সংক্ষিপ্ত

  • সোমবার রাতে গালওয়ান উপত্যকায় সংঘাতে দু'পক্ষেরই ক্ষয়ক্ষয়তি হয়েছে
  • ভারতের এক সেনা আধিকারিক সহ নিহত হয়েছেন ২০ জওয়ান
  • গালওয়ানে কমপক্ষে ৪৩ জন চিনা সেনার হতাহতের খবর পাওয়া যাচ্ছে
  • ভারতীয় সেনা সীমান্ত পেরোয়নি দাবি করছে বিদেশমন্ত্রক

পূর্ব লাদাখের বারতৃচিন সীমান্তে গালওয়ান উপত্যকায় এক কর্নেল সহ ২০ জন ভারতীয় জওয়ানের শহিদ হওয়ার খবর মঙ্গলবার রাতেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েঠছে। তবে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সংঘর্ষে চিনেরও অন্তত ৪৩ জন সেনা জোয়ান নিহত বা গুরুতর আহত হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। সংবাদ সংস্থা এএনআই দাবি করেছে, চিনের রেডিয়ো ইন্টারসেপ্ট করে ভারতীয় সেনা জানতে পেরেছে অন্তত ৪৩ জন চিনা সৈনিক হতাহত হয়েছে।

 

 

সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে জানা যাচ্ছে, লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলের (এলএসি) ওপারে চিনের সেনাবাহিনীর চপারের যাতায়াত বেড়ে যেতে দেখা গিয়েছে। আহত জওয়ানদের চিকিৎসার জন্য উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যদিও বেজিং প্রশাসং এখনও সরকারি ভাবে কোনও চিনা সেনার মৃত্যুর খবর জানায়নি। তবে বেজিং প্রশাসনের মুখপত্র 'গ্লোবাল টাইমস'-এর প্রধান সম্পাদক ট্যুইট করেছেন, যেখানে লেখা হয়েছে গালওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষে চিনা সেনাও নিহত হয়েছে।

 

পূর্ব লাদাখে পাঁচ সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে উত্তেজনা চলছে। সীমান্তে চিনের সেনাবাহিনীর কার্যকলাপ বৃদ্ধি পেলে  আপত্তি জানায় ভারত। দু’পক্ষই সীমান্তে জওয়ানের সংখ্যা বাড়ায়। এরই মধ্যে উত্তেজনা প্রশমন করার জন্য আলোচনা শুরু হয়। তবে সোমবার রাতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে দুপক্ষের সেনারা। আর তাতেই প্রাণ যায় ভারত ও চিনের জওয়ানদের।

আরও পড়ুন: ধারা ৩৭০ অপসারণ করতেই বাড়ল রাগ, দেখুন গত এক মাসে গলওয়ান উপত্যকায় যা ঘটিয়েছে চিনা বাহিনী

এদিকে সোমবার রাতে  গালওয়ান উপত্যকায় ভারত ও চিনের সেনাবাহিনীর মধ্যে যে সংঘর্ষ হয়, তার জন্য চিনকেই দায়ী করছে ভারতের  বিদেশমন্ত্রক। এক বিবৃতি দিয়ে বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে , ‘সীমান্তের বিষয়ে দায়িত্ববান আচরণ বজায় রেখে ভারত নিশ্চিত করেছে, যাবতীয় কার্যকলাপ যেন ভারতের সীমানার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। আমরা চিনের কাছ থেকেও একই আচরণ আশা করেছিলাম। আমাদের আশা ছিল, বৈঠকে যে বিষয়ে আমরা একমত হয়েছিলাম, তার ভিত্তিতে লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল (এলএসি) থেকে শান্তিপূর্ণভাবে সরে যাবে চিনের সেনা। কিন্তু কথা রাখেনি চিন।’

বিদেশমন্ত্রকের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, ‘চিনের সেনাবাহিনী একতরফাভাবে সীমান্তে স্থিতাবস্থা বদল করার যে চেষ্টা চালায়, তার ফলেই সোমবার সন্ধে ও রাতে সংঘর্ষ হয়। এই সংঘর্ষে দু’পক্ষেরই ক্ষয়-ক্ষতি হয়। চিন যদি বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকত, তাহলে এই ঘটনা এড়ানো সম্ভব হত। আমাদের মতে, সীমান্তে শান্তি ও স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে হবে এবং আলোচনার মাধ্যমে যাবতীয় সমস্যা মিটিয়ে নিতে হবে। একইসঙ্গে আমরা ভারতের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা বজায় রাখার বিষয়ে দায়বদ্ধ।’

আরও পড়ুন: লাদাখে এবার বাজল যুদ্ধের ডঙ্কা, জেনে নিন গত একমাসে কোন পথে এগিয়েছে ভারত-চিন সম্পর্ক

ভারতীয় সেনা সূত্রে খবর, চিনের সেনা গালওয়ানে পয়েন্ট ১৪-তে ভারতীয় এলাকায় ভিতরে ঢুকে তাঁবু খাটিয়েছিল। ভারতীয় জওয়ানরা টহলদারির সময় তা দেখতে পেয়ে, সরিয়ে দেন। চিনের সেনারা তাঁবু সরাতে দেখে পাহাড়ের ওপর থেকে প্রথমে পাথর ছোড়ে। তার পর রড হাতে নেমে আসে। শুরু হয় হাতাহাতি।