বাম আমলের কারখানার দূষণে ধ্বংসে মুখে গড় পঞ্চকোট, 'তাঁর দেখার কাজ নয়', দাবি শ্রম মন্ত্রীর


স্পঞ্জ আয়রন কারখানার দূষণে ধ্বংসের মুখে গড় পঞ্চকোট পাহাড়।৩০০ প্রকার বহুমূল্যবান ভেষজ গুণসম্পন্ন গাছ গাছালির প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। 

Asianet News Bangla | Published : Aug 9, 2021 7:51 AM IST / Updated: Aug 09 2021, 02:06 PM IST

স্পঞ্জ আয়রন কারখানার দূষণে ধ্বংসের মুখে গড় পঞ্চকোট পাহাড়।৩০০ প্রকার বহুমূল্যবান ভেষজ গুণসম্পন্ন গাছ গাছালির প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। স্পঞ্জ আয়রনের কালো ধোঁয়ায় নাভিশ্বাস এলাকাবাসীর।

আরও পড়ুন, 'ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর এত সাহস নেই, শাহের নির্দেশেই আক্রমণ', SSKM-এ এসে বিস্ফোরক মমতা

 পুকুরের জলে কালো আস্তরণ।মারা যাচ্ছে পশু পাখি। শ্বাস কষ্টে ভুগছেন এলাকাবাসী। শ্রম মন্ত্রী বেচারাম মান্না পুরুলিয়ার নেতুড়িয়া ব্লক এলাকার স্পঞ্জ আয়রন কারখানায় সারপ্রাইজ ভিসিট করে জানালেন।স্পঞ্জ আয়রন কারখানা পরিবেশ বান্ধব।এলাকায় দূষণ হলেও তাঁর দেখার কাজ নয়।তার জন্য আলাদা বিভাগ রয়েছে।
দুদিনের স্পঞ্জ আয়রন কারখানায় সারপ্রাইজ ভিজিটে পুরুলিয়ার নেতুড়িয়া এলাকায় এসে  বেচারাম মান্না জানালেন কারখানার শ্রমিক সুরক্ষা সন্তোষ জনক।পি এফ ই এস আই সব ঠিক আছে। দূষণ প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়ে বললেন কারখানা পরিবেশ বান্দব। কারখানা কর্তৃপক্ষ অনেক গাছ লাগিয়েছে।আজও তাঁকে দিয়ে বৃক্ষরোপণ করানো হয়েছে।স্পঞ্জ আয়রন কারখানা থেকে দূষণ  হলেও তাঁর দেখার কাজ নয়।দূষণ দেখার জন্য রয়েছে আলাদা ডিপার্টমেন্ট বলে এড়িয়ে গেলেন দূষণের বিষয়।করোনা পরিস্থিতিতে এই কারখানা কর্তৃপক্ষ  ৫০ শতাংশ শ্রমিক ছাঁটাই হয়েছে বলে উঠেছে অভিযোগ।এই বিষয়ে শ্রমমন্ত্রী বেচারাম মান্নাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন।শ্রম দপ্তরে জানালে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে। অন্যদিকে পুরুলিয়া জেলায় নেই ই এস আই হাসপাতাল।এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন ই এস আই হাসপাতাল তৈরি করার জন্য কিছু বিধি রয়েছে সেই বিধি সম্পুর্ন হলেই ই এস আই হাসপাতাল তৈরি হবে।এর জন্য তিনি নিজে উদ্যোগ নেবেন বলে কথা দেন।

আরও পড়ুন, Tripura: তৃণমূল যুব নেতাদের জামিন নিয়ে কলকাতায় অভিষেক, 'ষড়যন্ত্র'-র তত্ত্ব বিপ্লবের

গত দুদিন ধরে পুরুলিয়ার নেতুড়িয়া থানার গড় পঞ্চকোট এলাকাতেই কাটালেন শ্রম দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী বেচারাম মান্না। এলাকায় তিনি দুটি স্পঞ্জ আয়রন কারখানা সারপ্রাইজ  ভিজিট করেন। কারখানা কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে কারখানার চত্বরে গাছ লাগান। পরে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান ।স্পঞ্জ আয়রন কারখানা শ্রমিক নিরাপত্তা সুরক্ষা সন্তোষজনক তিনি সব দেখে খুশি হয়েছেন।এর পরেই সাংবাদিকরা স্পঞ্জ আয়রন কারখানা থেকে দূষণের বিষয়, করোনা পরিস্থিতি  শ্রমিক ছাঁটাই এসব বিষয় তুলতেই কিছুটা হতচকিত হয়ে যান শ্রম মন্ত্রী বেচারাম মান্না। তিনি বলেন করণা পরিস্থিতিতে  শ্রমিক ছাঁটাই হলে, বিষয়টি তার জানা নেই তাঁর দপ্তরে জানালে তিনি একশন  নেবেন।অন্যদিকে দীর্ঘদিন থেকেই এলাকায় দূষণের কবলে জর্জরিত গড় পঞ্চকোট পাহাড়।পাহাড়ের প্রায় আড়াইশো প্রকার আয়ূর্ভেদিক গুণসমৃদ্ধ গাছগাছালি প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে ।এসব প্রসঙ্গ তুলতেই বেচারাম মান্না বলেন। দূষণ হলেও দূষণের বিষয়টি তার দেখার কাজ নয়। তার জন্য আলাদা ডিপার্টমেন্ট রয়েছে।শুধু তাই নয় সাংবাদিকরা বেচারাম মান্নাকে কেন দূষণ এবং শ্রমিক ছাঁটাই নিয়ে প্রশ্ন করেছেন তার জন্য কারখানা কর্তৃপক্ষ থেকে সাংবাদিকদের প্রশ্ন করার ছলে প্রচ্ছন্ন ধমকও দেওয়া হয়েছে বলে উঠেছে অভিযোগ।

"

২০০১সাল নাগাদ তৎকালীন বাম আমলে পুরুলিয়ার নেতুড়িয়া থানার গড় পঞ্চকোট পাহাড়ের কোলে এই এলাকায় প্রথম গড়ে ওঠে একটি স্পঞ্জ আয়রন কারখানা। এই কারখানার উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্তর মা পরিবেশ বিদ ও সমাজসেবী মৃণালিনী দাশগুপ্ত।তিনি নাকি সে সময় জানতেন না এখানে স্পঞ্জ আয়রন কারখানা হচ্ছে।এই এলাকায় শিল্প নেই তাই শিল্প বা একটি কারখানা হচ্ছে এলাকায় কর্মসংস্থান হবে সেই জন্যই তিনি তৎকালিন বাম আমলে এই কারখানার সূচনা অনুষ্ঠানে এসেছিলেন। তবে একজন পরিবেশবিদ কিভাবে গড় পঞ্চকোট পাহাড় এর পরিবেশ ধ্বংস করে স্পঞ্জ আয়রন কারখানা রচনা করেছেন সে নিয়ে সে সময় অনেক বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। তারপরে দামোদর নদ দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে। কারখানার মালিক বদল হয়েছে নামও বদলে গেছে।বদল হয়েছে  রাজ্যের রাজনৈতিক মানচিত্রও।কিন্তু আজও পঞ্চকোট পাহাড়ের নিচে গড়ে ওঠা স্পঞ্জ আয়রন কারখানার দূষণের কোন পরিবর্তন হয়নি। দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য যন্ত্র লাগানো হলেও তা ঠিকমতো চালু থাকে না বলেও বারবার এসেছে অভিযোগ। প্রশাসন তবু ব্যবস্থা নেয়নি। পুরুলিয়া বরাবর রাজ্য সড়কের পাশেই রয়েছে এই স্পঞ্জ আয়রন কারখানা। রাস্তা দিয়ে পার হলেই দেখা যায় কারখানার কালো ধোঁয়া কীভাবে গ্রাস করেছে গড় পঞ্চকোট পাহাড়কে।

আরও পড়ুন, আজ কোভিশিল্ড মিলবে শহরে, কোভিডে শুধু কলকাতাতেই মৃত্যু প্রায় ৫ হাজার

২০১১সালে রাজ্যের পালাবদলের আগের বিধানসভা নির্বাচনের প্রচার এসে নেতুড়িয়া থানার গোবাগ মাঠে জনসভায় তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন। এই কারখানাগুলির দূষণে ধ্বংস হচ্ছে পরিবেশ। মানুষ মারণ রোগের স্বীকার হচ্ছেন। রূপসী পঞ্চকোটের  হাজার হাজার ওষুধি গাছ নষ্ট হতে বসেছে। ক্ষমতায় এলে এই মারণ কারখানা বন্ধ করে পরিবেশ বান্ধব শিল্প গড়ে তুলবেন। কিন্তু আজও এই বক্তব্য ফলপ্রসূ হয়নি। আজও দূষণে জেরবার গড়পঞ্চকোট পাহাড় সহ জনার্দনডি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার হাড়মাড্ডি, মদনডি সহ বেশ কয়েকটি গ্রাম।পুকুরের জলে পড়েছে স্পঞ্জ আয়রন কারখানা থেকে নির্গত কালো ধোঁয়ার আস্তরন। সেই জলে স্নান করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।  গাছের পাতার সবুজ রঙে পড়েছে কালো প্রলেপ। সব মিলিয়ে স্পঞ্জের আয়রণ কারখানার দূষণে নাজেহাল দশা স্থানীয় বাসিন্দাদের।শ্রম মন্ত্রী সেই স্পঞ্জ আয়রন কারখানা পরিদর্শন শেষে দূষণ রোধের জন্য কয়েকটি গাছ লাগিয়ে বেচারাম মান্না গড় পঞ্চকোট পাহাড় সহ এলাকার দূষণের বিষয়টি এড়িয়ে গেলেন কেন ?সে নিয়ে তৈরি হয়েছে চাপানউতোর।

    আরও পড়ুন, ভাইরাসের ভয় নেই তেমন এখানে, ঘুরে আসুন ভুটানে  

আরও দেখুন, মাছ ধরতে ভালবাসেন, বেরিয়ে পড়ুন কলকাতার কাছেই এই ঠিকানায়  

আরও পড়ুন, রাজ্য়ের সর্বনিম্ন সংক্রমণ এই জেলায়, বৃষ্টিতে হারাতেই পারেন পুরুলিয়ার পাহাড়ে

আরও দেখুন, বৃষ্টিতে বিরিয়ানি থেকে তন্দুরি, রইল কলকাতার সেরা খাবারের ঠিকানার হদিশ  

আরও দেখুন, কলকাতার কাছেই সেরা ৫ ঘুরতে যাওয়ার জায়গা, থাকল ছবি সহ ঠিকানা 

আরও পড়ুন, বনগাঁ লোকাল নয়, জাপানে ঠেলা মেরে ট্রেনে তোলে প্রোফেশনাল পুশার, রইল পৃথিবীর আজব কাজের হদিস 

 

Share this article
click me!