জোর করে যন্তর মন্তর থেকে সরিয়ে দিয়েছে দিল্লি পুলিশ। তবে তাতে কুস্তিগীরদের আন্দোলন থামছে না। ভারতীয় কিষান ইউনিয়ন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, খাপ পঞ্চায়েত কুস্তিগীরদের আন্দোলনের পাশে দাঁড়িয়েছে।
বিচার না পেয়ে ক্ষোভ-হতাশা-দুঃখে উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বারে গঙ্গায় পদক বিসর্জন দিতে গেলেও, শেষপর্যন্ত সেই কর্মসূচি স্থগিত রাখলেন আন্দোলনরত কুস্তিগীররা। মঙ্গলবার সন্ধেবেলা গঙ্গায় পদক বিসর্জন দেবেন বলে স্থির করেছিলেন ভিনেশ ফোগট, সাক্ষী মালিক, বজরং পুনিয়ারা। কিন্তু তার আগেই সেখানে পৌঁছে যান ভারতীয় কিষান ইউনিয়নের জাতীয় সভাপতি নরেশ টিকাইত। তিনি কুস্তিগীরদের হাত থেকে পদক নেন।তাঁদের কাছ থেকে ৫ দিন সময় চেয়ে নেন নরেশ। এরপর পদক বিসর্জন দেওয়ার কর্মসূচি স্থগিত রাখার কথা জানান কুস্তিগীররা। তবে তাঁরা জানিয়ছেন, ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতি ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগের বিচার না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। কৃষকদের সংগঠনও জোরদার আন্দোলনের কথা ঘোষণা করেছে।
কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করে নরেশ বলেছেন, 'কুস্তিগীররা আমাদের মেয়ে, আমাদের পরিবার। আমরা ওদের হতাশ করব না। সরকারের সবাই একজনকে (ব্রিজভূষণ শরণ সিং) বাঁচাতে উঠেপড়ে লেগেছে। আগামীকাল খাপের বৈঠক হবে। সেই বৈঠকেই আন্দোলনের পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।'
এদিন পদক বিসর্জন দিতে হরিদ্বারের হর কি পৌরি ঘাটে পৌঁছে যান ভিনেশ, বজরং, সঙ্গীতা ফোগটরা। তাঁরা চোখে জল নিয়ে গঙ্গার ঘাটে বসে পড়েন। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন কয়েকশো মানুষ। হরি কি পৌরির নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়। পুলিশ জানায়, কুস্তিগীরদের বাধা দেওয়া হবে না। তাঁরা যে কোনও জায়গায় যেতে পারেন।
কুস্তিগীরদের এই আন্দোলনকে সমর্থন করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল-সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরা। মমতা এদিন নবান্নে বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরেও এফআইআর করে ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতি ব্রিজভূষণ শরণ সিংকে গ্রেফতার করা হয়নি। অথচ আমাদের হাজার হাজার লোককে গ্রেফতার করে রেখে দিয়েছে। কুস্তিগীরদের শারীরিকভাবে হেনস্থা করা হয়েছে, মারধর করা হয়েছে, শ্লীলতাহানি করা হয়েছে। এটা অত্যন্ত অন্যায়।’ কেজরিওয়াল ট্যুইট করে বলেন, 'সারা দেশ স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। সারা দেশের চোখে জল। এবার প্রধানমন্ত্রীর অহঙ্কার ত্যাগ করা উচিত।'
ভারতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়ক ও কোচ অনিল কুম্বলেও কুস্তিগীরদের এই আন্দোলন সমর্থন করেছেন। তাঁর ট্যুইট, ‘২৮ মে যা হয়েছে, যেভাবে আমাদের কুস্তিগীরদের শারীরিকভাবে হেনস্থা করা হয়েছে, সেটা শুনে আমি হতাশ। ঠিকমতো আলোচনার মাধ্যমে যে কোনও সমস্যার সমাধান করা যায়। আশা করি খুব তাড়াতাড়ি সমাধানসূত্র পাওয়া যাবে।’
আরও পড়ুন-
যা হচ্ছে কাম্য নয়, কুস্তির ক্ষতি হচ্ছে, মন্তব্য পশ্চিমবঙ্গ কুস্তি ফেডারেশনের সচিবের
কুস্তিগীরদের আন্দোলনে দিল্লি পুলিশের দমন-পীড়নের নিন্দায় নীরজ চোপড়া, সুনীল ছেত্রী
আর্থিক সমস্যায় চিকিৎসা করাতে পারছেন না, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সাহায্যের আর্জি পিয়ালির