শনিবার সকাল থেকেই আকাশের মুখ ভার। মেঘলা আকাশে সূর্যের দেখা নেই। ইয়াসের পর ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ। আর তাতেই আশঙ্কায় দিন গুনছেন উপকূলবর্তী এলাকার মানুষেরা।
সপ্তাহান্তেই বড়সড় দুর্যোগের কথা শুনিয়েছে হাওয়া অফিস। অন্ধ্র-ওড়িশার(Andhrapradesh-orrisa) উপর দিয়ে ফাঁড়া গেলেও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে বাংলার বুকেও। এদিকে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের(Cyclone Jawad) হাত থেকে বাঁচতে গতকাল থেকেই রাজ্য এমনকী দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয়ে গিয়েছিল পূজা-অর্চনা। গতকালে আসানসোলে ভগবান ইন্দ্রের(God Indra) পুজো করতে দেখা গিয়েছিল আসানসোলবাসীকে(Asansol)। আসানসোলের চন্দ্রচুর মন্দিরে রীতিমত ঢাক ঢোল বাজিয়ে চলে পুজাপাঠ। এবার বসিরহাটের(basirhat) মহাকুমার সুন্দরবনের হাড়োয়া ব্লক এর খাসবালান্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের বিদ্যাধরী নদীর পাড়ে গাপতলা আদিবাসী গ্রামেও দেখা গেল একই চিত্র।
এদিকে শনিবার সকাল থেকেই আকাশের মুখ ভার। মেঘলা আকাশে সূর্যের দেখা নেই। ইয়াসের পর ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ। আর তাতেই আশঙ্কায় দিন গুনছেন উপকূলবর্তী এলাকার মানুষেরা। এমতাবস্থায় খাসবালান্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের(Panchayet) বিদ্যাধরী নদীর পাড়ে গাপতলা আদিবাসী গ্রামে দেখা গেল এক অনন্য চিত্র। বিপর্যয় ঠেকাতে হিন্দু-মুসলিম একযোগে আয়োজন করা হল ভূমি ও গাছ পুজোর। বিধ্বংসী ঝড়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে এবার হিন্দু(hindu) ও মুসলিম(muslim) উভয় সম্প্রদায় মানুষই এদিন বিরসা মুন্ডার(Birsha Munda) গলায় মালা দিয়ে, বরণ করেন। সেই সঙ্গে ভেদাভেদ ভুলে ভূমি ও গাছ পূজোর(Worship) আয়োজন করা হয়। এই সামাজিক সম্প্রতি দেখে বর্তমানে অবাক হচ্ছেন অনেকে। তবে সুন্দবনবাসীদের দাবি বছরে বেশ কয়েকটা ঝড়েই বারে বারে পথে বসতে হয় তাদের। ভেঙে যায় বাড়িঘর, ভেসে যায় আস্তানা। তাই সরকার ব্যবস্থা নিলেও শেষ ভরসা ভগবানই।
আরও পড়ুন- এক ‘জাওয়াদে’ রক্ষা নেই সঙ্গে দোসর ভরা কোটাল, কেন ফের সিঁদুরে মেঘ দেখছে হাওয়া অফিস
এদিকে তাদের এই বিশেষ আয়োজন নিয়ে ইতিমধ্যেই সাড়া পড়ে গিয়েছে বিভিন্ন মহলে। একদিকে ভূমি রক্ষা, অন্যদিকে আদিবাসী সাংস্কৃতিক সম্প্রীতির যে অনন্য উদাহরণ তৈরি হল তা নিয়ে শুরু হয়েছে জোর চর্চা। অন্যদিকে ভূমি ক্ষয় রোধে সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ অরণ্য বাঁচানোর যে প্রয়োজনীয়তা তাও যেন এদিন আরও একবার স্মরণ করিয়ে দিলেন তারা। শনিবার সকালে উলু ,শঙ্খধ্বনি, ধুপ দিয়ে বটবৃক্ষকে মালা পরিয়ে চলল প্রার্থনা। এই অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন বসিরহাট সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের(Trinamool) চেয়ারম্যান শেখ হাজী নুরুল ইসলাম, বিশিষ্ট তৃণমূল নেতা নুরুল ইসলাম আদিবাসী নেতা প্রশান্ত মাহালি, হাড়োয়া এক নম্বর ব্লক সভাপতি শফিক আহমেদ, খালেক মোল্লা বিশিষ্ট সমাজসেবী সুশান্ত বিশ্বাস সহ বিশিষ্টজনেরা। সুন্দরবন বাঁচলে, তুমি বাঁচবে এই ছিল তাদের মূল প্রার্থনা।