বিনা বাধায় ভাগীরথী, গঙ্গার পাড় জুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বিশাল আকার কুমির। এই পরিস্থিতিতে ছট পুজোয় বাধা পড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জেলাবাসী।
ছট পুজোর মুখেই মুর্শিদাবাদ (Murshidabad) জুড়ে নদীর পারে (banks of the river) অধরা কুমির (Crocodile) আতঙ্ক (panic)! তটস্থ জেলাবাসী। শুরুটা হয়েছিল বেশ কয়েকদিন আগেই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আতঙ্কের রেশ (Crocodile panic) এসে পৌঁছাল বুধবার ছট পুজোর (Chhath Puja) দিন। বিনা বাধায় ভাগীরথী, গঙ্গার পাড় জুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বিশাল আকার কুমির। এই পরিস্থিতিতে ছট পুজোয় বাধা পড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জেলাবাসী।
এদিকে কুমিরটির সুরক্ষার বিষয়ে প্রশাসনিক তৎপরতার দাবি তুলেছেন পশু ও প্রাণীপ্রেমীরা। অবশ্য এই ব্যাপারে জেলা শাসক শরদ কুমার দ্বিবেদী বলেন, “ইতিমধ্যে কুমিরটির গতিবিধির উপর প্রশাসনিক নজরদারি অব্যহত আছে। অযথা আতঙ্কিত হওয়ার কারন নেই। অন্যদিকে প্রানীটির যাতে কেউ ক্ষতি করতে না পারে সেই ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে সজাগ থাকতে বলে হয়েছে"।
জিয়াগঞ্জ থানার সদর ঘাট এলাকার ভাগীরথীতে প্রথম দেখা মেলে একটি বিশাল আকার কুমিরের। ওই কুমিরের ব্যাপারে প্রত্যক্ষদর্শীদের মধ্যে নানা রকম মত পার্থক্য দেখা দেয়। তবে এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। ভাগীরথীতে স্নানের হিড়িক কমে যায় কুমীর আতঙ্কে। তবে জলের ওই জীব নিয়ে মানুষের ধারনা পরিষ্কার হয় বহরমপুর দিনের আলোতে পূর্ণাঙ্গ কুমিরটিকে ভেসে উঠতে দেখে। আবার রেজিনগরেও ভেসে বেড়াচ্ছে ওই কুমীরটি। যে কোন মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। জাল নিয়ে কেউ নৌকা করে ছুটে যান কুমিরটিকে ধরতে, কেউ আবার খোঁচা দেওয়ার সুযোগ খোঁজেন।
তবে সকালে রেজিনগর থানার মাঙন পাড়া এলাকায় ভেসে উঠতেই কুমির আতঙ্ক তাড়া করে ভাগীরথী পাড়ের বাসিন্দাদের মধ্যে। ছট পুজায় জেলার মানুষ তো বটেই, জেলার বাইরে থেকেও ভাগীরথীর পাড়ে হাজির হন হাজার হাজার পূন্যার্থী। ইতিমধ্যে তাদের মধ্যেও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এই নিয়ে রীতিমত ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীকে। তিনি বলেন, “আমরা কখনও ভাগীরথীতে কুমির দেখিনি। ছট পুজা অথচ মানুষের মন থেকে কুমির আতঙ্ক দূর করতে প্রশাসনকে কোন রকম পদক্ষেপ করতে দেখা যাচ্ছে না।”
এদিকে পশু ও প্রানীপ্রেমী দেবজ্যোতি বসু মল্লিক বলেন, “কোনও ভেবে কুমিরটি ভাগীরথীতে চলে এসে থাকতে পারে। কিন্তু মানুষ যে ভাবে ওকে উত্যক্ত করছে তাতে মূল্যবান প্রানীটির ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। সে দিকে প্রশাসনের নজর রাখা জরুরী। তাছাড়া কুমিরটি কি ভাবে ভাগীরথীতে এল তাও খতিয়ে দেখা উচিৎ"।
স্থানীয়রা জানান, এই ভাগীরথী নদীতেই দেখা মিলেছে আচমকা একটি বিশাল আকার কুমিরের। আর তাতেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকায় । এদিকে ঘটনা জানতে পেয়েই ভাগীরথীর পাড়ে ছুটে আসেন জিয়াগঞ্জ থানা থেকে বিশাল পুলিশবাহিনী। স্থানীয় সূত্রে জানা যায় প্রায় ১২-১৪ ফুটের ওই কুমিরের দেখা মেলে ভাগীরথীর সদর ঘাট এলাকায়, সেখান থেকে কুমিরটি শিবতলা ঘাট ও নিমতলা ঘাট হয়ে বহরমপুরের দিকে চলে যায়। শেষ বার ১৯৫৮ সাল নাগাদ জিয়াগঞ্জের ভাগীরথীতে কুমিরের দেখা গিয়েছিল বলে দাবি করেছেন এলাকার প্রবীন নাগরিকরা। ফের এই কুমির উসকে দিল প্রবীণদের স্মৃতি।
Mamata Banerjee-তেলের দাম বাড়িয়ে ৪লক্ষ কোটি টাকা আয় করেছে কেন্দ্র,দাবি মমতার
Modi in Approval ratings-বিশ্বনেতাদের ব়্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বর, জনপ্রিয়তার শীর্ষে মোদী
এদিকে, রীতিমতো বাধাহীনভাবে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে মুর্শিদাবাদের ঘাটে ঘাটে কুমির। রীতিমতো উৎসবের মরসুমে আতংক দেখা দিচ্ছে সব মহলে। এদিকে কুমির দেখার বিষয়টি পাঁচকান হতেই নানান উৎসুক মানুষ গঙ্গায় রীতিমতো নৌকা বিহারের বেরিয়ে পড়েছেন। কেউ কেউ আবার গঙ্গায় জাল নিয়ে নিজে থেকেই অপারদর্শী ভাবে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে কুমির ধরার চেষ্টা করছেন বলেও স্থানীয়রা জানাচ্ছেন।