রাতে ঘুম নেই বাবুলের চোখে - সোশ্যাল মিডিয়ায় ফাটালেন একের পর এক বোমা, নিশানায় কারা

মন্ত্রিত্ব হারানোর পর থেকে বাবুল সুপ্রিয়োকে একমাত্র খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। শুক্রবার মাঝরাত থেকে শনিবার সকাল, সোশ্যাল মিডিয়ায় একের পর এক পোস্ট করে গেলেন বিজেপি সাংসদ।

 

মন্ত্রিত্ব হারানোর পর থেকে বাবুল সুপ্রিয়োকে একমাত্র খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। গত বুধবার, ৭ জুন, মোদী মন্ত্রীসভার রদবদলের দিনই 'ইস্তফা দিতে বলা হয়েছে' বলে বিতর্ক বাধিয়েছিলেন। সেই বিতর্কে ইতি টানার এখনও কোনও সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। বরং, শুক্রবার মধ্যপাত থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত সোশ্যাল মিডিয়ায় কার্যত পোস্টের কার্পেট বম্বিং করে চললেন তিনি। কখনও 'শ্রদ্ধা জানালেন' দিলীপ ঘোষকে। কখনও নিজের প্রপার নাউন মন্তব্যের ব্য়খ্যা দিলেন তো কখনও মন্ত্রী হিসাবে নিজের কাজের ফিরিস্তি দিলেন।

গত বুধবার, 'ইস্তফা দিতে বলা হয়েছে' বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েও পরে, সেই বক্তব্য পাল্টে দিয়েছিলেন বাবুল। বলেছিলেন তাঁকে ইস্তফা দিতে বলা হয়নি, তিনি নিজেই ইস্তফা দিয়েছেন। কিন্তু, মন্ত্রিত্ব হারিয়ে যে তিনি 'দুঃখিত' তাও পরিষ্কার করে  দিয়েছিলেন। এই বিতর্ককেই আরও এক কদম এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সাফ জানিয়েছিলেন, 'তাঁকে (বাবুল) যদি স্যাক (বরখাস্ত) করা হত, তা হলে কি ভাল হত?' আবার শুক্রবার ওই একই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, 'বাবুল সক্রিয় মন্ত্রী ছিলেন। কিন্তু মন্ত্রী থাকাকালীন তো মুখ্যমন্ত্রী কম গালমন্দ করেননি। এখন হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন বাবুল।'

Latest Videos

শুক্রবার প্রায় মধ্যরাতে ওই দিলীপ ঘোষের ওই মন্তব্যের একটি সংবাদ প্রতিবেদন তুলে ধরে বাবুল সুপ্রিয়ো ফেসবুকে জবাব দেন। বাবুল লেখেন, 'রাজ্য সভাপতি হিসেবে 'মনের আনন্দে' দিলীপদা অনেক কিছুই বলেন। আবারও বললেন, আমি শুনলাম। কিন্তু এই উক্তিটি কেন করলেন সেটা যদি এবারকার জন্য আমি 'স্বজ্ঞানে' বুঝেও না বুঝি তো ক্ষতি কি? এটাই আমার প্রতিক্রিয়া! আমার "হাঁফ ছেড়ে বাঁচাতে" দিলীপদা আনন্দ পেয়েছেন এতেই আমি আনন্দিত! উনি রাজ্য সভাপতি - সবার শ্রদ্ধার পাত্র! আমিও আন্তরিক শ্রদ্ধা জানালাম প্রিয় দিলীপদাকে!'  

আবার এর দু'ঘন্টা বাদেই, শনিবার ভোর আড়াইটে নাগাদ একটি দীর্ঘ পোস্ট করেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। এবারের পোস্টের বিষয় প্রপার নাউন। সম্প্রতি খেলা সংক্রান্ত একটি বিষয় নিয়ে বাবুল সুপ্রিয়োকে ফেসবুকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছিলেন এক ব্যক্তি। তার জবাব দিতে গিয়ে নিজেকে 'প্রপার নাউন' বলে দাবি করেছিলেন বিজেপি সাংসদ। এই নিয়ে পরে তুমুল বিতর্ক হয় এবং ট্রোল্‌ড হতে হয়েছিল বাবুলকে। এদিন ভোরে তিনি সেই ট্রোলিং-এরই জবাব দিয়েছেন।

তাঁর দাবি, সুপ্রিয় বড়াল (বাবুল সুপ্রিয়োর আসল নাম)-ও একটি নাম, তাই অবশ্যই সেটা প্রপার নাউন। কিন্তু, তা শুধুমাত্র চেনা মানুষ, মা-বাবা, বন্ধু বান্ধবদ - নিজের জগতের মধ্যে। বাইরের জগতের কাছে সেটা যে কারোর নামমাত্র, অর্থাৎ তাদের কাছে সেটা একটা নাউন ছাড়া কিছু না, কারণ অনেকেই জানেনা সুপ্রিয় বড়াল-ই বাবুলের আসল নাম। কিন্তু, সুপ্রিয় বড়ালের জগতের বাইরে সকলেই তাঁকে চেনে বাবুল সুপ্রিয়ো নামে। তাই বাবুল সুপ্রিয়ো প্রপার নাউন। তাই তিনি বলেছেন, নিজের একটি নাম আছে বলে কেউ ব্যাকরণগতভাবে নিজেকে প্রপার নাউন ভাবতেই পারে, কিন্তু সে মানুষের মতো মানুষ হতে পারে না।

আরও পড়ুন - এ পথে চলতে পারে না গাড়ি, তাই ৬টি অটো-অ্যাম্বুল্যান্স তৈরি করলেন এই মহিলা ক্যাফে-মালিক

আরও পড়ুন - ভারত কি ড্রোন হামলার জন্য প্রস্তুত, কী জানালেন অবসরপ্রাপ্ত লে. কর্নেল নবীন নভলানি

আরও পড়ুন - মাধ্যমিকে ফেল করে নাকি ডিএসপি, এবার খোদ রাজ্য পুলিশের ঘরেই ধরা পড়ল ভুয়ো অফিসার

তবে এটা আদৌ বাবুলের এই জবাব, তাঁকে ব্যাক্তিগত আক্রমণ করা ব্যক্তিকে উদ্দেশ্য করেই কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ওই পোস্টে তিনি বলেছেন, 'কুছ তো লোগ কাহেঙ্গে' গানটি ছোট থেকেই তিনি ভাল গান। আর পোস্টের সঙ্গে নিজেরই গাওয়া একই মর্মার্থের আমার প্রিয় একটি রবীন্দ্রসংগীতের অ্যালবাম 'যদি জানতেম'-এর গান 'তোমরা যা বলো তাই বলো' গানটি জুড়ে দিয়েছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে চর্চা শুরু হয়েছে, এই  পোস্টটিও বিজেপির রাজ্য সভাপতিকে লক্ষ্য করেই করা নয়তো?

এর পরের পোস্টটি বাবুল করেছেন শুক্রবার সকালে। সেখানে তিনি ফেসবুকের একটি মেমারি শেয়ার করেছেন। মেমারি-টি ৭ বছর আগেকার। আসানসোলের সাংসদ হওয়ার দুমাস পর তিনি দফতরের পূর্ণমন্ত্রী অনন্ত গীতে-র সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন, 'হিন্দুস্তান কেবলস'কে রক্ষা করার জন্য। ৬০০০ কোটির টাকার কাছাকাছি ক্ষতি ও দায়বদ্ধতায় ডুবে ছিল সংস্থাটি। নিজে উদ্যোগ নিয়ে সেই কারখানায় নতুন যন্ত্রপাতি ও বিনিয়োগ এনে উৎপাদন ফের শুরু করিয়েছিলেন বলে দাবি  করেছেন বাবুল। মন্ত্রিত্ব হারানোর ব্যথা যে তাঁর এখনও যায়নি তা স্পষ্ট।

শুধু ফেসবুক নয়, টুইটারেও বাবুলের এই দুঃখ ধরা পড়েছে। টুইটারের বায়োডেটা অংশে বেশ কিছু অদলবদল ঘটিয়েছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। নিজের পরিচয় দিয়েছেন 'সিঙ্গার বাই হার্ট, প্রাক্তন ব্যাঙ্কার এবং ভারত সরকারের প্রাক্তন মন্ত্রী' বলে। সঙ্গে স্পষ্ জানিয়েছেন, মানুষের কাজ করার জন্য়ই তিনি রাজনীতি করেন, ভালবেসে নয়। তিনি যা ভালবাসেন, তাতে তাঁর হৃদয় এবং মস্তিষ্ক দুটোই দেন। তাঁর ভালবাসার তালিকায় নেই রাজনীতি, বরং রয়েছে গাড়ি, বাইক এবং পোষ্য।

Share this article
click me!

Latest Videos

'মমতার দশা কেজরিওয়াল-এর মত করব' বিস্ফোরক মন্তব্য শুভেন্দুর | Suvendu Adhikari | BJP vs TMC |
"এবার রোহিতের জায়গায় সৌগতকে নামাতে হবে", চরম কটাক্ষ মদন মিত্রের | Madan Mitra on Saugata Roy
‘Hindu-দের দোকান ভাঙবেন পোড়াবেন এই অধিকার কে দিয়েছে!’ তীব্র হুঙ্কার Suvendu Adhikari-র
‘JNU-এর মতো JU-কেও ঠান্ডা করব!’ Jadavpur ইস্যুতে Mamata Banerjee-কে হুঁশিয়ারি Agnimitra Paul-এর
'জনগণ মমতাকে চ্যাংদোলা করে বাইরে ফেলবে' বিস্ফোরক শুভেন্দু | Suvendu Adhikari | Bangla News Today