অলিম্পিকের মঞ্চে সতীশ কুমার বুঝিয়ে দিলেন ভারতীয় সেনা কী, হেরেও জিতলেন প্রতিপক্ষের শ্রদ্ধা

অলিম্পিকের মঞ্চে ভারতীয় সেনার মেজাজ বুঝিয়ে ছাড়লেন সতীশ কুমার। হারলেও, দুর্দান্ত লড়াইয়ে জিতে নিলেন প্রতিপক্ষ বক্সারের শ্রদ্ধা।

Asianet News Bangla | Published : Aug 1, 2021 9:28 AM IST / Updated: Aug 01 2021, 03:10 PM IST

রবিবার, অপেশাদার বক্সিং-এর সুপার হেভিওয়েট বিভাগের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন বাখোদির জোলোলোভের বিরুদ্ধে সতীশ কুমারের পরাজয়ে এবারের মতো অলিম্পিকে ভারতীয় বক্সারদের দৌড় প্রায় শেষ হয়েছে। একমাত্র, পদকপ্রাপ্তি নিশ্চিত করেছেন লভলিনা বোরগোহাইন। মহিলারে ৬৯ কেজি বিভাগের সেমিফাইনালে উঠেছেন তিনি। সতীশ এদিন পদক হারালেও অলিম্পিকের মঞ্চ থেকে জিতলেন অনেক কিছুই। তুলে ধরলেন ভারতীয় সেনার হার না মানা লড়াইয়ের দুর্দান্ত মেজাজ। 

কপালে এবং চিবুকে মোট সাতটি সেলাই নিয়ে এদিন রিং-এ নেমেছিলেন সতীশ। জামাইকার রিকার্ডো ব্রাউনের বিরুদ্ধে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনাল ওই দুটি জায়গায় কেটে গিয়েছিল। অবস্থা এমনই ছিল, যে মেডিকাল পরীক্ষার পর তাঁকে লড়াই করতে দেওয়া হবে কি না, তাই নিয়েই সংশয়ী ছিল ভারতীয় বক্সিং দল। শেষ পর্যন্ত ওই চোট নিয়ে নেমে উজবেকিস্তানের বাখোদির জোলোলোভের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে তিনি ০-৫ ফলে হেরেছিলেন। কিন্তু, এইক্ষেত্রে স্কোরলাইনটাকে 'গাধা' বলা যায়। কারণ এই স্কোরলাইনে সতীশের সাহসী লড়াই একেবারেই প্রতিফলিত হয়নি। 

৩২ বছরের এই ভারতীয় বক্সার ভারতীয় সেনার এক সদস্যও বটে। যুদ্ধক্ষেত্রে যেমন ভরাতীয় সেনার বার না মানা লড়াই দেখা যায়, সেভাবেই এদিন লড়েছেন সতীশ। বর্তমান বিশ্ব এবং এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন বাখোদির জোলোলোভের সামনে ধারে ভারে সব দিক থেকেই তিনি পিছিয়ে ছিলেন। কিন্তু, চোট, সামর্থের অভাব - সব কিছু জয় করে লড়ে গিয়েছেন সতীশ। রক্তে চোখ ভিজে গেলেও নিজের জমি ছাড়েননি কখনও। একবার তো সেই রক্ত গিয়ে পড়ল উজবেক প্রতিপক্ষের গায়েও। সতীশকে চিকিৎসা সহায়তা নিতে বলে বাউট স্থগিত রাখতে বাধ্য হয়েছিলেন রেফারি। মাঝে মাঝে সতীশের ডান হাতের ঘুসি গিয়ে পড়েছে জোলোলোভের মুখেও। তবে, অস্বীকার করা যাবে না এদিন গোটা ম্যাচটাই নিয়ন্ত্রণ করেছেন জোলোলোভ।

সব বিভাগে জোলোলোভের থেকে পিছিয়ে ছিলেন সতীশ কুমার। কিন্তু, শুধুমাত্র সাহসী লড়াইয়ের জোরেই বিশ্বচ্যাম্পিয়ন উজবেক বক্সারের থেকেও সমীহ আদায় করে নিয়েছেন তিনি। প্রতিযোগিতার শেষে রিং-এর মধ্যেই সতীশের সাহসিকতা মেনে নেন জোলোলোভ। আদর্শ ক্রীড়াবিদের মানসিকতা দেখিয়ে রিং ছাড়ার ভারতীয় বক্সারকে উষ্ণ আলিঙ্গন করে যান তিনি। সেই আলিঙ্গনই সতীশের জয়। হেরে গিয়েও জয়। 

আরও পড়ুন - কে হবেন বোল্টের উত্তরসূরী, কারা কারা রয়েছেন ফাঁকা সিংহাসনে বসার দৌড়ে - দেখে নিন এক নজরে

আরও পড়ুন - কোয়ার্টারফাইনাল জিতেই বন্য সেলিব্রেশন, লজ্জাজনকভাবে অলিম্পিক সোনা হারালেন বক্সার

আরও পড়ুন - Tokyo Olympics 2020, ৭টি সেলাই নিয়ে দুর্দান্ত লড়াই, তাও ছিটকে গেলেন বক্সার সতীশ কুমার

৬ ফুট ২ ইঞ্চি লম্বা সতীশ উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহরের এক কৃষিজীবী পরিবারের সন্তান। ২০০৮ সালে দদার মতো তিনিও যোগ দিয়েছিলেন সেনাবাহিনী। রবিশঙ্কর সাঙ্গওয়ান নামে সেনাবাহিনীর এক বক্সিং কোচের নজরে পড়েছিলেন তিনি। তাঁর কাছেই শুরু করেছিলেন প্রশিক্ষণ। আর এই বছর প্রথম ভারতীয় বক্সার হিসাবে অলিম্পিক বক্সিং-এর সুপার হেভিওয়েট বিভাগে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ইতিহাস রচনা করলেন তিনি। তবে, সুযোগ এলে তিনি যুদ্ধক্ষেত্রেও দেশসেবা করতে চান বলে জানিয়েছেন সতীশ।

\

Share this article
click me!