লকডাউন চলার সময় জাতীর উদ্দেশ্যে ভাষণে আত্মনির্ভর ভারতের কথা বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সম্প্রতি দ্বিতীয় মোদী সরকারের একবছপ পূর্তিতে দেশবাসীকে খোলা চিঠিও লিখেছেন প্রধানমন্ত্রী। আর প্রধানমন্ত্রীর সেই আত্মনিজ্ঞভর ভারতের বুলিকে বৈররণী করে এবার রাজ্য বিজেপি ২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের বৈতরিণী পার করতে চাইছে। আর সেই কারণেই এবার এক অভিনব প্রচার কৌশলের সাহায্য নিলে এরাজ্যের বিজেপি নেতৃত্ব। আত্মনির্ভর ভারতকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রীযে চিঠি লিখেছেন তা এবার এরাজ্যের প্রতিটি মানুষরে কাছে পৌঁছে দিতে বাড়ি বাড়ি যাবেন বিজেপি নেতারা।
এরাজ্যে হাওড়া থেকে প্রধানমন্ত্রীর গৃহ সম্পর্ক অভিযানের সূচনা করলেন খড়গপুরের বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ। বাড়ি বাড়ি গিয়ে মোদীর লেখা চিঠি তুলে দেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি। চিঠিতে গত ৬ বছরের মোদী সরকারের কাজের খতিয়ানের কথা বলা হয়েছে । বাংলা ও হিন্দি, দুই ভাষাতেই ছাপানো হয়েছে এই চিঠি। ১৬ জুন থেকে শুরু হওয়া এই অভিযান চলবে চলতি মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত।
মঙ্গলবার বিজেপির সংস্ত সাংসদরাই নিজের নিজের জেলায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে পৌঁছে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী চিঠি। একদিকে দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে আত্মনির্ভর ভারতের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর বার্তা, কেন্দ্রীয় সরকারের সাফল্যের খতিয়ান যেমন রয়েছে এই চিঠিতে অন্যদিকে বিজেপি নেতৃত্ব ভোটারদের কাছে গিয়ে এই কর্মসূচির মাধ্যমে তুলে ধরছেন রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল সরকারের ব্যর্থতাকেও।
বাংলায় ২০২১-এর বিধানসভা ভোটকে সামনে রেখেই কার্যত বাড়ি বাড়ি গিয়ে সরাসরি প্রচার অভিযানের মাধ্যমেই নির্বাচনী প্রচার শুরু করে দিল গেরুয়া শিবির। একইসঙ্গে কর্মীদের মাঠে নামিয়ে ভোটের আগে আত্মনির্ভর করতে চাইছে পদ্মশিবির। মধ্য হাওড়ার পঞ্চাননতলায় দেশপ্রাণ শাসমল রোডে বাড়িতে বাড়িতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর চিঠি তুলে দেন দিলীপ ঘোষ। কয়েকটি বাড়িতে মহিলারা অভিযোগ করেন, লকডাউনের এই পরিস্থিতিতে তাঁরা রেশন পাচ্ছেন না। এমনকী আমফানে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর ত্রিপল পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। বাসিন্দাদের অভিযোগ শোনেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। অন্যদিকে শুধু হাওড়া না রাজ্যের অন্যান্য জেলাগুলিতেও একই কর্মসূচি পালন করতে শুরু করেছে বিজেপি। হুগলির চন্দননগর, চুঁচুড়া, বাঁশবেড়িয়া অঞ্চলে বাড়ি বাড়ি যান সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। বোলপুরে সম্পর্ক অভিযানে অংশ নেন সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, বাঁকুড়ায় ডা. সুভাষ সরকার, মালদহ উত্তরে খগেন মুর্মু, কোচবিহারে নিশীথ প্রামাণিক-সহ সমস্ত সাংসদরা।
সম্পর্ক যাত্রা সূচনার পর বিজেপি রাজ্য দফতরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিস্ফোরক অভিযোগও করেন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর অভিযোগ, ‘তৃণমূল তোষণের রাজনীতি করছে। জাল ভোটারদের দিয়ে ভোট করার রাজনীতি। সীমান্তে বেড়া দিতে চান না মুখ্যমন্ত্রী। রাজনীতির স্বার্থে দেশের সুরক্ষাকে বিক্রি করছে তৃণমূল সরকার। সীমান্তে যদি বেড়া দেওয়া হয়, তাহলে ওপার থেকে ভোটাররা আসতে পারবে না। তাহলে মুখ্যমন্ত্রী ভোটে জিততে পারবেন না।’ এছাড়াও ফের রাজ্যে নতুন করে লকডাউন করার পক্ষে সওয়াল করেন দিলীপবাবু। বলেন, ‘লকডাউন করতে হবে না হলে বাঁচার রাস্তা নেই।’