অমানবিক, করোনা আতঙ্কে বৃদ্ধকে 'রাস্তায় ফেলে' দিলেন স্বাস্থ্যকর্মীরা

  • করোনা আতঙ্কে কি হারাচ্ছে মানবিকতাও?
  • 'অসুস্থ' বৃদ্ধকে 'রাস্তায় ফেলে' পালালেন স্বাস্থ্যকর্মীরা
  • প্রতিবাদে বিক্ষোভে ফেটে পড়লেন স্থানীয়েরা
  • রায়গঞ্জের ঘটনা
     

Asianet News Bangla | Published : Jun 16, 2020 5:10 PM IST / Updated: Jun 16 2020, 10:42 PM IST

কৌশিক সেন, রায়গঞ্জ: করোনার আতঙ্ক, সমাজ থেকে কী হারিয়ে যাচ্ছে মানবিকতাও? 'অসুস্থ' অবস্থায় এক বৃদ্ধকে অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে রাস্তায় ফেলে দিয়ে গেলেন স্বাস্থ্যকর্মীরা! জ্বরে কার্যত বেহুশ হয়ে দীর্ঘক্ষণ রাস্তায় পড়ে রইলেন তিনি। ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। অমানবিকতার সাক্ষী থাকল উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ। 

আরও পড়ুন: নবদম্পতির বিচ্ছেদ ঘটাল করোনাভাইরাস, হাসপাতালে 'পুনর্মিলন' স্বামী-স্ত্রীর

ওই বৃদ্ধের নাম বাদল দাস। বাড়ি, রায়গঞ্জের শহরের দেবীনগরের জোড়া বটতলা এলাকায়। লকডাউনের জেরে স্ত্রী আটকে পড়েছেন অন্য জায়গায়। স্থানীয় শ্যামপুর পঞ্চায়েতের সদস্যা কল্পনা বর্মন জানিয়েছেন, গত কয়েক দিন ধরে জ্বর নিয়ে বাড়িতে একাই ছিলেন বাদলবাবু। খবর পাওয়ার পর বিডিও-র সাহায্যে তাঁকে রায়গঞ্জে মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।  পঞ্চায়েত সদস্যের দাবি, সোমবার বিকেলে যখন হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে যান, তখন জানানো হয়, রোগী সুস্থ হলে খবর দেওয়া হবে। শেষপর্যন্ত মঙ্গলবার সন্ধের মুখে বাদলবাবুকে অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে রাস্তায় ফেলে স্বাস্থ্যকর্মীরা পালিয়ে যান বলে অভিযোগ। ঘটনাটি নজরে পড়তে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন আশেপাশে লোকজন। শুরু হয়ে যায় পথ অবরোধও। কিন্তু ওই বৃদ্ধকে বাড়ি পৌঁছে দেবেন কে! করোনার ভয়ে সাহায্য় করতে এগিয়ে আসেননি কেউ।


 
ঠিক কী ঘটেছিল? স্থানীয় বাসিন্দা জোৎস্না বিশ্বাস জানিয়েছেন, 'বাড়ির সামনে বসেছিলাম। হঠাৎ একটি অ্যাম্বুল্যান্সে এসে থামল। কিছু বুঝে ওঠার আগেই এক বৃদ্ধকে কার্যত টেনে হিঁচড়ে রাস্তায় নামিয়ে প্রচন্ড গতিতে অ্যাম্বুল্যান্সটি চলেও গেল। কাছে গিয়ে বুঝতে পারি, যিনি রাস্তা পড়ে রয়েছেন, তিনি আমাদেরই প্রতিবেশী। জ্বরে তখন রীতিমতো কাঁপছিলেন তিনি। বাড়ি থেকে একটি চাদর এনে দিই। কিন্তু করোনা ভয়ে ওঁনাকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার সাহস পাচ্ছিলাম না।' ঘটনাস্থলে পৌঁছলে, পুলিশকে ঘিরেও চলে বিক্ষোভ। এদিকে ততক্ষণে খবর এসেছে, ওই বৃদ্ধের রিপোর্ট করোনা নেগেটিভ। স্থানীয় বাসিন্দা চাপের রাতের দিকে তাঁকে উদ্ধার করে হেমতাবাদ স্বাস্থ্যকেন্দ্র নিয়ে যায় পুলিশ।

আরও পড়ুন: আকাশপথে বিপদের হাতছানি, চেন্নাই থেকে বিমানে রাজ্যে ফিরলেন দু'জন 'করোনা রোগী'

কেন এমনটা ঘটল? রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে সহকারী সুপার অভিক মাইতির সাফাই, 'মঙ্গলবার বাদলকে ছুটি দিয়ে দেন চিকিৎসকরা। কিন্তু ভর্তি করানোর সময়ে যে ফোন নম্বর দেওয়া হয়েছিল, সেই নম্বর ফোন করে জানতে পারি, সেটি ঠিক নয়। স্বাস্থ্যকর্মী অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে তাঁকে বাড়ি পৌঁছে দিতে যান। রাস্তায় ফেলে দেওয়ার বিষয়টি জানি না। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।'

Share this article
click me!