দীর্ঘদিন ধরেই বিজেপির অন্দরে বাবুল বিরোধী গোষ্ঠী ছিল। এমনকী, দিলীপ ঘোষের সঙ্গে তাঁর মতের মিল ছিল না। তবে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব পাশে থাকায় তেমন কোনও সমস্যা হয়নি। সমস্যা শুরু হয় বিধানসভা নির্বাচনের পর।
বাবুল সুপ্রিয়র সঙ্গে যে তাঁর সম্পর্ক যে খুব একটা ভালো নয় তা কারও অজানা নয়। শনিবার রাজনীতি ছাড়ার কথা ফেসবুকে ঘোষণা করেছিলেন বাবুল। এমনকী, সেই পোস্টেই সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। যদিও তাঁর রাজনীতি ছাড়া নিয়ে কিছুই জানেন না সাংবাদিক বৈঠকে জানান বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, "ফেসবুকে কে কী লিখলেন আমি দেখি না। কে রাজনীতি করবেন, কখন ছাড়বেন এটাতে আমার কিছু বলার নেই। এটা প্রত্যেকের অধিকার রয়েছে। সেভাবেই সবাই করছে। মাসির গোঁফ হলে মেসো বলব কি মাসি বলব তা ঠিক করব। আগে গোঁফ তো একটু বের হোক। উনি এখনও আমাদের সহকর্মী আছেন, লোকভায় আছেন, সাংসদও রয়েছেন। ইস্তফা দিলে দেবেন। আমি এই ব্যাপারে কিছু জানি না।"
আরও পড়ুন- সাংসদ পদ থেকেও ইস্তফা দিচ্ছেন বাবুল, জানালেন সোশ্যাল মিডিয়াতে
যদিও এই বিষয় নিয়ে খুব বেশি চর্চা হোক তা একেবারেই চাইছিলেন না দিলীপ। আসলে শনিবার দিলীপের কোনও কর্মসূচি ছিল না। কিন্তু, আজ বিকেলের দিকে বিজেপি-র তরফে জানানো হয় সদর দফতরে তিনি সাংবাদিক বৈঠক করবেন। সেই বৈঠক শুরুর আগে কোনও পোস্ট করেননি বাবুল। সেই মতো বৈঠকে অন্য় প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলতে শুরু করেছিলেন দিলীপ। তারপরই বাবুলের প্রসঙ্গ টেনে নিয়ে তাঁকে একাধিক প্রশ্ন করতে শুরু করেন সাংবাদিকরা। এরপর বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর দিয়ে তিনি বলেন, "এই বিষয়ে আর কোনও প্রশ্ন করলে সাংবাদিক বৈঠক এখনেই শেষ করে দেব।"
আরও পড়ুন- 'আলবিদা...', রাজনীতি ছাড়লেন বাবুল সুপ্রিয়
দীর্ঘদিন ধরেই বিজেপির অন্দরে বাবুল বিরোধী গোষ্ঠী ছিল। এমনকী, দিলীপ ঘোষের সঙ্গে তাঁর মতের মিল ছিল না। তবে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব পাশে থাকায় তেমন কোনও সমস্যা হয়নি। সমস্যা শুরু হয় বিধানসভা নির্বাচনের পর। টালিগঞ্জে তাঁকে টিকিট দেওয়া হয়েছিল। সেখানে অরূপ বিশ্বাসের কাছে হেরে যান তিনি। এরপর কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্ব খোয়াতে হয়েছিল তাঁকে। তখন থেকেই দলের দলের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিতে শুরু করেছিলেন। আর তখন থেকেই তাঁর দল ছাড়া নিয়ে দানা বাঁধতে শুরু করেছিল জল্পনা। অবশেষে আজ সেই জল্পনার অবসান ঘটান তিনি নিজেই।
আজ সোশ্যাল মিডিয়ায় করা পোস্টে দিলীপের নাম না নিলেও বাবুল লেখেন, "ভোটের আগে থেকেই কিছু কিছু ব্যাপারে রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে মতান্তর হচ্ছিল - তা হতেই পারে। কিন্তু তার মধ্যে কিছু বিষয় জনসমক্ষে চলে আসছিল। তার জন্য কোথাও আমি দায়ী (একটি ফেসবুক পোস্ট করেছিলাম, যা পার্টির শৃঙ্খলাভঙ্গের পর্যায়েই পড়ে) আবার কোথাও অন্য নেতারাও ভীষণভাবে দায়ী, যদিও কে কতটা দায়ী সে প্রসঙ্গে আমি আজ আর যেতে চাই না - কিন্তু প্রবীণ (সিনিয়র) নেতাদের মতানৈক্য ও কলহে পার্টির ক্ষতি তো হচ্ছিলই, গ্রাউন্ড জিরোতেও পার্টির কর্মীদের মনোবলকে যে তা কোনওভাবেই সাহায্য করছিল না তা বুঝতে রকেট বিজ্ঞানের জ্ঞানের দরকার হয় না। এই মুহূর্তে তো তা একেবারেই অনভিপ্রেত তাই আসানসোলের মানুষকে অসীম কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা জানিয়ে আমিই সরে যাচ্ছি।"