সলিসিটর জেনেরাল তুষার মেহতার সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীর সাক্ষাৎকে কেন্দ্র করে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। যদিও তাঁদের মধ্যে কোনও বৈঠক হয়নি বলে দাবি করেছে দু'পক্ষই। কিন্তু, তুষার মেহতাকে নিয়ে পিছু হটতে নারাজ তৃণমূল। তাঁর অপসারণের দাবিতে আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়েছিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। আর এবার সরাসরি রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে দরবার করতে চলেছেন তাঁরা। দলীয় সূত্রে খবর, একই সঙ্গে রাষ্ট্রপতির কাছে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে নিয়েও অভিযোগ জানাতে পারেন তাঁরা।
নারদ মামলায় সিবিআই-এর আইনজীবী তুষার মেহতা। ওই মামলায় নাম রয়েছে শুভেন্দুর। কয়েকদিন আগে দিল্লি সফরে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করেছিলেন তিনি। আর তারপরই তাঁকে তুষার মেহতার বাড়িতে যেতে দেখা যায়। সেখানে প্রায় ৩০ মিনিট ছিলেন। সেখানে তাঁদের দু'জনের বৈঠক হয়েছে বলে দাবি তৃণমূলের।
যদিও শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে তাঁর দেখা করার কোনও প্রশ্নই আসে না বলে দাবি করেছেন তুষার মেহতা। তবে শুভেন্দু অধিকারী যে বৃহস্পতিবার দুপুর তিনটে নাগাদ তাঁর বাসভবন তথা কার্যালয়ে এসেছিলেন, সেই কথা মেনে নিয়েছেন তিনি। তবে, তাঁর সঙ্গে শুভেন্দুর শেষ পর্যন্ত দেখা হয়নি এবং এক কাপ চা খেয়েই সেখান থেকে বিদায় নিয়েছিলেন শুভেন্দু।
আরও পড়ুন- নিয়ম নীতিকে বুড়ো আঙুল, স্থানীয়দের টিকা দিলেন আসানসোল পৌরনিগমের প্রশাসক বোর্ডের সদস্য
তুষার মেহেতার দাবি, শুভেন্দু যখন এসেছিলেন, সেই সময় তিনি নিজের কক্ষে এক পূর্ব নির্ধারিত বৈঠকে ব্যস্ত ছিলেন। তাঁর কর্মচারীরা শুভেন্দুকে তাঁর কার্যালয়ের ওয়েটিং রুমে বসান এবং তাঁকে এক কাপ চা দিয়েছিলেন। বৈঠকের পর আবার তুষার মেহতা জানতে পেরেছিলেন তাঁর ব্যক্তিগত সচিব আসবেন কোনও জরুরি কাজ নিয়ে। তাই শুভেন্দু অধিকারির সঙ্গে দেখা করতে পারবেন না বলে কর্মীদের মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছিলেন। এরপর থেকে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, কেন হঠাৎ তুষার মেহতার সঙ্গে দেখা করতে গেলেন শুভেন্দু? নারদ মামলায় নিজের নাম যাতে ধামাচাপা দেওয়া যায় তার জন্যই কি গিয়েছিলেন? এদিকে সাক্ষাৎ না হয়ে থাকলে, বাসভবনের সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করে সলিসিটর জেনারেলকে প্রমাণ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
এ নিয়ে আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়েছেন তৃণমূলের তিন সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়, ডেরেক ও ব্রায়েন এবং মহুয়া মৈত্র। তাঁরা লিখেছিলেন, "প্রভাব খাটানোর উদ্দেশ্যেই এমন বৈঠকের আয়োজন হয়েছিল বলে আশঙ্কার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিচার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা এবং নিরপেক্ষতা বজায় রাখার জন্য তুষার মেহতাকে সরানো প্রয়োজন।" যদিও এনিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাননি তাঁরা। আর সেই কাণেই এবার রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।