বাবুল-দেবদূত, ২ চ্যালেঞ্জারের মোকাবিলায় মন্ত্রী অরূপ, রমরমা এবার টালিগঞ্জ কেন্দ্র

  •  ১৫২ নং বিধানসভা কেন্দ্রের দিকেও নজর সকলের 
  • টালিগঞ্জ কেন্দ্র প্রশান্ত শূরের আসন বলে পরিচিত 
  •  ১৯৭৭- ৯১ পর্যন্ত টানা এখান থেকে নির্বাচিত হন তিনি 
  • তারপর ছবিটা কীভাবে বদলাল ফিরে দেখা যাক একবার 
     

Asianet News Bangla | Published : Apr 6, 2021 11:13 AM IST


তাপস দাশঃ- ১৫২ নং বিধানসভা কেন্দ্রের দিকেও নজর থাকবে সকলের। টালিগঞ্জ কেন্দ্র প্রাক্তন বামফ্রন্ট মন্ত্রিসভার স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্রশান্ত শূরের আসন বলে পরিচিত। ১৯৭৭ সাল থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত টানা এখান থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। ১৯৯৬ সাল থেকে পরপর দু বার এই কেন্দ্র থেকে যিনি জিতেছিলেন, সেই তৃণমূলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য প্রয়াত পঙ্কজ বন্দ্যোপাধ্যায় পরবর্তীকালে রাজনীতি থেকে সন্ন্যাসগ্রহণ করেন। 

আরও পড়ুন, ' বাংলায় ভাইপো সার্ভিস ট্যাক্স চালু করেছেন দিদি ', কোচবিহারে বিস্ফোরক মোদী 

 

 


২০০৬ সালে এখানে যিনি জিতলেন, তিনি পরবর্তীকালে মমতা মন্ত্রিসভার সদস্য হবেন, এবং দক্ষিণ কলকাতা তৃণমূল লবির অন্যতম প্রভাবশালী হয়ে উঠবেন। তিনি অরূপ বিশ্বাস। প্রচলিত ভাষ্য অনুসারে, টলিপাড়ার তিনিই সর্বেসর্বা। অরূপ ও তাঁর ভাই স্বরূপকে নিয়ে বিতর্ক বড় কম হয়নি, গত ১০ বছরে। তাঁদের বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ জমা পড়েছে। কিন্তু তাতে পরিস্থিতি খুব বদলায়নি। একের পর এক সিনেমা-টিভির নায়ক-নায়িকারা তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন, সাংসদ ও বিধায়ক হয়েছেন। ২০১১ সালে এই কেন্দ্র থেকে সিপিএমের হয়ে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন অধ্যাপক পার্থপ্রতিম বিশ্বাস। অরূপ বিশ্বাসের কাছে তিনি হারেন ২৭ হাজারেরও বেশি ভোটে। ২০১৬ সালে অরূপ বিশ্বাস হারান সিপিএমের তৎকালীন ফায়ারব্র্যান্ড নেত্রী মধুজা সেনরায়কে। ব্যবধান ছিল ১০ হাজারের মত। ২০১৬ সালের ভোটে তৃণমূল কংগ্রেসের ভোটশেয়ার এখানে কমেছিল কমবেশি ৯.৪ শতাংশ। সিপিএমের ভোট শেয়ার বেড়েছিল কমবেশি ০.৫ শতাংশ। 

 

আরও পড়ুন, সকাল থেকেই ছাপ্পা ভোটে অভিযুক্ত তৃণমূল, '১০০ টা FIR করেছি' বললেন মমতা 

 

 

টালিগঞ্জ বিধানসভা যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত, এবং এখানে একদিকে যেমন অভিজাত পাড়া রয়েছে, তেমনই অভ্যন্তরে রয়েছে বস্তি ও কলোনি এলাকা, যেখানে পূর্ববঙ্গ থেকে আগতদের বাস। সেই তথ্য মাথায় রেখে দেখতে হবে এখানে ২০১১ ও ২০১৬ সালের বিজেপির ভোটের হিসেব। ২০১১ সালে এখানে বিজেপি দাঁড় করিয়েছিল বিবেকানন্দ সিংহরায়কে। তিনি পেয়েছিলেন ২৯৩১ ভোট, ভোটশেয়ার ১.৬ শতাংশ। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী ছিলেন মোহন রাও। তিনি পেয়েছিলেন ১৪, ৮৩৫ ভোট, ভোট শেয়ার ৭.৬৬ শতাংশ। অর্থাৎ তৃণমূলের ভোটশেয়ার যেখানে ৯.৪ শতাংশ কমছে ও সিপিএমের ভোটশেয়ার ০.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেখানে বিজেপির ভোটশেয়ার বাড়ছে ৭.৬ শতাংশের বেশি। সাদা চোখে দেখলে বোঝা যাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস থেকে ভোট গিয়েছে বিজেপিতে। 

আরও পড়ুন, 'তপনকে ক্ষমা করে দিয়ে ভোটটা দেবেন তো' জনসভায় এসে চরম শঙ্কায় মমতা 

 

 


কিন্তু ২০১৯ সালের লোকসভার ভোট একই ছবি দিচ্ছে না। সেবার টালিগঞ্জ কেন্দ্র থেকে মিমি চক্রবর্তী পাচ্ছেন ৭৭ হাজারের বেশি ভোট, সিপিএমের বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য পাচ্ছেন প্রায় ৫৯ হাজার ভোট, অন্যদিকে বিজেপির অনুপম হাজরা পাচ্ছেন ৪৫৮১৪ ভোট। এই পরিস্থিতিতে বিজেপি এবার তুরুপের তাস বের করেছে। আসানসোলের সাংসদ, টলি-বলি গায়ক বাবুল সুপ্রিয়কে প্রার্থী করা হয়েছে এই কেন্দ্রে। বিনোদনজগতের সঙ্গে যুক্ত, মুম্বইয়ে প্রভাবশালী বাবুল সুপ্রিয়কে টালিগঞ্জের ভোটে দাঁড় করিয়ে মাস্টারস্ট্রোক দিতে চাইছে তারা। তারকা প্রার্থীর লড়াইয়ে, টালিগঞ্জে পিছিয়ে থাকতে চাইছে না সিপিএমও। সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থীপদ দেওয়া হয়েছে অভিনেতা দেবদূত ঘোষকে। তিনি সিপিএমের টিকিটে লড়ছেন এবার। টালিগঞ্জ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ ১০ এপ্রিল, অর্থাৎ চতুর্থ দফায়। 


 

Share this article
click me!