প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট জমা করলেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা। ঘটনার পরই মঙ্গলবার বিকাশভবনের সামনে থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছিল ফরেনসিক টিম। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ২ শিক্ষিকার শরীরে বিষের মাত্রা অনেক বেশি।
'অন্যায়ভাবে' বদলির প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিকাশভবনের সামনে কীটনাশক খেয়েছিলেন পাঁচ এসএসকে শিক্ষিকা। তারপর বেশ কিছু সময় কেটে গিয়েছে। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত আচ্ছন্ন অবস্থাতে রয়েছেন শিক্ষিকা পুতুল জানা মণ্ডল। এখনও তিনি বিপদমুক্ত নন। আরও কিছুটা সময় কাটলে তবেই তাঁর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে কোনও কিছু বলা যাবে বলে আরজি কর হাসপাতালের তরফে বলা হয়েছে। আর এনিয়ে প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট জমা করলেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা। ঘটনার পরই মঙ্গলবার বিকাশভবনের সামনে থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছিল ফরেনসিক টিম। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ২ শিক্ষিকার শরীরে বিষের মাত্রা অনেক বেশি।
হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, বিষ পানের পর পুতুল জানা মণ্ডলকে একাধিক ওষুধ দেওয়া হয়েছিল। সেই কারণেই কিছুটা ঘোরের মধ্যে রয়েছেন তিনি। তবে ছবি দাস ও অনিমা নাথের শারীরিক অবস্থা এখন আগের থেকে স্থিতিশীল। আরজিকর সূত্রের খবর, অর্গানোফসফরাস জাতীয় কীটনাশক খেয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা।
আরও পড়ুন- ‘অন্যায়ভাবে’ বদলির প্রতিবাদ, বিকাশ ভবনের সামনে বিষ পান ৫ শিক্ষিকার
অন্যদিকে এনআরএসে রয়েছেন শিখা দাস ও জোৎস্না টুডু। তাঁদের মধ্যে একজন ভর্তি রয়েছেন ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটের তত্ত্বাবধানে। আর একজন রয়েছেন জেনারেল মেডিসিন বিভাগে। তাঁদের দু'জনকেই পক্ষবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তাঁদের শারীরিক অবস্থাও এখন স্থিতিশীল বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন- মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে কেটেছে জট, শক্তিশালী দল গঠনের প্রক্রিয়া শুরু এসসি ইস্টবেঙ্গলের
উল্লেখ্য, ওই পাঁচজনই শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের সদস্য। বেশ কিছু দিন ধরেই শিক্ষক বদলি ইস্যুতে আন্দোলন করছে এই সংগঠন। শিক্ষকদের অভিযোগ ছিল, আন্দোলন করার শাস্তি হিসেবেই তাঁদের বাড়ি থেকে অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হয়েছে। এই অভিযোগ নিয়েই মঙ্গলবার বিকাশ ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তাঁরা। এঁদের সবার বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকায়। অভিযোগ, তাঁদের বেআইনিভাবে কোচবিহারের দিনহাটাতে বদলি করা হয়েছে। এত দূর চাকরি করতে যাওয়া তাঁদের পক্ষে কোনওভাবেই সম্ভব নয়। সেই কারণে বাড়ির কাছে বদলির দাবি জানিয়েছিলেন তাঁরা। নিজেদের সমস্যার কথা বলার জন্যই শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে দেখা করতে চান। কিন্তু, তাঁদের বাধা দেয় পুলিশ। এরপরই পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন তাঁরা। ক্রমে শুরু হয় ধস্তাধস্তি। তারপর পুলিশের সামনেই বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ওই পাঁচ শিক্ষিকা।
আরও পড়ুন- বাকি আর কয়েকটা মাস, ৭ কেন্দ্রে দ্রুত ভোটের দাবিতে আজ নির্বাচন কমিশনে যাচ্ছে তৃণমূল
এই ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায় রাজ্য রাজনীতিতে। শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা রুজু করে উত্তর বিধান থানার পুলিশ। সরকারি নির্দেশিকা অমান্য করা, পুলিশের কাজে বাধা দেওয়া, আত্মহত্যার চেষ্টা ,সরকারি কর্মচারীকে আঘাত করা-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। এদিকে বুধবারই আরজিকর হাসপাতালে অসুস্থ শিক্ষিকাদের সঙ্গে দেখা করতে যান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
এদিকে বিতর্ক আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্রাত্য বসু নিজেই। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে আন্দোলনরত শিক্ষিকাদের বিজেপি ক্যাডার বলে তোপ দাগেন তিনি। লেখেন, “এত কিছুর পরও যাঁরা আন্দোলন করছেন, তাঁরা শিক্ষক শিক্ষিকা নন, বিজেপি ক্যাডার।”