ভাঙন বাড়ছে রাজ্য বিজেপিতে, গেরুয়া শিবির থেকে ৩০০ কর্মীর যোগদান তৃণমূলে

Published : Jun 17, 2021, 11:51 AM IST
ভাঙন বাড়ছে রাজ্য বিজেপিতে, গেরুয়া শিবির থেকে ৩০০ কর্মীর যোগদান তৃণমূলে

সংক্ষিপ্ত

বড়োসড়ো ভাঙ্গন বিজেপিতে মালদা জেলার হরিশচন্দ্রপুরে বিজেপি থেকে তৃণমূলে যোগদান তৃণমূলে এলেন প্রায় ৩০০ জন বিজেপি কর্মী এই যোগদান ঘিরে কটাক্ষ বিজেপির

প্রত্যেক ক্রিয়ার সমান এবং বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে। নিউটনের তৃতীয় সূত্র যেন প্রতিফলিত হচ্ছে রাজ্য রাজনীতিতে। ভোটের আগে বিজেপিতে চলছিল যোগদান মেলা। তৃণমূল থেকে যোগদানের ঢল নেমেছিল বিজেপিতে। আর ভোটের পর উলটপুরান। কিছুদিন আগেই দল ছেড়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়। ফিরে এসেছেন নিজের পুরনো দল তৃণমূলে। তারপর থেকেই বিজেপিতে বড় ধরনের ভাঙ্গন আশঙ্কা করা হচ্ছে। উঁচু স্তরে সেই ভাবে এখনো ভাঙ্গন না দেখা দিলেও, নিচু স্তরে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে ভাঙ্গন। 

আরও পড়ুন-আজ রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাত রাজ্যপাল ধনকড়ের, রাজ্যের ভোটপরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে নালিশ

মালদা জেলার হরিশচন্দ্রপুরে এবার বড়োসড়ো ভাঙ্গন বিজেপিতে। বিজেপি যুব মোর্চার ব্লক সভাপতি, ৪৬ জন বিধানসভার পর্যবেক্ষক, দুই পঞ্চায়েত সদস্য সহ প্রায় তিন শতাধিক কর্মী যোগ দিলেন তৃণমূলে। দলের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিয়ে তারা যোগ দিলেন তৃণমূলে। উচ্ছ্বসিত তৃণমূল নেতৃত্ব। কটাক্ষ বিজেপির।

হরিশ্চন্দ্রপুরে কিছুদিন আগে ভিঙ্গল গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি পঞ্চায়েত সদস্য যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূলে। এবার হরিশচন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপির ২ সদস্য বাবুয়া হরিজন এবং লালু ওরাও যোগ দিলেন তৃণমূলে। সঙ্গে যোগ দিলেন বিজেপি যুব মোর্চার ব্লক সভাপতি অভিজিৎ কর্মকার, হরিশ্চন্দ্রপুর ৪৬ বিধানসভার পর্যবেক্ষক দীপক ঋষি সহ প্রায় ৩০০ জন সক্রিয় কর্মী সমর্থক। হরিশ্চন্দ্রপুরের তৃনমূল কংগ্রেস কার্যালয়ে হয় এই যোগদান। 

আরও পড়ুন- তৃণমূলে যোগ প্রাক্তন বিজেপি বিধায়ক সুনীল সিং ঘনিষ্ঠ দুই কাউন্সিলরের, সুনীলের ফেরা নিয়ে বাড়ছে জল্পনা

যোগদান পর্বে উপস্থিত ছিলেন মালদা জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক বুলবুল খান, জম্মু রহমান, হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নং ব্লক তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি জিয়াউর রহমান, তৃণমূল নেতা সঞ্জীব গুপ্তা সহ অন্যান্য ব্লক তৃণমূল নেতৃত্ববৃন্দ। ২৬ আসন বিশিষ্ট হরিশচন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েত বর্তমানে রয়েছে শাসক দলের দখলেই। তৃণমূলের আসন সংখ্যা ১৮, বিজেপির ৭, কংগ্রেসের ১ টি আসন রয়েছে। তবে বর্তমানে বিজেপির আসন সংখ্যা কমে দাঁড়ালো ৫। তৃণমূল কংগ্রেস বেড়ে হলো ২০। এদিকে হরিশচন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যত বিরোধীশূন্য করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জম্মু রহমান। পাশাপাশি তৃণমূল নেতা বুলবুল খানের গলাতেও একই সুর।

তৃণমূলে যোগদানকারী বিজেপির যুব মোর্চার ব্লক সভাপতি অভিজিৎ কর্মকার বলেন,"আজ আমি,দুইজন পঞ্চায়েত সদস্য,বিধানসভার পর্যবেক্ষক সহ প্রায় ৩০০ জন তৃণমূলে যোগদান করলাম।বিজেপি আবর্জনার দল।ওখানে থাকা যাবে না। মমতা ব্যানার্জির আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তৃণমূলে যোগ দিলাম। মমতা যেভাবে কাজ করছেন রাজ্যে আরো কুড়ি বছর তৃণমূল থাকবে।"

বুলবুল খান বলেন,"যারা যোগ দিলো তারা প্রত্যেকে বিজেপিতে খুব সক্রিয় ছিল। খুব ভালো কাজ করতে দেখেছি। এদের যোগদানে তৃণমূল আরো শক্তিশালী হবে।" বিজেপিকে আক্রমণ করে তিনি বলেন," দেশজুড়ে পেট্রোল তথা বিভিন্ন জিনিসের মূল্য বৃদ্ধি হচ্ছে। দুর্নীতিগ্রস্তরা বিদেশে পালিয়ে যাচ্ছে। সকল ভারতবাসীর শপথ করা উচিত এই সাম্প্রদায়িক বিজেপিকে হারানোর।"

আরও পড়ুন- Fire at Delhi AIIMS: দিল্লি এইমসে ভয়াবহ আগুন, অল্পের জন্য প্রাণ বাঁচালেন রোগীরা

জম্মু রহমান বলেন,"এবার হরিশচন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েত বিরোধী-শূন্য হবে।২৬ এ ২৬ পাবে তৃণমূল।সকলেই মমতা ব্যানার্জির উন্নয়নমূলক কাজকর্ম দেখে যোগদান করলো। হরিশ্চন্দ্রপুরে তৃণমূল ছাড়া আর কিছু থাকবে না।বিজেপি থেকে যোগদান করার জন্য আমাদের পার্টি অফিসের সামনে ধর্না দেবে বলে বিজেপি কর্মীরা বলছে। যারা ভালো তাদের আমরা নেব।"

এদিকে এই যোগদানকে কটাক্ষ করেছেন বিজেপি নেতা রূপেশ আগরওয়াল। তিনি বলেন," এই মুহূর্তে বিজেপি থেকে জঞ্জাল পরিষ্কার হচ্ছে। যাদের এক পা তৃণমূলে ছিল আরেক পা বিজেপিতে। তারা চলে যাচ্ছে তৃণমূলে। যারা যাওয়ার যাক আমরা নতুন করে সংগঠন সাজাবো। ওই কাটমানির দলে গিয়ে কেউ কাজ করতে পারবে না।"

হরিশ্চন্দ্রপুর বিধানসভায় প্রথমবারের মতো জিতেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আর তারপর থেকেই যেন তৃণমূলে যোগদানের ঢল নেমেছে। বিজেপি কংগ্রেস বিভিন্ন দল ছেড়ে চলছে নিয়মিত যোগদান। এই যোগদান তৃণমূলকে কতটা সমৃদ্ধ করে সেটাই দেখার বিষয়। তবে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বর সম্ভাবনা নিয়ে চিন্তা থেকে যাবে তৃণমূল নেতৃত্বের। 

PREV
click me!

Recommended Stories

Babri Masjid Issue : 'হুমায়ুন কবীরের এই বার্তা যথেষ্ট ভয়ানক, আর সরকার দেখছে!' সতর্ক করলেন শুভেন্দু
Babri Masjid Murshidabad : বাবরি মসজিদের জন্য কোথা থেকে আসছে এত টাকা? কী বললেন অধীর চৌধুরী?