কালীপুজোর রাতে অশোক ভট্টাচার্যের বাড়িতে সাংসদ রাজু বিস্ত। বাম-বিজেপির দুই দলই গোটা বিষয়টিতে সৌজন্য সাক্ষাৎকার বললেও তৃণমূল গেমপ্ল্যান দেখছে। গৌতম দেবের নিশানায় অশোকভট্টাচর্য।
কালীপুজোর দিনে শিলিগুড়িতে সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্যের বাড়িতে গিয়েছিলেন বিজেপির নেতা তথা দার্জিলিং-এর সাংসদ রাজু বিস্তা। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বিরোধী দলের দুই নেতার সাক্ষাৎকার ঘিরে অশনী সংকেত দেখছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। কারণ যদিও অশোক ভট্টাচার্য ও রাজু বিস্ত দুজনেই তাঁদের সাক্ষাৎকারকে সৌজন্য সাক্ষাৎকার বলে জানিয়েছেন। রাজু বিস্ত আরও জানিয়েছেন এর পিছনে কোনও রাজনীতি নেই। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস নেতা গৌতম দেব গোটা বিষয়টির মধ্যেই 'গেমপ্ল্যান' দেখছেন।
সোমবার রাতে , শিলিগুড়িতে সিপিএম নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্যের বাড়িতে গিয়েছিলেন বিজেপির দার্জিলিং-এর সাংসদ রাজু বিস্ত। তাঁদের মধ্যে দীর্ঘ কথাবার্তা হয়। দুজনের সাক্ষাৎকারের ছবি নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন রাজু বিস্ত। পাশাপাশি তিনি বলেছেন, দীপাবলিতে এটা ছিল একটি সৌজন্য সাক্ষাৎকার। অশোক ভট্টাচার্যের বাড়িতে রাজু বিস্তের সঙ্গে গিয়েছিলেন দলবদলু বাম নেতা শঙ্কর ঘোষ। যিনি একটা সময় অশোক ভট্টাচার্যের ডান হাত বলে পরিচিত ছিল। গত বিধানসভা নির্বাচনের দল বদল করেন। আর পূর্বতন রাজনৈতিক গুরু অশোক ভট্টাচার্যকে হারান। তাঁর উপস্থিতিতে এই বৈঠক হয় বলে সূত্রের খবর।
রাজু বিস্ত- অশোক ভট্টাচার্যের এই আচমকা সাক্ষাৎকার ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক জল্পনা। কারণ বিজেপি ও সিপিএম পরস্পর বিরোধী দুই মেরুর দল। কিন্তু রাজনীতিতে কখনই কোনও হিসেবই মেলে না। এই অবস্থায় অনেকেই দাবি করছেন আগামী বছরই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বাম-বিজেপি একসঙ্গে লড়াইয়ের পরিকল্পনা নিচ্ছে। যদিও বামেদের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে বিজেপিকে বর্জন করার কথাই বলা হয়ে থাকে। আবার বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও চূড়ান্তই বাম বিরোধী। কিন্তু রাজনীতি বলে কথা!
তবে অশোক ভট্টাচার্য আর রাজু বিস্তের সাক্ষাৎকার যে তৃণমূল ভালোচেখে নেয়নি তা স্পষ্ট হয়েছে শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেবের প্রতিক্রিয়ায়। গোটা বিষয়টাকেই তিনি তৃণমূলের বিরুদ্ধে গেমপ্ল্যান হিসেবেই দেখছেন। তিনি বলেছেন, 'কোনও কোনও ব্যক্তি থাকেন যারা নিজে থেকেই দায়িত্ব নিয়ে অভিভাবক হয়ে যান। যেমন সৌরভের ক্ষেত্রে হয়েছিল। এখন বিজেপির সঙ্গে মিলে গেমপ্ল্যান তৈরি করছেন।' তিনি আরও বলেন, দুই দলের মধ্যে বোঝাপড়া হয়েছে। তবে এই বিষয়ে তিনি আর কিছু বলবেন না। যদিও অশোক ভট্টাচার্যকে সরাসরি রাজনৈতির ময়দানে নামার আহ্বান জানিয়েছেন।
পাল্টা অশোক ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, তাঁর অনেক বয়স হয়েছে। তিনি কমিউনিস্ট পার্টি ৫৪ বছর ধরে করছেন। এখানেই শেষ করে তিনি বলেন, তাঁর রাজনৈতিক সত্ত্বা এত ঠুনকো নয়, যে কেউ বাজিয়ে দেখার জন্য তাঁর কাছে আসবে। তিনি আরও বলেন, 'ওঁরা হঠাৎই এসেছিলেন দীপাবলির শুভেচ্ছা জানাতে। আমিও শুভেচ্ছা জানিয়ে চা খেতে বলি। চা খেতে খেতে ভালমন্দ অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। 'এখানেই শেষ না করে অশোক ভট্টাচার্য জানিয়েছেন তাঁর স্ত্রীর বাৎসরিকের অনুষ্ঠানেই তিনি রাজু বিস্তকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। কিন্তু সাংসদ জানিয়েছেন তিনি ব্যস্ত থাকবেন তাই এই দিন তিনি আসতে পারবেন না।
তবে রাজু বিস্ত এই বিষয়ে কিছুই জানাননি। কিন্তু শঙ্কর ঘোষ জানিয়েছেন, 'অশোকদা আমার অনেকদিনের পরিচিত। এর মধ্যে কোনও রাজনীতি নেই।' তিনি আরও বলেছেন, অশোকদার মত প্রবীণ রাজনীতিবীদের বাড়িতে উৎসবের দিনে যাওয়ার মধ্যে তিনি কোনও অন্যায় দেখেন না। পাশাপাশি তিনি বলেন গোটা বাংলার সঙ্গে শিলিগুড়ির রাজনীতি মেলালে সমস্যা হবে। কারণ শিলিগুড়ির মানুষ রাজনৈতিক সৌজন্যকে গুরুত্ব দেয়। আর সেইক্ষেত্রে বলা যেতে পারে এই সাক্ষাৎকারকে বাম ও বিজেপি দুই শিবিরই সৌজন্য সাক্ষাৎকার বলছে।
মকর সংক্রান্তির দিন রামলালার মূর্তি স্থাপন হবে অযোধ্যায়, ভক্তরা দর্শন পাবেন ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে
কালো চশমা পরে মমতার বাড়ির কালীপুজোয় হাজির অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়, আর্শীবাদ নিলেন মুখ্যমন্ত্রীর