তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের ভয়ে দীর্ঘদিন বাড়িছাড়া কোচবিহারের বিজেপি কর্মী, অপমানে ও আতঙ্কে বিষ খেলেন তাঁর স্ত্রী

তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের ভয়ে বহুদিন ধরে বাড়িছাড়া কোচবিহারের বিজেপি কর্মী রাখাল দাস, লজ্জায় অপমানে ও বারবার হামলার আতঙ্কে বিষ খেলেন তাঁর স্ত্রী রুমা দাস। ‘বিজেপি করেন বলেই আক্রান্ত হচ্ছেন’, বক্সিরহাট থানার পুলিশ এমনই সাফাই দিয়েছে বলে অভিযোগ বিজেপি কর্মীর। 

Sahely Sen | Published : Sep 3, 2022 10:07 AM IST

পশ্চিমবঙ্গে ভোট পরবর্তী হিংসা দমাতে কলকাতা হাইকোর্টের কঠোর নির্দেশ সত্ত্বেও বহু জেলায় যে এখনও হানাহানি এবং রাজনৈতিক শত্রুতা লাগাতার চলছে, তার স্পষ্ট প্রমাণ কোচবিহারের ঘটনা। ২০২১-এর বঙ্গ ভোটের ফলাফলের পর কোচবিহারের রামপুরের বাড়ি থেকে দীর্ঘদিন পালিয়ে বেঁচে রয়েছেন রামপুরের বিজেপি কর্মী রাখাল দাস। বাড়িতে ফিরলেই তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনী এসে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে বলে অভিযোগ। এমনকি তাঁকে বারবার মারধরও করা হয় বলে আতঙ্কে বাড়ি ফিরতে পারেন না তিনি।

প্রায় দেড় বছর ধরে আসামে কাজ করে কোনওমতে জীবন চালাচ্ছেন রাখাল দাস। কোচবিহারের বাড়িতে রয়েছেন তাঁর স্ত্রী ও ৪ বছরের ছোট্ট শিশুকন্যা। শুক্রবার বাড়িতে ফিরতেই ওই বিজেপি কর্মীর বাড়িতে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এসে প্রচণ্ড মারধরের পাশাপাশি অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে, এমনকি বাড়িও ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ। বারবার এরকম ঘটনা ঘটতে থাকায় বেঁচে থাকার ইচ্ছেই ছেড়ে দেন তাঁর অসহায় স্ত্রী। লজ্জায় ও অপমানে এলাকার তৃণমূল নেতার বাড়ির সামনে গিয়ে বিষপান করেন বিজেপি কর্মী রাখাল দাসের স্ত্রী রুমা দাস। ঘটনাটি ঘটেছে বক্সিরহাট থানার তুফানগঞ্জ ২ নং ব্লকের রামপুর ২নং গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। 

তৃণমূল নেতার বাড়ির সামনে থেকে বিষ পান অবস্থায় বিজেপি কর্মীর স্ত্রীকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় রামপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল হওয়ার পর তাঁকে নিয়ে যাওয়ায় তুফানগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালে। ইতিমধ্যেই ওই বিজেপি কর্মীর স্ত্রীকে দেখতে মহাকুমা হাসপাতালে পৌঁছান তুফানগঞ্জ বিধানসভার বিজেপি বিধায়িকা মালতী রাভা রায়। পরিবারের সমস্ত অভিযোগ শোনার পর বিজেপি নেত্রীর বক্তব্য, “তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনীর হামলার ভয়ে মাসের পর মাস বাড়ি ফিরতে পারেন না বিজেপি কর্মী রাখাল দাস। বাড়ি ফিরলেই তাঁকে প্রচণ্ড মারধর ও বাড়ি ভাঙচুর করা হয়, অকথ্য এবং অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানালেও কোনও ফল পাওয়া যায় না। ২ বার পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে রাখালের পরিবার। বারবারই ঘটনা ঘটার বহুক্ষণ পরে পুলিশ আসে। পুলিশের সাফ বক্তব্য, ‘আপনারা বিজেপি করেন, সেইজন্যই আপনাদের আক্রমণ করা হচ্ছে’।” 

যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রামপুরের ২ নং ব্লকের তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি তথা ব্লক সহ-সভাপতি নিরঞ্জন সরকার। তাঁর দাবি, বিজেপি মিথ্যা রাজনীতি করছে তৃণমূলকে কালিমালিপ্ত করার জন্য। সাংবাদিকদের তিনি জানিয়েছেন, প্রতিবেশীর সাথে ‘ক্যাচাল’ হওয়ার জন্যই ওই গৃহবধূ বিষ খেয়েছেন। বিজেপি কর্মীর অভিযোগ ভিত্তিহীন। রাখাল দাস এলাকার বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা লুটেছেন, সেই টাকা ফেরৎ দেওয়ার ভয়েই তিনি আসামে গিয়ে গা ঢাকা দিয়ে রয়েছেন বলে অভিযোগ তৃণমূল নেতার। 

যদিও গোটা ঘটনায় বক্সিরহাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হবে বলে ওই পরিবার সূত্রে জানানো হয়েছে। অজিত বর্মণ সহ ১০ জন তৃণমূল সমর্থকের নামে কেস দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই ঘটনা তদন্ত শুরু করেছে বক্সিরহাট থানার জোড়াই ফাঁড়ি পুলিশ। 

আরও পড়ুন-
‘তুমি সর্বকালের সেরা হবে’, বাবার কথা রেখেছিলেন সেরেনা উইলিয়ামস, আজ টেনিস দুনিয়া থেকে তাঁর বিদায়ের পালা

“আগামী দিনে পিসি-ভাইপোকেও হয়তো কেষ্টর মতো মাটিতেই শুতে হবে”, নিউটাউনে প্রাতঃভ্রমণে বিরোধীদের দিলীপ-বাণ
 

Share this article
click me!