লকডাউনের জেরে দিন কাটছিল খোলা আকাশের নিচে। রোদে পুরে, বৃষ্টি ভিজে শেষপর্যন্ত মারা গেলেন এক রিক্সাচালক। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের রামপুরহাটে। রেলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: করোনা আতঙ্কে রেলব্রিজ থেকে ঝাঁপ, খড়গপুরে আত্মহত্যার চেষ্টা আরপিএফ জওয়ানের
রামপুরহাট স্টেশন চত্বরে ভবঘুরদের সংখ্যা নেহাত কম নয়। যিনি মারা গিয়েছেন, তাঁকে চিনতেন সকলেই। ভবঘুরেরাই জানিয়েছেন, মৃতের নাম রতন চট্টোপাধ্যায়। কয়েক বছর কলকাতা থেকে পালিয়ে এসে রামপুরহাট স্টেশনে আশ্রয় নেন তিনি। দিনের বেলায় রিক্সা চালাতেন রতন, রাতে শুয়ে থাকতেন স্টেশনের বাইরে, টিকিট কাউন্টারের সামনে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্লাটফর্মে ঢোকা তো দূরে, লকডাউন জারি হওয়ার পর টিকিট কাউন্টারের সামনেও আর ভবঘুরেদের থাকতে দিচ্ছে না আরপিএফ। আর তাতেই ঘটে বিপত্তি।
আরও পড়ুন: করোনা সচেতনতার বার্তা, রায়গঞ্জে মাস্ক পরেই পুজো নিলেন মা কালী
আরও পড়ুন: হাওড়ায় করোনায় আক্রান্ত আরপিএফ জওয়ান, ব্যারাক সিল করে দিল পুলিশ
জানা গিয়েছে, অন্য ভবঘুরেদের মতোই খোলা আকাশের নিচেই থাকছিলেন রতনও। বৃহস্পতিবার রাতে প্রবল বৃষ্টিতে ভিজে যান বছর পঞ্চান্নের ওই ব্যক্তি। শুক্রবার দুপুরে খাওয়া-দাওয়াও করেননি। একটি দোকানে শুয়ে থাকতে থাকতে রতন জ্ঞান হারান। অচৈতন্য অবস্থায় তাঁকে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যান কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। হাসপাতালে রতন চট্টোপাধ্যায়কে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। মৃতদেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে পুলিশ। এদিকে এই ঘটনা রেলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, লকডাউনের কারণে ট্রেন চলছে না। ফাঁকা স্টেশনে ভবঘুরেরা থাকতে দিলে, কী এমন ক্ষতি হত! মাথার উপর ছাদ থাকলেও হয়তো রতনের মতো চালচুলোহীন মানুষের প্রাণ যেত না।