আজই মিনির ময়নাতদন্ত করা হবে। আত্মহত্যার কারণ জানতে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তাঁর সহপাঠীদের সঙ্গে কথা বলে মৃত্যুর কারণ জানার চেষ্টা চলছে।
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের (Midnapore Medical College and Hospital) হস্টেল (Hostel) থেকে উদ্ধার করা হল ডাক্তারি পড়ুয়ার (Medical Student) ঝুলন্ত দেহ (Hanging Body)। মঙ্গলবার রাতে পিজি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীর (Second Year Student) ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে কোতোয়ালি থানার পুলিশ। ওই পড়ুয়ার ঘর থেকেই দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, মৃতের নাম মিনি ঘোষ (২৭)। তবে মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। যদিও তাঁর ঘর থেকে সুইসাইড নোট (Suicide Note) উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে।
মিনি ঘোষ মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজের শিশু বিভাগের (পিজিটি) দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। তাঁর বাড়ি মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) কান্দি এলাকায়। বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান ছিলেন মেধাবী এই ছাত্রী। মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার বিকেল থেকেই পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন মিনি। সিনিয়র চিকিৎসকদের (Senior Doctor) সঙ্গে তাঁর একটি সেমিনারে (Seminar) যোগ দেওয়ার কথা ছিল। সেই সেমিনারের প্রস্তুতি হিসেবেই নানান কাজ করছিলেন। কিন্তু, রাত পর্যন্ত দরজা বন্ধ থাকায় সন্দেহ হয় সহপাঠীদের (Classmate )। তাই রাত ১০টা থেকে মিনিকে ডাকাডাকি করেন তাঁরা। অনেকক্ষণ ধরে ডাকাডাকির পরও মিনি দরজা না খোলায় তাঁদের সন্দেহ আরও বেড়ে যায়। অবশেষে দরজা ভেঙে তাঁরা ঘরে ঢোকেন। তখনই ঘর থেকে ঝুলন্ত অবস্থা উদ্ধার করা হয় মিনিকে। সঙ্গে সঙ্গে কোতোয়ালি থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেহ উদ্ধার করে। দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন- 'সিঙ্গুর' আজও বেকার চাষ নেই শিল্পও নেই বর্তমান সরকারের কাছে কাতর আর্জি স্থানীয়দের
আজই মিনির ময়নাতদন্ত করা হবে। আত্মহত্যার কারণ জানতে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তাঁর সহপাঠীদের সঙ্গে কথা বলে মৃত্যুর কারণ জানার চেষ্টা চলছে। মৃতের ঘর থেকে বেশ কিছু কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। তার মধ্যে সুইসাইড নোটও উদ্ধার করা হয়েছে। দেহ উদ্ধারের পর তাঁর পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। তবে সুইসাইড নোটে কি লেখা রয়েছে সেই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত পুলিশের তরফে কিছু জানানো হয়নি।
আরও পড়ুন- ছাত্র-ছাত্রীরা কোভিড আক্রান্ত হলে দায় নেবে না স্কুল, সাফ জানাল শহরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
এই ঘটনা প্রসঙ্গে মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ পঞ্চানন কুণ্ডু বলেন, "হস্টেল থেকে এক ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃত্যুর কারণ জানার চেষ্টা চলছে।" শিশু বিভাগের প্রধান চিকিৎসক তারাপদ ঘোষ বলেন, "মিনি খুব শান্ত মেজাজের ছিল। কোনও মানসিক চাপ থেকে ওই ঘটনা ঘটিয়েছে কিনা তা খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। বাড়ির লোককে খবর দেওয়া হয়েছে।"
আরও পড়ুন- Covid-19: ছট পুজোর আগেই ফের লাগামছাড়া করোনা, একদিনে লাফিয়ে বেড়ে ৮০০ ছুঁইছুঁই রাজ্যে
গত এক দেড় বছরে এ রাজ্যে বহু মেডিক্যাল পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। ২০১৯ সালে মার্চে বহুতল আবাসনের ছাদ থেকে পড়ে কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র শুভজিৎ মাজির মৃত্যু হয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছিল, মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন শুভজিৎ। তাঁর পড়ার ঘর থেকে একটি খাতা উদ্ধার হয়েছিল, তাতে লেখাছিল ‘তোমরা ভাল থেকো, আমি চললাম’। ফের একবার রাজ্যে আরও এক ডাক্তারি পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনা ঘটল।