট সারিয়ে রবার্ট লেওয়ানডস্কির ফিরে আসা এবং ১৭ বছর বয়সি ল্যামিন ইয়ামালের ফর্ম বার্সেলোনার জন্য সুখবর। তবে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নদের জন্য কাজটা কঠিন।
ক্যাম্প ন্যু যেমন বার্সেলোনার দুর্গ, সান সিরো তেমনই ইন্টারের দুর্গ। ২০২২ সাল থেকে ইন্টার তাদের ঘরের মাঠে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোনও ম্যাচ হারেনি। ১৪টি ম্যাচের মধ্যে ইন্টার ১১টিতে জিতেছে এবং ৩টি ড্র করেছে। বার্সেলোনা এই স্টেডিয়ামে মাত্র একবার জিতেছে। ২০১৯ সালে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বে। তারা এই স্টেডিয়ামে দু'টি ম্যাচ হেরেছে এবং তিনটি ড্র করেছে। এই মরসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ইন্টার তাদের ঘরের মাঠে মাত্র পাঁচটি ম্যাচ হেরেছে।
এই বছর বেশিরভাগ প্রতিযোগিতায় ভালো খেললেও, বার্সেলোনার অ্যাওয়ে ম্যাচে খারাপ রেকর্ড সমর্থকদের চিন্তায় রেখেছে। ইতালিতে ২৪টি ম্যাচের মধ্যে তারা মাত্র ৫টিতে জিতেছে। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে স্পেনের বাইরে যে কোনও দেশে এটাই বার্সার সবচেয়ে খারাপ রেকর্ড। ২০১৮ সালে এএস রোমার কাছে এবং ২০১৯ সালে লিভারপুলের কাছে তাদের হারের স্মৃতি এখনও তাজা। এবার কোয়ার্টার-ফাইনালে সিগন্যাল ইডুনা পার্কে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় লেগে হার তাদের জন্য সুখকর নয়। ২০১০ সালেও বার্সেলোনা সান সিরোতে হেরেছিল।
এই বছরের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে যদি কোনও দল সেট পিস ভালোভাবে নিতে জানে, তাহলে সেটা হল ইন্টার মিলান। আর কোনও দল সেট পিসে এতটা ঝুঁকিপূর্ণ নয় যতটা বার্সেলোনা। ইন্টারের গত ম্যাচের তিনটি গোলের দু'টি এসেছে কর্নার থেকে। দু'টি গোলই করেছেন ডেঞ্জেল ডামফ্রাইস। সব প্রতিযোগিতায় গত সাত ম্যাচে বার্সেলোনা কর্নার থেকে পাঁচটি গোল হজম করেছে। প্রথম লেগের আগে কোচ হানসি ফ্লিক বলেছিলেন, খেতাব জিততে হলে তাঁর দলকে সেট পিস আরও ভালোভাবে সামাল দিতে হবে। কোয়ার্টার-ফাইনালে ইন্টার একইভাবে জার্মান ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখকে (ফ্লিকের পুরনো দল) হারিয়েছিল।
জুলস কুন্ডের দুর্দান্ত গোলে কোপা ডেল রে ফাইনালে বার্সেলোনা প্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদকে হারিয়েছিল। হ্যামস্ট্রিংয়ে চোটের কারণে কুন্ডে সান সিরোতে খেলতে পারবেন না। আলেহান্দ্রো বালদেও ইন্টারের বিরুদ্ধে দলে থাকবেন না। প্রথম দলের বাঁ এবং ডান ব্যাক আহত হওয়ায়, ফ্লিক ইঙ্গিত দিয়েছেন যে তিনি নেরাজ্জুরির বিপক্ষে ডিফেন্সে সব সেন্টার-ব্যাক খেলোয়াড় নামাবেন। মার্কাস থুরাম এবং লাউতারো মার্টিনেজের মতো দুর্দান্ত স্ট্রাইকারদের বিরুদ্ধে বার্সেলোনাকে তাদের ক্লান্তি কাটিয়ে সেরাটা দিতে হবে।
৭ মে যখন বার্সেলোনা মাঠে নামবে, তারা এমন একটা রঙের জার্সি পরবে যা তাদের জন্য হতাশার প্রতীক। ২০১৯ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালের প্রথম লেগে ক্যাম্প ন্যুতে লিভারপুলের বিপক্ষে ৩-০ গোলে এগিয়ে থাকার পর তারা অ্যানফিল্ডে ৪-০ গোলে হেরে যায়। সেই ম্যাচে এই জার্সি পরেই খেলেছিল বার্সা।