
ভোটের ময়দানে সময়টা কিছুতেই ভালো যাচ্ছে না বঙ্গ বিজেপির। বিধানসভা ভোটের পর পৌরসভা ভোটেও কার্যত ভরাডুবি হয়েছে দল। যা নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে দলের অন্দরেই। এদিকে তারমাঝে এবারের কলকাতা বইমেলায় প্রকাশিত হচ্ছে বিজেপির প্রাণ পুরুষ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের উপর বই The Warrior Democrat Shyamaprasad Mukherjee। ৭ মার্চ কলকাতার আশুতোষ মুখোপাধ্যায় মেমোরিয়াল ইনস্টিটিউটে বইটি প্রকাশ করবেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। যা নিয়েই বর্তমানে জোর চর্চা শোনা যাচ্ছে রাজনৈতিক মহলে। এদিকে বঙ্গ বিভাজনের মুখ হিসেবে ইতিহাসে বারংবার যার নাম উল্লেখ করা হয় তিনি হলেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। স্বাধীন অবিভক্ত বাংলা সংগঠনের বিরুদ্ধে যার নাম উঠে আসে সবার প্রথমে। ১৯৪৩ থেকে ১৯৪৬ সালের মধ্যে অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভার সভাপতি ছিলেন জনসংঘের প্রতিষ্ঠাতা। তার উপরে লেখা বই নিয়ে যে রাজনৈতিক মহলে উত্তেজনা থাকবে তা বলাই বাহুল্য।
ভারত সরকারের অধীনে থাকা তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের নীচে থাকা প্রকাশনা বিভাগের তরফেই এই বই প্রকাশ করা হচ্ছে। তাই বর্তমানে জাতীয় রাজনীতির মহলেও সাড়া ফেলেছে এই বইয়ের আত্মপ্রকাশ। শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জীবনে রাজনৈতিক কর্মসূচি, সংগ্রাম ও তাঁর আদর্শ, স্বপ্নের উপর নির্ভর করেই এই বই লেখা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। সেই অনুযায়ী দেওয়া হয়েছে যুতসই নাম। এই ক্ষেত্রে মনে রাখা ভালো শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের পরিবারের আদিনিবাস ছিল পশ্চিমবঙ্গের হুগলী জেলার জিরাট-বলাগড় গ্রামে৷ তাঁর প্রপিতামহ পারিবারিক কারণে হুগলী জেলারই এক ব্রাহ্মণ অধ্যুষিত গ্রাম দিগসুই থেকে জিরাট-বলাগড় গ্রামে এসে বসতি গড়েন৷ তাঁর পিতামহ গঙ্গাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ১৮৩৬ সালের ১৬ই ডিসেম্বর জিরাট-বলাগড় গ্রামেই জন্মগ্রহণ করেন৷ তিনি ছিলেন মেধাবী৷ তিনি জিরাটের বিত্তশালীদের সাহায্যে কলকাতায় ডাক্তারী পড়তে আসেন এবং পরে জিরাট-বলাগড় গ্রাম ছেড়ে কলকাতার ভবানীপুরে বসতি স্থাপন করেন। শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী ১৯০১ সালের ৬ই জুলাই কলকাতায় এক উচ্চ সামাজিক মর্যাদাসম্পন্ন ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯২১ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ইংরেজিতে সম্মান পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান দখল করার পর শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী ভারতীয় ভাষায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি ১৯২৪ সালে বি.এল পরীক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বোচ্চ স্থান লাভ করেন। ছাত্র জীবনেই হাতেখড়ি রাজনৈতিক আঙিনায়।
আরও পড়ুন- রাশিয়ান মহাকাশযান থেকে মুছে গেল আমেরিকা-জাপান-ব্রিটেনের পতাকা, রইল ভারতের তেরঙা পতাকা
এদিকে শুরু থেকেই শ্যামাপ্রসাদের জীবন বিতর্কে মোড়া। পড়াশোনা হোক বা রাজনীতি কোনও জায়গাতেউ বিতর্ক তাঁর পিছু ছাড়েনি। তাঁর বাবা যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে ছিলেন, তখন শ্যামাপ্রসাদের ভূমিকা ঠিক কী ছিল, তা নির্ধারণ করা কঠিন। তবে বাবার মৃত্যুর পরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ সংস্থা, সেনেটে নির্বাচিত হন তিনি। তখন তাঁর ২২ বছর বয়স। পড়াশোনাও শেষ হয়নি। তা নিয়েও বিস্তর ধোঁয়াশা তৈরি হয়।