ভোটের ময়দানে বড়সড় চমক! পুরভোটের মুখেই মুর্শিদাবাদের বিজেপি প্রার্থী আইনজীবী অরুণাভ রায় যোগ দিলেন তৃণমূলে।
হাতে বাকি আর মাত্র একদিন। এদিকে ২৭ ভোট গ্রহণ শুরুর আগে গোটা রাজ্যেই জোরদার প্রচারে নেমেছে পুরভোটের প্রার্থীরা। এরইমাঝে ভোটের ময়দানে বড়সড় চমক! পুরভোটের মুখেই মুর্শিদাবাদের বিজেপি প্রার্থী আইনজীবী অরুণাভ রায় যোগ দিলেন তৃণমূলে। শুক্রবার এই ঘটনায় জেলার রাজনৈতিক মহল জুড়ে ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে। শাসক দলের দাবি, উন্নয়নের টানেই বিজেপি প্রার্থীর এই আচমকা দলবদল। পাল্টা এমন কান্ডে তুমুল সমালোচনার ঝড় তুলে দিয়ে গেরুয়া শিবিরের দাবি, প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে গণতন্ত্রকে হত্যা করতে এই জঘন্য কাজ করেছে শাসক দল তৃণমূল। ভয় দেখিয়ে বিজেপি (BJP) প্রার্থীকে শেষ মুহূর্তে ঘাসফুল শিবিরে টানা হল। এদিকে মুর্শিদাবাদ (Murshidabad) জেলা পার্টি অফিসে তাঁর হাতে পতাকা তুলে দেন জেলা সভাপতি শাওনি সিংহরায়। ফলে ওই ওয়ার্ডে কার্যত বিরোধী শূন্য লড়াই তৃণমূলের।
এবার প্রথমবার জয়ের মাধ্যমে বহরমপুর পুরসভা দখলের জন্য মরিয়া লড়াই চালাচ্ছে শাসক শিবির। তিন দশক পর কংগ্রেসের হাতছাড়া হয়েছিল এই পুরসভা। ২০১৬সালের পুরপ্রধান সহ মোট ১৭কংগ্রেস কাউন্সিলার তৃণমূলে যোগ দেন। তারপর বোর্ড গঠন করে তৃণমূলের নেতারা পুরসভা চালান। তবে এবার ২৮টি ওয়ার্ডের অধিকাংশ ওয়ার্ডেই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী ঘাসফুল শিবির। সেই লক্ষ্যে এগনোর জন্য বিরোধীদের ধরাশায়ী করতে শুরু করেছে তৃণমূল। বিজেপি প্রার্থী তৃণমূলে যোগদান করায় অস্বস্তিতে রয়েছে গেরুয়া শিবির। গত বিধানসভা ভোটের নিরিখে বহরমপুর পুরসভায় অধিকাংশ ওয়ার্ডে এগিয়ে ছিল পদ্মশিবির। সেই ভোটের হিসেবে বিজেপি পুরসভা দখলের আশায় ছিল। কিন্তু সেই আশায় কার্যত জল ঢেলে দিচ্ছে শাসকদল। বহরমপুর শহরের ২১নম্বর ওয়ার্ডের হেভিওয়েট বিজেপি প্রার্থী সদলবলে তৃণমূলে যোগ দিলেন। এর আগেই ওই ওয়ার্ডের বাম ও কংগ্রেস প্রার্থীরা মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেয়।
আরও পড়ুন- পুরভোটের আবহে তপ্ত বাংলার মাটি, শেষ দিনের প্রচারে বড় চমক একাধিক জেলায়
এখন মনোনয়ন প্রত্যাহারের উপায় না থাকায় তৃণমূলে যোগদান করে বিজেপি প্রার্থী তৃণমূলকে সমর্থন করার জন্য প্রচার শুরু করেছেন। এদিন অরুণাভ বলেন, “আমি সম্পূর্ণ নিজের ইচ্ছেয় তৃণমূলে যোগদান করেছি। মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নের ধারা যাতে অব্যাহত থাকে সেজন্য বহরমপুরবাসীর জন্য কাজ করতে চাই। তাই আমি তৃণমূল প্রার্থীকে সম্পূর্ণভাবে সমর্থন করছি। আমি তৃণমূলের হয়ে প্রচার করছি"।তৃণমূলের জেলা সভাপতি শাওনি সিংহরায় বলেন, “তৃণমূলের উন্নয়নের ছোঁয়ায় কুপোকাত কংগ্রেস ও বিজেপি। ২১ নম্বর ওয়ার্ডে কংগ্রেসের তরফ থেকে জোর করে মনোনয়ন জমা দেওয়া হয়। কিন্তু তারা বুঝতে পারে যে সেখানে তারা অবধারিত হারবে। তাই কংগ্রেস প্রার্থী তৃণমূলে আসেন। এরপর বিজেপি প্রার্থী বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচারে গিয়ে বুঝতে পারেন, তৃণমূলের উন্নয়নে সাধারণ মানুষ কতটা খুশি। তাই তিনি বিজেপি প্রার্থীপদ থেকে সরে এসে তৃণমূলে যোগদান করেন"। এব্যাপারে বিজেপির মুর্শিদাবাদ দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শাখারভ সরকার বলেন, “২১নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থীর উপর মনোনয়নের দিন থেকে অত্যাচার করা হচ্ছে। বাধ্য হয়েই উনি প্রাণে বাঁচতে তৃণমূলে যোগদান করলেন। এটা গণতন্ত্রের হত্যা"। এদিকে এই ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য শুরু হয়েছে মুর্শিদাবাদের রাজনৈতিক মহলে।